১.
আঁধার রহস্যময়
প্রশ্নটা জেগে থাকে, উচিত নয় তবু থাকে
অপ্রস্তুত ভোর ছোঁয়া রাত সে কি মনে রাখে?
রাখে না, রাখে না
অন্ধকার সে গায়ে মাখে না!
২
খুব কি সহজলভ্য রাতের আঁধার
সে কি ভাবে?
ভোর অর্থহীন
রাতের অভাবে।
৩
চিৎকার করা যায়, কঠিন নয়
শীৎকারে নিশ্চিত নেই অভিনয়;
চিৎকার বলা যায় আলোর মতন খানিক
শীৎকার আঁধার থেকে আসা প্রামাণিক।
৪
তোমার গানের মতন শীৎকার সেও
ভোরের আগে শরীর দিয়ে গেয়ো;
সেদিন যেমন গেয়েছিলে রাতে
আঁধার আলো হয়ে উঠেছিলো অনুকম্পাতে।
৫
অন্যরকম সে আঁধার, শেষ রাত বড় রহস্যময়
অন্ধকারে প্রার্থিত হয়ে ওঠে যে পরাজয়;
জয়ের শ্রান্তিতে ভিজে যায় জোছনা কোমল
বিভ্রান্ত ভোরকে ভাসায় আঁধারের জল!
২.
অন্ধকারের বেপারি
অন্ধকার বিক্রি করি, অন্ধকার
ফানুসে তাড়াবে বলো সাধ্য কার
২
তুমি আলোর বেপারি, ভালো কথা
জানো কি, আলো মূলত আঁধারের কথকতা
৩
অন্ধকার বিক্রি করি, সুলভ আঁধার
আলোতে দৃশ্যমান সে দারুণ ধাঁধার
৪
অন্ধকার নেবেন অন্ধকার, প্রয়োজনে বাকিতে
আলোর ঋণ শোধ হয় না, থেকে যায় ফাঁকিতে
৫
দুয়ারে এসেছি নিয়ে আঁধার একডালি
আঁধার পুরো জীবন, আলো শুধু এক ফালি
৬
কবিরা আলো বেচেন, কবিতার নামে
আমি আঁধার বেচি কবিদের বদনামে
৭
নিয়ে যাও, এখনো আছে পুরোটাই ডালিতে
মিমি, জীবন লিখে আঁধার, অমোচনীয় কালিতে
৩.
গহনের জীবন
সশব্দে পতিত হয় নক্ষত্রের কণা
নির্বাণ নিঃশব্দ, তার কোনো মানে নেই, খানিক আনমনা;
মানুষ আত্মহত্যা প্রবণ, মৃত্যুতেই বেঁচে থাকে
শরীর নশ্বর, হৃদয় আমৃত্যু তাহাকেই মনে রাখে।
২
সে কি মৃত্যু? কিংবা তারো বেশি বেঁচে থাকা
কতটা গভীর সে রহস্য, কতটা গহনে ঢেকে রাখা;
জানি না তো, জানতে নেই বলে
বুকের ভেতর যে মশাল, তার নামে জ্বলে।
৩
সে কি তবে বিপ্লব? বিক্ষোভ কম্পিত রাজপথ
বিসর্জন দেয়া আপাত মিলন, গোপন শপথ;
ভাসান বলা যায়, বয়ে চলে লখিন্দরের ভেলা
কথা স্পষ্ট, রয়েছে মনে, প্রেম ও বিপ্লবে নেই অবহেলা।
৪.
মিমি বলে কেউ আছে
মিমি বলে কেউ কি আছে, আছেন তেমন
মিমি কি থার্মোমিটার কিংবা নিজেই জ্বর;
মিমি কি ইউটোপিয়া, স্বপ্নের আলোক বা
মিমি কি নির্বাণ, সন্ধ্যের পরিপূর্ণ অবসর?
মিমি কি মৃত্যু কিংবা তারচেয়ে বেশি বেঁচে থাকা
মিমি কি লোমশ বেড়াল, বুকের উমে তুলে রাখা;
মিমি কি অশরীরী এক অথবা মগজে ঘুণপোকা
মিমি বলে কেউ আছে, না আমিই বোকাসোকা
৫.
আমৃত্যু চুম্বন নিরবধি
ফিরে আসার নিশ্চিত শর্ত রেখে হয়ে গেলে নদী
জলের তলায় রেখে যাবো আমৃত্যু চুম্বন নিরবধি।
২
কতটুকু তৃষ্ণা জমে আছে, চাতকের অনুভব জানে
তোমাকে দিয়ে যাবো আয়ুর্বেদ, খেয়ো ঠিক অনুপানে।
৩
তর্জমা করে যাবো সকল কঠিন গ্রন্থাবলী, মন্ত্রের গুণ
কতটা পুড়ে গেলে, ছাইয়ের ভেতর থেকে যায় আগুন।
৪
মিমি, সরে যেতে যেতে বলি, বলি দূরে যেতে যেতে
পূজারি নয়, দেবী নেয় অঞ্জলি ভিখারিণী হাত পেতে।
সুমি/পরিচয়