নিউইয়র্ক     সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঋণ গ্রহণে আইএমএফের শর্ত বাংলাদেশে বৈষম্য বাড়াবে

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৩ | ১২:২৫ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২০ মে ২০২৩ | ১২:২৫ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
ঋণ গ্রহণে আইএমএফের শর্ত বাংলাদেশে বৈষম্য বাড়াবে

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ নেওয়ার কারণে সংস্থাটির বেশ কিছু শর্ত পালন করতে হবে বাংলাদেশকে। এতে দেশে বৈষম্য আরও বাড়বে। এমনিতেই দেশে বৈষম্য বেশি, তাই ভুক্তভোগীদের কথা মাথায় রেখে বাজেট বরাদ্দ রাখা উচিত। গত ১৫ই মে সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সিপিডি-নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘আইএমএফের সময়কালে অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের কথা জাতীয় বাজেটে কীভাবে প্রতিফলিত হতে পারে’ শীর্ষক সংলাপে এসব বিষয় উঠে আসে। সিপিডির ট্রাস্টি সুলতানা কামালের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। সিপিডির অপর বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল, বিএনপির নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা সংলাপে উপস্থিত ছিলেন।

মূল উপস্থাপনায় সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বর্তমানে এ অঞ্চলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল—এই চারটি দেশ সংস্থাটির কর্মসূচির মধ্যে আছে। উদাহরণ বলে, আইএমএফ যখন কোনো দেশে যায়, তারা তখন অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ওপর একক কর্তৃত্ব স্থাপন করে। তখন সে দেশে বৈষম্য বেড়ে যায়। ঋণ নেওয়ার কারণে বাংলাদেশকেও শর্ত মানতে হবে। এমনিতেই দেশে বৈষম্য বেশি, শর্তের ফলে বৈষম্য আরও বাড়াবে। দেবপ্রিয় বলেন, আইএমএফ বাড়তি কর আদায়ের কথা বলেছে। এ ক্ষেত্রে যারা করের বাইরে আছে তাদের করের আওতায় আনতে হবে। দেশে কর আদায়ের আদর্শ ব্যবস্থা নেই। অনেকের উত্তরাধিকারসূত্রে বিপুল সম্পদ আছে। সেখান থেকে কর আদায় করা উচিত।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে জিডিপি অনুপাতে সবচেয়ে ছোট বাজেট বাংলাদেশে। জিডিপি-অনুপাত সরকারি ব্যয়ের হিসাবে বাজেট হওয়ার কথা ১২ লাখ কোটি টাকার ওপরে। দেশে কর দেওয়ার যোগ্যরা কর দিচ্ছে না, ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, মূল্যস্ফীতি এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সমস্যা। রপ্তানি, রেমিট্যান্স চাপের মধ্যে আছে। রেমিট্যান্সের জন্য প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে, তারপরও হুন্ডির সঙ্গে পারা যাচ্ছে না। তবে ৩০ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ মন্দ নয়। চার থেকে পাঁচ মাসের আমদানি করার ক্ষমতা আছে। ভালো ভর্তুকি বাড়াতে হবে, মন্দ ভর্তুকি কমাতে হবে। প্রণোদনার নামে উন্মাদনা থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। বড় কর্মকর্তাদের বড় গাড়ি দিতে হবে—এ জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কারণ, সরকার কৃচ্ছ্রসাধনে আছে।

বাজেট অনাথ, আইএমএফ পালক পিতা : দেবপ্রিয়

আগামী বাজেটে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পালনের চাপ থাকায় বাজেটকে অনাথ এবং আইএমএফকে বাজেটের পালক পিতা বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। দেবপ্রিয় বলেন, আইএমএফ যখন কোনো দেশে যায়, তখন সেই দেশের অর্থনীতির ওপর একক কর্তৃত্ব আরোপ করে বা চেষ্টা করে। ফলে তাদের কর্মসূচি বা শর্তের কারণে দেশটিতে বৈষম্য বাড়ে। সংস্থাটি থেকে ঋণ নেওয়ার কারণে বাংলাদেশ বেশ কিছু সংস্কারমূলক কর্মসূচি শুরু করেছে। আইএমএফের কর্মসূচিটাই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বাজেট এখন অনাথ হয়ে গেছে, আর আইএমএফ তার (বাজেট) পালক পিতা হয়েছে। দেশে এমনিতেই বৈষম্য বেশি, মানুষের সংকট আমলে না নিয়ে আইএমএফের শর্ত মেনে এগোলে বৈষম্য আরও বাড়বে।

সাথী/পরিচয়

শেয়ার করুন