নিউইয়র্ক     রবিবার, ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : বিশ্বে চাকরি হারাতে পারেন ৩০০ মিলিয়ন মানুষ

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৩ | ১২:৪৪ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৩ | ১২:৪৪ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : বিশ্বে চাকরি হারাতে পারেন ৩০০ মিলিয়ন মানুষ

বিশ্বব্যাপী দিন দিন উন্নত হচ্ছে আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আর এ কারণে এর ব্যবহারও বাড়ছে। তবে বিশ্বের অন্যতম বড় লগ্নিকারী ব্যাংক গোল্ডম্যান সেকস সতর্কতা দিয়েছে, এআইয়ের এমন আস্ফালনের কারণে চাকরি হারাতে পারেন বিশ্বের ৩০০ মিলিয়নেরও বেশি (৩০ কোটি) মানুষ। এর অর্থ যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে বর্তমান যেসব চাকরি আছে তার চার ভাগের এক ভাগ চলে যাবে আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্সের দখলে। তবে সঙ্গে নতুন চাকরি এবং উৎপাদনও বাড়াবে এটি। গোল্ডম্যান সেকস সঙ্গে এও জানিয়েছে, বিশ্বে যেসব পণ্য ও সেবা উৎপাদিত হয়, আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্সের মাধ্যমে সেটির বার্ষিক মূল্য আরও প্রায় ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া মানুষ যেসব পণ্য তৈরি করে হুবুহ সেই একই পণ্য তৈরি করতে পারে উৎপাদনক্ষম আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স । গোল্ডম্যান সাচ বলেছে, এটি বিশ্বের জন্য ‘বড় অগ্রগতি।’

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের সরকার এআইয়ের ওপর বিনিয়োগের ব্যাপারে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে আগ্রহী। সরকারের মতে, ‘এআই পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় অগ্রগতি আনবে’ এবং তারা এটির প্রভাব সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তথ্যমন্ত্রী মিশেলে ডোনেলান সংবাদমাধ্যম দ্য সানকে বলেছিলেন, ‘আমি নিশ্চিত করতে চাই আমরা যুক্তরাজ্যে যেভাবে কাজ করি সেখানে আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স পুরিপূরক, এটি কাজের ক্ষতি করছে না— বরং চাকরি নেওয়ার বদলে আমাদের কাজকে সহজ করছে। গোল্ডম্যান সাচের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এআইয়ের প্রভাব বিভিন্ন খাতে ভিন্ন হবে। যেমন প্রশাসনিক কাজের ৪৬ শতাংশ, আইনগত পেশায় ৪৪ শতাংশ স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মধ্যে চলে আসতে পারে। কিন্তু নির্মাণ খাতে ৬ শতাংশ এবং রক্ষণাবেক্ষণ খাতে মাত্র ৪ শতাংশ কাজ এআইয়ের কবলে যেতে পারে। তবে বিবিসি কয়েকদিন আগে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, কিছু চিত্র শিল্পী শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যেসব আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স ছবি আঁকতে পারে, সেগুলো তাদের ভবিষ্যতকে অন্ধকারে ফেলে দেবে।

কম বেতন : অক্সফোর্ড মার্টিন স্কুলের ফিউচার অব-ওয়ার্ক পরিচালক কার্ল বেনেডিক্ট বলেছেন, ‘আমি একটি বিষয়ে নিশ্চিত— এটি জানার কোনো উপায় নেই উৎপাদনশীল আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্সের কবলে কতগুলো চাকরি যাবে।’ ‘চ্যাটজিপিটি কী করেছে, উদাহরণ স্বরুপ— মোটামুটি লেখার মান আছে এমন আরও বেশি মানুষকে প্রবন্ধ এবং আর্টিকেল লেখার সুযোগ দিচ্ছে।’ ‘সাংবাদিকরা আরও প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়বে, যেটির কারণে বেতন কমে যাবে, যতক্ষণ পর্যন্ত এ ধরণের কাজের খুব চাহিদা বাড়তে না দেখব।’ ‘আপনি জিপিএস টেকনোলজি এবং উবারের মতো প্রতিষ্ঠানের বিষয়টি বিবেচনা করুন, লন্ডনের সব রাস্তা চেনার বিষয়টির মূল্য কমে গিয়েছে। এর কারণে যারা আগে এ পেশায় ছিল তাদের বড় একটি অংশের বেতন কমে গেল।’ ‘মানে ফলাফল ছিল বেতন কমে যাওয়া, ড্রাইভার কমে যাওয়া নয়।’ ‘আগামী কয়েক বছরে আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্সও উদ্ভাবনী কাজগুলোর ওপর একই প্রভাব ফেলবে।’

‘অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা’ : প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে বিশ্বের ৬০ শতাংশ মানুষ যেসব কাজ করছেন ১৯৪০ সালের দিকের সেগুলোর কোনো অস্তিত্বই ছিল না। তবে অন্যান্য গবেষণা নির্দেশ করছে, ১৯৮০ সাল থেকে প্রযুক্তিগত যেসব পরিবর্তন এসেছে সেগুলো নতুন কর্মসংস্থানের বদলে মানুষের চাকরি কেড়ে নিয়েছে। আর প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের কারণে যা হয়েছিল আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্সের কারণেও যদি একই ব্যাপার ঘটে তাহলে এর প্রভাবে নিকট ভবিষ্যত থেকেই চাকরি কমে যাবে। তবে এটির দীর্ঘকালীন প্রভাবের বিষয়টি অনেকটাই অনিশ্চিত বলে জানিয়েছেলেন পর্যবেক্ষক সংস্থা রেজ্যুলেশন ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী টর্সেন বেল। তিনি বিবিসিকে বলেছেন, ‘সব ধারণাকেই আমলে নিতে হবে। তবে বিষয়টি হতে হবে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়ার মতো।’ সূত্র : বিবিসি

শেয়ার করুন