নিউইয়র্ক     রবিবার, ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেলিনা হোসেন

ভাষার শক্তিতে বলিয়ান হোক রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ০১:০৩ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৩ | ০২:১১ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
ভাষার শক্তিতে বলিয়ান হোক রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা

বাঙালির আবহমানকালের মূল্যবোধ, জীবনদর্শন নিয়ে পূর্ব বাংলার বাঙালি বর্তমানে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের অধিবাসী। এই স্বাধীনতা বাংলা ভাষাকে একটি দেশের রাষ্ট্রভাষা করেছে। এই স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলা ভাষায় জাতিসংঘে ভাষণ দিয়ে একে আন্তর্জাতিক মর্যাদায় উন্নীত করেছেন। তিনিই সেই বাঙালি, যিনি বলেছিলেন, ‘ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়েও বলব- আমি বাঙালি, বাংলা আমাদের দেশ, বাংলা আমার ভাষা, বাংলা আমার নিঃশ্বাসে-প্রশ্বাসে।’ এই স্বাধীনতা লাভের দীর্ঘ পটভূমি আছে। এই পটভূমি স্বল্প সময়ে অনায়াসে তৈরি হয়নি। এর জন্য সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে এই জনগোষ্ঠীকে- ঝরেছে অগণিত মানুষের রক্ত ও জীবন।

ভাষা প্রসঙ্গে আমেরিকান অধ্যাপক ড. কার্ল ব্লুমের সঙ্গে আমার ঘটে যাওয়া একটা ঘটনার আলোকপাত করা যাক।

আমেরিকার সাউথইস্ট মিসৌরি স্টেট ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপনা করেন ড. কার্ল ব্লুম। তার সঙ্গে আমার পরিচয় হয় ঢাকায়। বিবাহসূত্রে কার্ল ঢাকায় আসেন। তার সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র নীলোফার হাফিজ খান। তারা স্বামী-স্ত্রী। নীলোফারের গবেষণার বিষয় ছিল উপমহাদেশের তিনজন নারীর লেখা নিয়ে। সেই কারণে নীলোফার আমার সঙ্গে পরিচিত হন। একদিন কার্ল আর তাদের মেয়ে আলিলাকে নিয়ে আমার বাড়িতে এসেছিলেন, এখন থেকে ২২ বছর আগে। তাদের সঙ্গে এখন আমার ই-মেইলে যোগাযোগ হয়। তাদের ফোন পেলে ভালো লাগে।

কার্ল ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকার নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছিলেন। পড়াতেন সাহিত্য। ২০০৬ সালে প্রকাশ হয়েছিল তার উপন্যাস থ্রি গার্লস- ‘আ টোয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি টেল’। উপন্যাসে কার্ল ব্লুমের নাম ফারুক আবদুল্লাহ। এই নাম বিবাহসূত্রে গ্রহণ করেছিলেন। উপন্যাসের তিনটি মেয়ের জীবনসংগ্রাম রূপায়িত হয়েছে পাশ্চাত্যের একজন লেখকের দৃষ্টিতে। কার্ল বাংলাদেশের তিনজন মেয়ের জীবনকে সংযুক্ত করেছেন বৈশ্বিক ঘটনার প্রেক্ষাপটে। এখানেই এই উপন্যাসের চমক। উপন্যাসটি আমার ভালো লেগেছিল।

নীলোফার একুশের পটভূমিতে লেখা আমার গল্প ‘ফিরে দেখা’ ইংরেজিতে অনুবাদ করেছিলেন। গল্পের নায়িকা একজন পুলিশ অফিসারের মেয়ে। আশরাফের সঙ্গে তার প্রেম। পুলিশ বাবা মেয়েটির ভাষা আন্দোলনে যাওয়া একদম পছন্দ করেন না। মেয়েটি বাবার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মিছিলে-সভায় যায়। পুলিশ বাবা আশরাফের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ের দিন ঠিক করেন। ২১ ফেব্রুয়ারি গায়েহলুদের দিন ঠিক করা হয়। সেই দিন মেয়েটি গায়েহলুদের সব আয়োজন ফেলে রেখে মিছিলে যায়। ও যখন ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ স্লোগান দেয়, তখন দেখতে পায় ওর বাবা বন্দুক তাক করে জিপের ওপর দাঁড়িয়ে আছেন। গল্পটি এখানেই শেষ।

