নিউইয়র্ক     রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাকন রেজার কবিতা

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৩ | ১২:৫৪ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৩ | ১২:৫৪ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
কাকন রেজার কবিতা

১.

মিল অমিলের পদ্য

কদম গাছ এখনো আছে এবং তুমিও রাধা

চলো, শেকলটা খুলে ফেলি… দৃশ্যত বাঁধা।

মিমি, জানে না তার রয়েছে অন্য এক নাম

রাধা, যার নামে পদাবলী… কৃষ্ণের বদনাম।

উড়ে যায়, দূরে যায়, গলগ্রহ দায়ে প্রজাপতি

অনূঢ়া রয় কন্যা… রাধার বিকল্প নাম অদিতি।

খুব কি পেয়েছিলো ঘুম, রাতেরা জেগে ছিলো

অন্ত্যমিলে ঘুম… মিলের সাথে থাকে অমিলও।

কার যে হলো হার, জানে কি নীলরঙা আলো

আমিও বাসি… রাত জানে তুমিও বাসো ভালো।

২.

ত্রয়ী

কাঁটাতার

একটা পাহাড় একলা হয়েই আছে

একটা আকাশ শূন্যতারই কাছে;

মিলবে কি আর মেলার কথা ছিলো

কাঁটাতার তার দায়টা কাঁধে নিলো।

দ্রোহের আগুন

দ্রোহের আগুন পোড়ালো কখন কাকে

পোড়ার চিহ্ন শরীর জুড়ে থাকে-

পুড়েছে যারা তারাই মনে রাখে।

ভস্ম

স্পর্শ করি শরীর জুড়ে আগুন

পুড়তে পোড়াতে খানিক না হয় জাগুন;

শেষ হবে ভস্মে পোড়া ছাই

ছুঁয়ে দেখা শরীর তখন নাই।

৩.

অর্থহীন অন্ত্যমিল ও অভিমান

উড়ছে তিনটে পাতা, উড়ছে তিনটে গাছ

অভিন্ন সত্তায় ডুবছে নদী, ভেসে উঠছে মাছ;

গাছের সাথে মাছের অন্ত্যমিলে প্রশ্ন থেকে যায়

গণিত মাস্টার বলেন, অঙ্ক মেলে না বিয়োগে হারায়।

সব কি মিলতে হয়, হয় না তো

অম্বলের পেটে সয় না তো দুধ-ভাতও

কে মেলায়, কেই বা মিলে যায়, কেউ কি জানে

অদৃশ্য নকশার জোড়া খোঁজে মিমি অভিমানে।

৪.

বিস্ময় ও প্রশ্ন

আমি তার প্রথম ছিলাম না জানি

ছিলাম তো … নাকি?

কই, দিন কেটে গেলো রিঙটোন নিশ্চুপ

এ নিস্তব্ধতা কোথায় রাখি!

৫.

ক্যানভাসে ঈশ্বরী আঁকি

ক্যানভাস সমুখে নিয়ে বসে আছি

তাকে আঁকবো বলে

বিমূর্ত কোনো কিছুতে ইচ্ছে নেই

ছিলো না কখনো

পোর্ট্রেট আঁকতে পারি, জল নয়, তেলরঙে

জল বড় প্রবহমান, বিশ্বস্ত নয়

আমি বিশ্বস্ততা আঁকি

ফলে ক্যানভাসে শূন্যতা ভর করে

ক্যানভাস সমুখে নিয়ে বসে আছি

মিমি, তাকে আঁকবো বলে

বিমূর্ত থাকে যে নিজেকে ঈশ্বরী ভেবে

অথচ ঈশ্বর সমান শূন্যতা

শূন্যতা সমুখে নিয়ে বসে আছি

ক্যানভাসে ঈশ্বরী আঁকবো বলে।

৬.

খেয়াল রেখো

নিজের দিকে খেয়াল রেখো

অন্ধকার ক্রমশ ধেয়ে আসে, বয়স হয়ে যায় পাথরের

জলেরা তা জানে বলেই স্রোতের তীব্রতা বাড়ায়

পাথর ক্ষয়ে যায় এবং মানুষেরা

নিজের দিকে খেয়াল রেখো

দৃশ্যগুলো অদৃশ্য হয়, রাতের শো শেষ হলে নীরব থিয়েটার

চেয়ারগুলো শূন্যতার ক্যানভাস হয়ে ওঠে

চেয়ার এবং মানুষ তখন সমমান

নিজের দিকে খেয়াল রেখো

শেষ ভেঁপু বেজে গেলে যেতে হয়, জাহাজ ভিড়েছে বন্দরে

যাত্রী তোলা শেষ হলেই ছেড়ে যাবে, রয়ে যাবে শূন্যতা

শেষ যাত্রৗ হলেও যেতে হবে, যেতে তো হয়

নিজের খেয়াল রেখো, সাথে অন্যদের

যারা তোমার প্রশ্রয়ে ক্রমশ নিশ্চিন্ত হয়ে ওঠে সাথে বেড়ালটাও

পশু ও মানুষের ভেদরেখা উঠে যায়, পশুও মানুষ হয়ে যায়

পশুরা আশ্রয় চায়, মানুষও- খেয়াল রেখো।

শেয়ার করুন