নিউইয়র্ক     রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যবসা নিয়ে শঙ্কায় বিশ্বের ৪৫% শীর্ষ নির্বাহী

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৪ | ০৪:১০ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৪ | ০৪:১০ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
ব্যবসা নিয়ে শঙ্কায় বিশ্বের ৪৫% শীর্ষ নির্বাহী

অর্থনৈতিক আশাবাদ দ্বিগুণ হওয়া সত্ত্বেও ব্যবসা এক দশকের বেশি টিকবে না বলে মনে করেন বিশ্বের প্রায় অর্ধেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীরা (সিইও)। কারণ হিসেবে তারা বলেন, প্রযুক্তি ও জলবায়ুর চাপ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে জরিপে অংশ নেওয়া ৩৯ শতাংশ সিইও আশা প্রকাশ করেছেন, তাদের কোম্পানির কর্মীর সংখ্যা ২০২৪ সালে ৫ শতাংশ বা এর বেশি বৃদ্ধি পাবে।

বৈশ্বিক পরামর্শ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান প্রাইসওয়াটারহাউসকিপারসের (পিডব্লিউসি) ২৭তম বার্ষিক বৈশ্বিক শীর্ষ নির্বাহী জরিপে এ তথ্য উঠেছে এসেছে। এতে অংশ নেন ১০৫টি দেশ ও অঞ্চলের ৪ হাজার ৭০২ জন সিইও। সোমবার জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়।

জরিপে অংশ নেওয়া সিইওদের একটি অংশ বলছে, বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার অনুপাত ১৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩৮ শতাংশ হবে। যেহেতু মুদ্রাস্ফীতি ও ম্যাক্রোইকোনমিক অস্থিরতা নিয়ে উদ্বেগ কমেছে। ৩৯ শতাংশ সিইও মনে করেন, তাদের কোম্পানির কর্মী সংখ্যা ২০২৪ সালে ৫ শতাংশ বা তার বেশি বৃদ্ধি পাবে। তবে প্রায় অর্ধেক (৪৫%) সিইও মনে করেন না যে তাদের ব্যবসা পুনর্নির্মাণ ছাড়া এক দশকের বেশি টিকে থাকবে। তারা বলেন, আগামী তিন বছরে প্রযুক্তি, জলবায়ু এবং বেশ কয়েকটি অন্যান্য মেগাট্রেন্ড থেকে গত পাঁচ বছরের তুলনায় বেশি চাপের মুখোমুখি হবেন।

এদিকে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বিনিয়োগের জন্য মুনাফার হারে ছাড় দিতে রাজি আছেন প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৪ জন সিইও।

অন্যদিকে, ৭০ শতাংশ সিইও মনে করেন, জেনারেটিভ এআই  (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) আগামী তিন বছরে তাদের কোম্পানির মূল্য সংযোজন পদ্ধতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবে।

জরিপ অনুযায়ী, যারা মনে করেন আগামী ১২ মাসে বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি উন্নতি হবে, তাদের অনুপাত প্রতি বছরে দ্বিগুণ হয়েছে। একই সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে তাদের ব্যবসা টিকে থাকার উদ্বেগের অনুপাত ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। কারণ প্রযুক্তি ও জলবায়ুর চাপ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এছাড়া ৩৮ শতাংশ সিইও আগামী ১২ মাসে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী, যা ২০২৩ সালে ১৮ শতাংশ ছিল। অর্থনৈতিক অবনতির সংকেতেও সিইওদের প্রত্যাশা গত বছরের জরিপের রেকর্ড উচ্চতা (৭৩ শতাংশ) থেকে কমে ৪৫ শতাংশ হয়েছে। কারণ মুদ্রাস্ফীতি ও ম্যাক্রোইকোনমিক অস্থিরতার প্রতি অনুভূত ঝুঁকি যথাক্রমে ১৬ শতাংশ পয়েন্ট কমে ২৪ শতাংশ হয়েছে এবং ৭ শতাংশ পয়েন্ট কমে ২৪ শতাংশ হয়েছে।

চলমান সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে যেসব সিইওর ধারণা, তাদের কোম্পানি ভূরাজনৈতিক সংঘাতের ঝুঁকিতে খুব বেশি বা অত্যন্ত উন্মুক্ত, তাদের অনুপাত ৭ শতাংশ পয়েন্ট কমে ১৮ শতাংশ হয়েছে। যদিও প্রবণতা ইতিবাচক, তবে আত্মবিশ্বাস দুর্বল। যেহেতু মেগাট্রেন্ড, যেমন প্রযুক্তিগত অস্থিরতা- জেনারেটিভ এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) হচ্ছে এর একটি বড় উদাহরণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনও এর সঙ্গে একীভূত হচ্ছে।

প্রায় অর্ধেক (৪৫%) সিইও বলেছেন, তারা মনে করেন না তাদের বর্তমান ব্যবসা এক দশকের বেশি টিকে থাকবে। যদি এটি বর্তমান পথে চলতে থাকে। যা ২০২৩ সালে ৩৯ শতাংশ ছিল। মেগাট্রেন্ড কীভাবে সামলাবেন সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা প্রতিফলিত হওয়ায় সিইওরা গত বছরের তুলনায় নিজেদের কোম্পানির আয় বৃদ্ধির সম্ভাবনায় কিছুটা কম আত্মবিশ্বাসী- ৪২ শতাংশ থেকে কমে ৩৭ শতাংশ হয়েছে।

পিডব্লিউসির গ্লোবাল চেয়ারম্যান বব মরিটজ বলেন, ব্যবসায়িক নেতারা যেহেতু ম্যাক্রোইকোনমিক চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে কম উদ্বিগ্ন হচ্ছেন, তারা তাদের শিল্পের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী শক্তিগুলোর প্রতি আরও বেশি মনোনিবেশ করছেন। বিশ্ব অর্থনীতি সম্পর্কে আশাবাদ বাড়লেও, তারা গত বছরের তুলনায় নিজেদের রাজস্ব সম্ভাবনা নিয়ে কম আশাবাদী ছিলেন এবং তাদের ব্যবসায়ের মৌলিক পুনর্নির্মাণের প্রয়োজনের প্রতি আরও তীব্রভাবে সচেতন। জেনারেটিভ এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) এর দ্রুত বিস্তার ঘটানো বা জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ ও সুযোগগুলি মোকাবিলা করে তাদের ব্যবসা গড়ে তুলতে হবে, এটি একটি পরিবর্তনের বছর।

শেয়ার করুন