কার্ল ব্লুম তার বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কোর্সটি পড়ান তার শিরোনাম ‘দ্য ভ্যারাইটি অব লিটারেচার’। সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের জন্য এটি একটি সার্ভে কোর্স। দুটি সেকশনে কোর্সটি পড়ানো হয়। এক এক সেকশনে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৪৩। ২০১৫ সালের জুলাই মাসের ১০ তারিখে পড়ানো হয় আমার গল্পটি। অনুবাদের ইংরেজি শিরোনাম ‘ইন রিট্রসপেক্ট’। অন্য গল্পগুলো ছিল জেমস বলডুইনের ‘সনিস ব্লুজ’, উইলিয়াম ফকনারের ‘আ রোজ ফর এমিলি’ এবং আন্তন চেখভের ‘বুজ বেরিস’।

আমার গল্পটি ক্লাসে পড়ানোর খবরটি কার্ল ব্লুম আমাকে জানান। একদিকে আমি খুশি হই, অন্যদিকে আমার কৌতূহলও জাগে। ছেলেমেয়েরা গল্পটি সম্পর্কে কোনো মতামত দিয়েছে কি না তা জানার জন্য আমি কার্লকে লিখি।

 

কার্ল ই-মেইলে আমাকে উত্তর পাঠান।

কার্ল লিখেছেন, বেশির ভাগ ছেলেমেয়ে গল্পটি পড়ে এবং শুনে বলেছে, তাদের জীবন বিপদাপন্ন হতে পারে এমন কোনো রাজনৈতিক প্রতিবাদে তারা যুক্ত হবে না। রাজনীতির জন্য তারা কখনোই বিবাহ অনুষ্ঠান মিস করবে না।

কার্ল আরও লিখেছেন, ওরা ভাষা আন্দোলন বোঝেনি। আর এটা কোনো ব্যাপারই না। (ইউ ওয়াজ নট আ বিগ ডিল)। কার্ল ওদের জিজ্ঞেস করেছিলেন, আমেরিকায় যদি হঠাৎ করে আমাদের বলা হয় স্প্যানিশ বা ফরাসি ভাষায় কথা বলতে, তাহলে তোমরা কী বলবে? ওরা বলেছিল, দ্যাট ওয়াজ ক্রেজি।

গল্পের সমাপ্তি নিয়ে ওদের প্রশ্ন ছিল। বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রী বলেছিল, তারা কখনো রাজনীতিতে যুক্ত হয়নি, বরং সর্বাত্মকভাবে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে।

কার্ল লিখেছেন, ‘আমি অবশ্য আমেরিকার খুব রক্ষণশীল এবং প্রত্যন্ত এলাকায় বাস করি। ফার্গুসনে মাইকেল ব্রাউন নামক একজন কৃষ্ণাঙ্গ তরুণকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে। ২০১৪ সালের ৯ আগস্ট ঘটনাটি ঘটে। তখন ওখানে বেশ কয়েকটি প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছিল। ২০১৫ সালে এই মৃত্যুর এক বছর পূর্তি উপলক্ষে পুলিশ স্টেশনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। কিন্তু ফার্গুসনের বেশির ভাগ মানুষই মনে করে পুলিশ সদস্যরা ভালো। তাদের কোনো অপরাধ নেই। কৃষ্ণাঙ্গ লোকেরাই প্রতিবাদ-সমাবেশ করে। একজন কৃষ্ণাঙ্গ অপরাধীকে সাপোর্ট দিচ্ছে। (পিপল অ্যাক্টিং ক্রেজি)

কার্ল লিখেছেন, ‘এই বক্তব্যে আমি খুব মর্মাহত হয়েছি।’

কার্লের এই উত্তর পাওয়ার পরে আমি ভেবেছি, ৭১ বছর আগে ঘটে যাওয়া ঘটনায় জীবন দিয়েছিলেন মাতৃভাষার প্রশ্নে সচেতন তরুণেরা। আর এত বছর পরে তথ্যপ্রযুক্তির এই সময়ে আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজনীতিসচেতন নয়। মাতৃভাষার প্রশ্নে সচেতন নয়।

