নিউইয়র্ক     শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের আম রফতানি করতে আগাম চুক্তি, থাকবে গবেষকদের তত্ত্বাবধান

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৪ | ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৪ | ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
বাংলাদেশের আম রফতানি করতে আগাম চুক্তি, থাকবে গবেষকদের তত্ত্বাবধান

বাংলাদেশ থেকে আম রফতানি করতে গিয়ে সবচে বড় সমস্যায় পড়তে হয় গুণগতমান বজায় রেখে ফল পাঠানো নিয়ে। প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে আম কিনে বিদেশি চাহিদামতো মানসম্পন্ন আম সরবরাহ করতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত হন রফতানিকারকরা। অন্যদিকে ন্যায্যমূল্য পান না কৃষকেরা। সমস্যা সমাধানে এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষকদের সঙ্গে আগাম চুক্তি করছেন রফতানিকারকরা। গবেষকদের তত্ত্বাবধানে বাগানের শতভাগ আমই হবে রফতানিযোগ্য।

আমচাষি, রফতানিকারক ও কৃষি বিভাগ জানায়, বিদেশে আম রপ্তানির প্রধান শর্ত শতভাগ নিরাপদ আম উৎপাদন। কিন্তু প্রশিক্ষণ ও উত্তম কৃষি চর্চার ব্যবহার না জানায় তা শতভাগ করতে পারেন না কৃষকরা। ফলে বিনিয়োগ ও শ্রম দেয়া স্বত্বেও কাঙ্খিত মূল্য পান না তারা।

অন্যদিকে, এসব আম নিয়ে বিদেশে রফতানি করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় রফতানিকারকদের। গুণগতমান বজায় না থাকায় ইউরোপের অনেক দেশের বাজার হারায় এসব আম। এসব সমস্যা সমাধানে এবার চুক্তি অনুযায়ী বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে কৃষকদের গাছ ও মাটি ব্যবহার করে আম উৎপাদন করবেন রফতানিকারকরা। উত্তম কৃষি চর্চা প্রয়োগ করে বাগানের শতভাগ আমই উৎপাদন করা হবে রফতানিযোগ্য। এমন উদ্যোগের ফলে একদিকে যেমন ন্যায্যমূল্য পাবে কৃষক, তেমনি অন্যদিকে নতুন আমচাষের পদ্ধতির সাথে পরিচিত হবেন তারা।

আমচাষি আব্দুল করিম বলেন, ‘আমরা উন্নত ও উত্তম কৃষি পদ্ধতি সম্পর্কে তেমন অবগত ছিলাম না। তাই আমাদের উৎপাদিত আম শতভাগ নিরাপদ ও বিদেশে রফতানিযোগ্য ছিল না। কিন্তু বিভিন্ন কোম্পানি আমাদের সঙ্গে চুক্তি করছে; এতে আমরা দেখভাল করলেও বাগানটির সার্বিক তত্ত্বাবধান করছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে এখন ্র্র চাষ পদ্ধতি সম্পর্কেও আমরা জানতে পারবো।

শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রডিউসার কোঅপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম জানান, জেলাজুড়ে প্রায় ৩০ জন কৃষকের সাথে বিভিন্ন রফতানিকারক কোম্পানি চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। আশা করি, মৌসুম শুরুর আগে এর সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বাড়বে। আম রফতানিতে এক বিপ্লব আনবে এমন উদ্যোগ।

রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান হ্যাপী হাটের নির্বাহী পরিচালক মো. শাহীদ জানান, বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদামতো শতভাগ নিরাপদ আম উৎপাদন ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বাজার ধরতেই কৃষকদের সাথে এমন আগাম চুক্তি করা হচ্ছে। এসব বাগানে শতভাগ আম উৎপাদন করা হবে সম্পূর্ণ রফতানিযোগ্য। তাই আগাম প্রস্তুতি হিসেবে কৃষকের সাথে চুক্তি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বারি) ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শরফ উদ্দিন বলেন, কৃষকরা নতুন কোনও উন্নত পদ্ধতি বা উত্তম কৃষি চর্চার কথা বললে অপারগতা দেখায়। কারণ নিরাপদ আম উৎপাদন করতে অনেক বেশি খরচ হয়। তাই তারা এই ঝুঁকি নিতে চায় না। কিন্তু রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান যদি নিজেদের সব খরচ বহন করে, তাতে কৃষক লাভবান হবেন এবং আগামী মৌসুমে বিদেশি আম রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে।

এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড.পলাশ সরকার বলেন, কৃষকদের সাথে রফতানিকারকদের এমন চুক্তি বিদেশে আম রপ্তানি বৃদ্ধির পাশাপাশি উত্তম কৃষি চর্চা ব্যবহারে কৃষকরা দক্ষতা অর্জন করবে। অন্যদিকে, আগামীতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম।

গতবছর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা থেকে ৩৭৬ মেট্রিক টন আম রফতানি হয়। এর আগে ২০২২ সালে ১৩২ মেট্রিক টন ও ২০২১ সালে ৬৫ মেট্রিক টন আম রফতানি হয় ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচের বিভিন্ন দেশে। আগামী বছর রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা না হলেও কৃষি বিভাগের দাবি, এর পরিমাণ কয়েকগুণ বাড়বে।সুত্র সময় নিউজ

শেয়ার করুন