আমার নিজেকে ভালোরাখার জন্য কাজের পেছনে ছুটে বেড়াই। সারাক্ষণই লেগে থাকে ব্যস্ততা। কিন্তু দিনশেষে আমাদের কতটুকু ভালোথাকা নিশ্চিত হয়?
প্রতিদিন একরাশ ক্লান্তি নিয়ে বাড়ি ফেরা, এরপর আবার এটাসেটা কাজে লেগে যাওয়া। এভাবেই চলতে থাকে জীবন। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন, নিজেকে ভালো রাখার জন্য সত্যিই আপনি কী করেছেন? আমরা এখন এতটাই ব্যস্ত থাকি যে সকালের নাস্তাটাও ঠিকভাবে খাওয়া হয়ে ওঠে না।
বেশিরভাগ মানুষ রাতের খাবার খায় দেরি করে, অযথা রাত জেগে থেকে চোখের নিচে কালি ফেলে আর চার-পাঁচ ঘণ্টা ঘুমের পরে ছোটে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে। সকালে তাড়াহুড়োয় নাস্তাটা খাওয়ারও সময় পান না। এই যে অপর্যাপ্ত ঘুম আর সকালের খাবার বাদ দিয়ে যাওয়া, এ ধরনের অভ্যাস আপনার জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।
তাই সময় থাকতে সচেতন হওয়া জরুরি। প্রতিদিন সকালে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে দিনটি শুরু করতে হবে। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায়। পুষ্টিবিদরা বলছেন, আপনি যদি নিয়মিত সকালের নাস্তা বাদ দেন তাহলে তা স্বাস্থ্যের উপর ভীষণ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। যেখান থেকে নানা ধরনের গুরুতর রোগ তৈরি হতে পারে। এই অভ্যাসের ফলে শুধু শারীরিক নয়, দেখা দিতে পারে মানসিক সমস্যাও। যার প্রভাব পড়তে পারে আপনার দৈনন্দিন রুটিন এবং কর্মদক্ষতায়। সকালে যদি পেট ভরে না খান তাহলে সারাদিনই ক্লান্ত অনুভব করবেন এবং এর ফলে একটা সময় মাথাও ঠিকভাবে কাজ করবে না। এর প্রভাব পড়বে আপনার বিপাক ক্রিয়ায়ও।
অনেকে কম খেয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য সকালের খাবার বাদ দেন। কিন্তু তাতে কি সত্যিই ওজন কমে? একদমই না। বরং সকালে না খাওয়ার কারণে দুপুরে একসঙ্গে আরও বেশি খেয়ে ফেলা হয়। যে কারণে ওজনও বাড়তে থাকে দ্রুত। ওজন কমাতে গিয়ে ফল হয় উল্টো। তাই এ ধরনের অভ্যাস কখনোই করবেন না। সকালে না খাওয়ার কারণে আপনার মানসিক শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে। সেইসঙ্গে বেড়ে যেতে পারে রক্তচাপ, দেখা দিতে পারে হৃদরোগও।
মুগডালের তৈরি খাবার : বেসন এবং মুগ ডাল দিয়ে তৈরি খাবার যেমন গোলারুটি খাওয়া যেতে পারে। মুগ ডাল খুবই স্বাস্থ্যকর একটি খাবার। এতে থাকে কপার, ফোলেট, রিবোফ্লাভিন, ভিটামিন, ভিটামিন সি, ফাইবার, পটাসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন বি-৬, নিয়াসিন, থায়ামিন। যে কারণে এই ডাল শরীরের জন্য খুবই ভালো।
ডিম : সকালের নাস্তায় ডিম থাকে অনেকেরই। এটি অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাবার। ডিমে প্রোটিনের পাশাপাশি সেলেনিয়াম এবং কোলিনের মতো পুষ্টি উপাদানও থাকে। নিয়মিত ডিম খেলে তা হৃদযন্ত্র সংক্রান্ত রোগ প্রতিরোধ করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই আপনার সকালের নাস্তায় অবশ্যই একটি ডিম রাখবেন।
বাদাম : স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকা করলে শুরুর দিকেই থাকবে বিভিন্ন বাদামের নাম। আপনার সকালের নাস্তায় রাখতে পারেন বাদাম। এতে থাকে প্রয়োজনীয় প্রোটিন। সেইসঙ্গে আরও থাকে ফাইবার এবং ম্যাগনেসিয়াম। এগুলো শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। তবে একসঙ্গে অনেকগুলো বাদাম খাবেন না। প্রতিদিন একমুঠো খেলেই যথেষ্ট।
ওটস : বর্তমানে সকালের নাস্তায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ওটস। এটি দিয়ে বিভিন্ন খাবার তৈরি করা খুব সহজ। আপনার সকালের নাস্তার নিয়মিত অংশ করে নিতে পারেন ওটসকে। এতে থাকে প্রচুর ফাইবার। এই উপাদান হজমে সহায়ক এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখতে কাজ করে। সকালে একবাটি ওটস দিয়ে নাস্তা করলে সারাদিন আপনি ভরপুর শক্তি পাবেন।