শীতের বাজার মানেই ফুলকপি এবং বাঁধাকপি৷ বাজারের থলে থেকে রান্নাঘর-এই দুই সবজির দাপট থাকে শীতের শুরু থেকে বসন্ত পর্যন্ত৷ কিন্তু কোনওদিন কি ভেবে দেখেছেন এই দু’টির মধ্যে কোনটা বেশি উপকারী?
বাঁধাকপির উপকারিতা : একটি বাঁধাকপি থেকে ২২ ক্যালোরি শক্তি পাওয়া যায়। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। যা আপনার ডায়াবেটিস থেকে শুরু করে ওজন নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া বাঁধাকপি হচ্ছে ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ এবং এতে উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এ জন্য নিয়মিত বাঁধাকপি খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা চাঙা হয়।
ফুলকপি সেরা : মানবদেহকে ডিটক্স করতে ফুলকপির বিকল্প খুঁজে পাওয়া ভার। শরীরে প্রদাহের প্রকোপ কমাতে নিয়মিত ফুলকপি খেতে হবে। এছাড়া এতে রয়েছে অত্যন্ত উপকারী ফাইবারের ভাণ্ডার। যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও উপকারী। আবার ওজনও স্বাভাবিক গতিতে নিয়ন্ত্রণে আসে। এ জন্য প্রতিদিনের ডায়েটে ফুলকপি রাখতে পারেন।
পুষ্টিমূল্য : ফুলকপি এবং বাঁধাকপি দুটোই খুবই পুষ্টিকর৷ একাধিক ভিটামিন, ফোলেট আছে৷ ফুলকপিতে আছে ভিটামিন সি, কে এবং ভিটামিন বি-৬৷ অন্যদিকে বাঁধাকপিতে আছে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন কে৷ দু’টিতেই আছে ডায়েটরি ফাইবার৷
ক্যালোরি : যাঁরা ডায়েটিং করছেন তাঁরা জেনে রাখুন ফুলকপি এবং বাঁধাকপি দু’টিই লো ক্যালরি সবজির মধ্যে অন্যতম৷ ফলে ওয়েট ম্যানেজমেম্টে কার্যকর৷ সামান্য হলেও বাঁধাকপির তুলনায় কম ক্যালোরি আছে ফুলকপিতে৷
ক্যানসার প্রতিরোধী যৌগ : ক্যানসার প্রতিরোধী যৌগে ভরপুর ফুলকপি ও বাঁধাকপি দু’টিই৷ এই দুই সবজির সালফোরাফেন সাহায্য করে ক্যানসার কোষ রোধে৷ নিয়মিত ডায়েটে এই দুই সবজি রাখলে ক্যানসারের আশঙ্কা কমে৷ অ্যান্টি ক্যানসারের অঙ্গ এই দুই সবজি৷
হৃদরোগের ঝুঁকি : ফুলকপির পটাশিয়াম ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করে৷ বাঁধাকপির ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যৌগ সুস্থ রাখে হৃদযন্ত্র৷ কার্ডিওভাসক্যুলার সুস্থতার জন্য এই দুই সবজি রাখুন ডায়েটে৷
অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট : ফুলকপি এবং বাঁধাকপির অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট নানা অসুখ থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলে৷ ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়িয়ে দেয়৷ শারীরিক সুস্থতার জন্য এই দুই সবজি অবশ্যই রাখুন ডায়েটে৷-পুষ্টিবিদ নাতালি বাটলার৷
বেশি খেলে সমস্যা : শীতকালীন সবজি হওয়ায় অনেকেই সপ্তাহজুড়ে পছন্দের সবজিটি খাদ্যতালিকায় রাখেন। এতে কিন্তু ছোট ছোট নানা সমস্যায় পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এ জন্য প্রতিদিন ফুলকপি কিংবা বাঁধাকপি খাওয়া ঠিক নয়। সপ্তাহে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে চার থেকে পাঁচদিন খাওয়া যেতে পারে। আর দিনে এক কাপের থেকে বেশি নয়।
যারা খাবেন না : পুষ্টিবিদ শর্মিষ্ঠার কথায়, আইবিএস এবং গ্যাসট্রাইটিসের মতো সমস্যা থাকলে ফুলকপি ও বাঁধাকপি খাওয়া উচিত হবে না। তাহলে গ্যাস ও অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা হবে। এছাড়া রেনাল ডিজিজ বা কিডনিজনিত সমস্যা থাকলে ডায়েটে ফুলকপি ও বাঁধাকপি না রাখাই ভালো। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।