আম যদি ‘ফলের রাজা’ হয়, তবে আঙুরকে বলা হয় ‘ফলের রানি’। আর বলার কারণও রয়েছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন নিয়ম করে আঙুর খেলে, শরীরে বহু রোগ বাসা বাধতে পারে না। একবার দেখে নিন, আঙুর খেলে কী কী উপকার হতে পারে আপনার-
১) আঙুরে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা বার্ধক্য রোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
২) রাতের খাবার খাওয়ার পরে এক গ্লাস আঙুরের জুস আপনার হার্টের সমস্যা সারিয়ে দিতে পারে।
৩) কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রোধ করতে আঙুরের জুড়ি মেলা ভার। কেননা, এতে বিভিন্ন অর্গানিক অ্যাসিড, ভিটামিন সি থাকে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে সাহায্য করে।
৪) আঙুরে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস নামে এক ধরনের উপাদান থাকে। যা শরীরের রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে। যারা রক্ত সঞ্চালনের ভারসাম্যহীনতায় ভোগেন, তাদের ক্ষেত্রে আঙুর খুবই উপকারী।
৫) ক্যানসার রোধেও আঙুরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আঙুরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফামিটরির মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকে। যা ক্যানসার রোধে সাহায্য করে।
৬) মাথাব্যাথা বা মাইগ্রেনের সমস্যা দূর করতেও আঙুরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
৭) হজমের সমস্যার সমাধানেও আঙুরের ভূমিকা অপরিসীম।
৮) দেহে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে আঙুর। যার ফলে কিডনি ভাল থাকে।
৯) আঙুরে ফাইটোকেমিক্যাল, ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় ত্বকের জন্যও এই ফলটি বেশ উপকারী।
১০) চোখ ভাল রাখতেও এই ফল বেশ কার্যকারী।
১১) বহু মানুষের চুলে খুশকির সমস্যা রয়েছে। অনেকের চুলের ডগা ফেটে গিয়ে রুক্ষ হয়ে পড়ে যায়। এই সমস্ত সমস্যার সমাধানে আঙুর বেশ উপকারী।
আঙুর স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল কিন্তু এর বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে
এক নজরে দেখতে গেলে আঙুর স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল। কিন্তু এর বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। অতিরিক্ত আঙুর খেলে দেখা দেয় একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যা। ওজন বাড়তে পারে, কিডনির সমস্যা আসতে পারে এছাড়াও বাড়তে পারে রক্ত শর্করার পরিমাণও। কোনও খাবারই অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। আর তাই যাঁরা ডায়েট করছেন, তাঁরা কিন্তু আঙুর এড়িয়েই চলুন। আঙুর বেশি খেলে যে সব সমস্যা আসে
ডায়ারিয়া হতে পারে- চিনি সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেলেই পেট কামড়ায়। সেখান থেকে ডায়ারিয়ার সমস্যা হতেই পারেয আঙুরের ক্ষেত্রেও কিন্তু ঠিক তাই। যদি পেট খারাপের ধাত থাকে বা হজমের সমস্যা থাকে তাহলে কিন্তু আঙুর এড়িয়ে চলাই ভাল।
কিডনির সমস্যা- যাঁদের কিডনির সমস্যা রয়েছে তাঁদেরও আঙুর এড়িয়ে চলাই উচিত। আঙুর বেশি খেলেই কিডনির সমস্যা হয়। যেহেতু এটি রক্তশর্করাও বাড়িয়ে দেয় তাই ডায়াবিটিস ও কিডনির রোগীদের আঙুর এড়িয়ে চলা উচিত। এমনকী বাড়িতে কোনও পোষ্য থাকলে তাকেও আঙুর দেবেন না। এতে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
ওজন বাড়ে- শীতকালে কম-বেশি সকলেরই ওজন বাড়ে। আর আঙুরের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ক্যালোরি। তাই রোজ নির্দিষ্ট পরিমাণের বাইরে গিয়ে আঙুর খেলে কিন্তু ওজন বাড়বেই। এছাড়াও আঙুরে প্রোটিনের পাশাপাশি ফ্যাটও থাকে। যা ওজন বাড়ার অন্যতম কারণ। এছাড়াও ফাইবার, কপার, ভিটামিন-কে এবং থায়ামিন রয়েছে আঙুরের মধ্যে।
গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত আঙুর নয়- আঙুরের মধ্যে থাকে পলিফেনল। এই পলিফেনল কিন্তু রেড ওয়াইনের মধ্যেও থাকে। এতে গর্ভস্থ শিশুর অগ্ন্যাশয়ের জটিলতা দেখা দিতে পারে। আর তাই এড়িয়ে চলুন রেড ওয়াইন।
অ্যালার্জির সমস্যায়- অনেকেরই অ্যালার্জির সমস্যা থাকে। তাঁদের কিন্তু আঙুর একেবারেই এড়িয়ে চলা ভাল। আঙুরের মধ্যে থাকে ট্রান্সফারেজ নামক একপ্রকার প্রোটিন। যা অ্যালার্জির সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও অ্যানাফিলাক্সিসের সমস্যা হতে পারে। যে কারণে জীবন সংশয়ও দেখা দিতে পারে। যাঁদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে তাঁদের আঙুর খেলেই গলা চুলকোনো, ত্বক লাল হয়ে যাওয়া, মুখের মধ্যে অ্যালার্জি এসব সমস্যা কিন্তু আসতেই পারে।