অন্যদিকে গল্পটি সাহিত্যের মানদণ্ডে কতটা সুন্দর সে বিবেচনাও তারা করেনি। তাদের কাছে রাজনীতির দ্বারা ব্যক্তিগত প্রসঙ্গটি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, সেটিই প্রধান হয়ে উঠেছে। রাজনীতি ও ব্যক্তিজীবনের বড় পরিসর এই প্রজন্মের ছেলেমেয়ের কাছে ভিন্ন আলোকে দেখা দিয়েছে।

মোটা দাগে আরও কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করা যাক

এক. সাতচল্লিশে দেশ ভাগের পরবর্তী সময়ে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন পূর্ববঙ্গের বাঙালির একটি বিশাল এবং স্থায়ী সাংস্কৃতিক অর্জন। মাতৃভাষার জন্য এই জীবনদান পৃথিবীর ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা। এ ঘটনা বাঙালির জীবনে এক অমিত সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেয়। তাই ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতাযুদ্ধ আমাদের কাছে অতীতের একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়।

দুই. এই ভূখণ্ডের বাঙালির পরবর্তী ধাক্কা সামরিক শাসনের নিপীড়ন-সামরিক শাসনের অভিজ্ঞতা তার এই প্রথম এবং কোনো বাঙালি জনগোষ্ঠীকে এ ধরনের নিপীড়নের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছিল কি না তা আমার জানা নেই, যার ভেতর থেকে সে জনগোষ্ঠীর লেখকরা কুড়িয়ে আনতে পারে গুটিকয় সোনালি শস্যদানা।

তিন. পৃথিবীর কোথাও রবীন্দ্রনাথ রাষ্ট্রযন্ত্রের রোষানলে পড়েননি, যেমন পড়েছিলেন তৎকালীন পূর্ববঙ্গে। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় তথ্যমন্ত্রী রবীন্দ্রসংগীত প্রচার নিষিদ্ধ করেছিলেন রেডিও-টেলিভিশনে। পূর্ববঙ্গবাসী তাঁকে বুকে আগলে রাখার জন্য প্রতিবাদে, বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল। রবীন্দ্রসংগীত গাইবার অপরাধে সরকারের হাতে নিগৃহীত হয়েছিলেন কোনো কোনো শিল্পী। পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনেম খাঁ রবীন্দ্রসংগীত লিখতে পারেন না কেন বলে ধমকেছিলেন লেখকদের তাঁর সরকারি বাসভবনে ডেকে নিয়ে। ১৯৬৯ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা’ থেকে ছাড়া পেয়ে তাঁর প্রথম ভাষণে বলেন, ‘আমরা রবীন্দ্রনাথের বই পড়বই, আমরা রবীন্দ্রসংগীত গাইবই এবং রবীন্দ্রসংগীত এই দেশে গীত হবেই।’ সংস্কৃতিকর্মীদের প্রতিবাদের পাশাপাশি এটি ছিল একটি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। শেষ পর্যন্ত মানুষের প্রতিরোধের মুখে নতি স্বীকার করেছিল পাকিস্তান সরকার রাষ্ট্রীয় প্রচারযন্ত্রে নিষিদ্ধঘোষিত রবীন্দ্রসংগীত পুনঃপ্রচারের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকারের কোনো নির্দেশ ছিল না, তবু মানুষের মুখে মুখে সেই দারুণ দুর্দিনে যে গান উঠে আসে তা রবীন্দ্রনাথের ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।’

চার. পাকিস্তান সরকারের শোষণ, বঞ্চনা, অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং সাংস্কৃতিক পদদলনের প্রতিবাদে ৯ মাস স্থায়ী যুদ্ধ বাঙালির জীবনের আকাশছোঁয়া অন্য রকম অভিজ্ঞতা। দেখতে হয়েছে গণহত্যা, বন্দিশিবিরের নিদারুণ অত্যাচার, নারী ধর্ষণ-শিশুর খুলি রাজপথে বেয়নেটের মাথায়। দেখতে হয়েছে গেরিলা অপারেশন, রাতের অন্ধকারে মুক্তিযোদ্ধার জ্বলজ্বলে চোখ। দেখতে হয়েছে স্বাধীনতার পর যুদ্ধশিশু। বিধ্বস্ত দেশ। শুনতে হয়েছে স্বজন হারানোর আর্তনাদ। সইতে হয়েছে বুদ্ধিজীবী হত্যার শূন্যতা।

