নিউইয়র্ক     সোমবার, ৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের রেমিট্যান্সের ৬২ শতাংশ আসছে পাঁচ দেশ থেকে

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ | ১২:০৩ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ | ১২:০৪ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
বাংলাদেশের রেমিট্যান্সের ৬২ শতাংশ আসছে পাঁচ দেশ থেকে

এক দশক আগেও রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় বেশি আসত সৌদি আরব থেকে। বর্তমানে সেই সূচক ঘুরে গিয়েছে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের দিকে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস জুলাই থেকে ডিসেম্বরে দেশে ১ হাজার ৭৯ কোটি ৮৬ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই এসেছে মাত্র পাঁচটি দেশ থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী সেই দেশগুলো হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যমতে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে শীর্ষ পাঁচ দেশ থেকে ৬৬৬ কোটি ১৯ লাখ ডলার এসেছে, যা মোট রেমিট্যান্সের ৬১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এছাড়া শীর্ষ ১০টি দেশ থেকে ৯২৮ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে।

তবে ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ১ হাজার ৪৯ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ৩০ কোটি ৫২ লাখ ডলার বেশি এসেছে। তথ্য মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ থেকে ক্রমেই বাড়ছে রেমিট্যান্সের হার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, আলোচ্য ছয় মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ১৯৮, সৌদি আরব থেকে ১৪২, যুক্তরাজ্য থেকে ১৩৭, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১১২, ইতালি থেকে ৭৬, কুয়েত থেকে ৭১, মালয়েশিয়া ৬৮, কাতার ৫২, ওমান ৪৪ ও বাহরাইন থেকে ২৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে।

সরকার গত কয়েক বছর ধরে রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ বাড়তি প্রণোদনা দিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের অর্জিত অর্থের বিপরীতেও আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হয়। এ ছাড়া দেশে বসে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করে যে অর্থ আয় হয়, সেটির বিপরীতেও প্রণোদনা সুবিধা দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জাপানি শিল্পোদ্যোক্তা সজল ডি. ক্রুজ বলেন, ‘বিদায়ি অর্থবছরে প্রায় ২ কোটি টাকা বাংলাদেশে পাঠিয়েছি। তার আগের অর্থবছরে পাঠিয়েছি ৪ কোটি টাকার মতো। স্বদেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে এ টাকা পাঠাই। ছুটিতে অন্য কোথাও যাই না। বাংলাদেশে গিয়ে ঘোরাঘুরি করি। দেশের প্রতি প্রাণের টান আছে। যে টান কখনও ভুলে থাকতে পারি না।’

তিনি বলেন, ‘২০০৪ সালে জাপানে আসি লেখাপড়া করতে। লেখাপড়া শেষ করে কিছুদিন চাকরি করি। স্বপ্ন দেখি উদ্যোক্তা হওয়ার। এরপর গঠন করি কোম্পানি। এভাবেই আজকে একটি অবস্থানে এসেছি।’ রেমিট্যান্সে প্রণোদনার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘এটা খুব ভালো উদ্যোগ। তবে দেশের ভেতর এবং বাইরে রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের আরও বেশি সম্মানিত করলে খুশি হতাম।’ জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইএমওর হিসেবে বিশ্ব জনসংখ্যার ৩ দশমিক ৪ শতাংশ অভিবাসী। আর তাদের উপার্জিত অর্থ পুরো বিশ্বের জিডিপিতে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ অবদান রাখে।

সংস্থাটি বলছে, সব মিলিয়ে বিশ্বের ১৪ শতাংশ মানুষ রেমিট্যান্সের সঙ্গে যুক্ত, যাদের কেউ পাঠাচ্ছেন আবার কেউ গ্রহণ করছেন। তবে বিশ্বব্যাংকের হিসাবে মোট রেমিট্যান্সের ৬০ থেকে ৯৫ শতাংশ যায় নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে। অর্থাৎ ৪০টি ধনী দেশে কাজ করা শ্রমিকরা অন্তত ১২৫টি দেশে তাদের পরিবার ও স্বজনের কাছে রেমিট্যান্স পাঠান, যা দিয়ে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ও শিক্ষার মতো মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ হয়। ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে পাঠানো রেমিট্যান্সের মোট পরিমাণ ৭৯৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার। এর মধ্যে ৬২৬ বিলিয়ন ইউএস ডলার গিয়েছে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে। ২০২১ সালে এর পরিমাণ ছিল ৫৯৭ বিলিয়ন ইউএস ডলার। সুত্র প্রতিদিনের বাংলাদেশ

শেয়ার করুন