পাঁচ. ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ইতিহাসের মহান বাঙালি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে জীবন দিতে হয় সামরিক বাহিনীর কতিপয় সদস্যের হাতে। যিনি ১৯৫৫ সালের আগস্ট মাসে করাচিতে অনুষ্ঠিত পাকিস্তান জাতীয় সংসদের অধিবেশনে তার গমগমে কণ্ঠস্বরে স্পিকারকে বলেছিলেন, “স্যার, আপনি দেখবেন, ওরা পূর্ব বাংলা নামের পরিবর্তে পূর্ব পাকিস্তান নাম রাখতে চায়। আমরা বহুবার বলেছি, আপনারা এ দেশটাকে ‘বাংলা’ নামে ডাকেন। বাংলা শব্দটার একটা নিজস্ব ইতিহাস আছে, আছে এর একটা ঐতিহ্য। আপনারা এই নাম পরিবর্তন করতে চাইলে আমাদের জনগণের সঙ্গে আলাপ করতে হবে।” অথচ এই বাংলাদেশে তার কণ্ঠ স্তব্ধ করে দেয়া হয়েছে। তাই বলে ইতিহাসের নিজস্ব গতি কেউ থামিয়ে দিতে পারে না। বাংলাদেশ তার নিজস্ব পথ খুঁজে নিয়ে চলেছে। উর্বর হচ্ছে তার নিজস্ব মাটি।

যে কয়টি বড় ঘটনার উল্লেখ করলাম এর বাইরে আরও নানা ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলা করতে হয়েছে দেশবাসীকে। দাঙ্গা, দুর্ভিক্ষ, মহামারি, জলোচ্ছ্বাস, সাইক্লোন এবং গণ-অভ্যুত্থানের মতো অসংখ্য ছোট-বড় ঘটনা এ দেশের মানুষের শান্তি ও স্বস্তির বিপরীতে লৌহকঠিন ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকার শপথ।

এই পথ পরিক্রমার অজস্র অভিজ্ঞতা নিয়ে তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের ভাষা ও সাহিত্য। এই নির্মাণ হাজার বছরের বাংলা ভাষার মূল স্রোতে একটি বড় সংযোজন, যে সংযোজনের ফলে হাজার বছরের বাংলা ভাষার বৈচিত্র্য ও আয়তন বেড়েছে। এ যাত্রার অনুষঙ্গ নানাবিধ—বিশ্লেষণ করলে বেরিয়ে আসবে কীভাবে এ দেশের ভাষা ও সাহিত্য বাঙালির গৌরবকে শাণিত করেছে, দিয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী রচনার মৃত্তিকা।

বাংলাদেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষা আমাদের গদ্যের এক বড় সম্পদ। বাংলা একাডেমি থেকে আঞ্চলিক ভাষার অভিধান প্রকাশিত হয়েছে। আঞ্চলিক ভাষার এই বিপুল শব্দভাণ্ডার, লেখকদের ব্যবহার পদ্ধতি আমাদের গদ্যকে বাংলা ভাষার অন্য অঞ্চলের গদ্য থেকে বিশিষ্ট করে তুলেছে। দিয়েছে ভাষার প্রাণশক্তি। যে প্রমিত গদ্য বাংলাদেশের মানুষ ব্যবহার করে তার কাঠামো সবটা কলকাতাকেন্দ্রিক নয়। অনেক সময় তা পূর্ববঙ্গের আঞ্চলিক ভাষাকাঠামোর ওপর শুধু শুদ্ধ শব্দের প্রতিস্থাপন। এটি বাংলাদেশের সাহিত্যের গদ্যকে কিছুটা স্বাতন্ত্র্যমণ্ডিত করে। উচ্চারণ ও বাকভঙ্গির ভিন্নতা গদ্যের বৈচিত্র্য নির্ণয়ের একটি বড় উপাদান। যে জনগোষ্ঠী যে ধরনের সংস্কৃতির ভেতরে বসবাস করে সে সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্যের ওপরও গদ্যের প্রকাশ কী হবে, তা নির্ভর করে। একটি জনগোষ্ঠী নিজস্ব মূল্যবোধের ভিত্তিতে যে জীবনাচরণ গড়ে তোলে সেটা জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি। ভাষা সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান। এই ভাষা শুধু আমাদের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যকেই চিহ্নিত করেনি, রাজনৈতিক দিকনির্দেশনারও বলিষ্ঠ প্রকাশ ঘটিয়েছে।দৈনিক বাংলার সৌজন্যে

শেয়ার করুন