নিউইয়র্ক     শুক্রবার, ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাপ সামলান

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ | ০১:০৪ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৩ | ০১:২০ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
চাপ সামলান

প্রতিনিয়তই নানারকম মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে যাই আমরা। নানামুখী চাপ ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলে একসময় শারীরিক অসুখ তৈরির আশঙ্কা থাকে। মন ভালো রাখতে চাপ সামলানোর দক্ষতার চর্চা করতে হবে।

কীভাবে বুঝবেন

আমরা সবাই কমবেশি মানসিক চাপে ভুগছি যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা তা অনুধাবন করতে পারি না। নিচের লক্ষণগুলো মিলিয়ে দেখে নিন আপনি মানসিক চাপে ভুগছেন কিনা।

১. দিনের বেশিরভাগ সময় ভালো না লাগা বা বিষণ্ন বোধ হওয়া। মেজাজ খিটখিটে, সহজেই ধৈর্য হারানো, সামান্য ব্যাপারে আতঙ্কিত বা দুশ্চিন্তা করা। অর্থাৎ রাগ, হতাশা, একাকিত্ব, ভয়—এ ধরনের নেতিবাচক অনুভূতিগুলো বেড়ে যাওয়া।

২. ঘুম খুব কম বা অতিরিক্ত বেশি হওয়া, যে কোনো কাজে আগ্রহ হারানো, খাবারে অনীহা বা অতিরিক্ত খাওয়া।

৩. একা থাকা বা মানুষের সঙ্গে মিশতে অনীহা এবং সামাজিক অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলা। কোনো কিছুতে আগ্রহ না পাওয়া, অতীতের আনন্দ আর খুশির বিষয়গুলোতেও আগ্রহ না থাকা ইত্যাদি।

৪. মানসিক চাপ বেশি থাকলে শরীরে স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা বাড়তে থাকে। এ হরমোনগুলো দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করলে শরীর অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে যায়। এছাড়াও শরীরিক অন্যান্য উপসর্গ হতে পারে— বুকব্যথা, মাথাব্যথা, বদহজম, খাবারে অরুচি ইত্যাদি।

চাপ সামলানোর উপায়

১. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের প্রথম পদক্ষেপ কারণগুলো চিহ্নিত করা। যখনই কোনো বিষয়ে আপনার খারাপ লাগবে সেগুলো লিখে রাখুন। সঙ্গে সঙ্গে লেখা সম্ভব না হলে দিনশেষে রাতে ঘুমানোর আগে ভাবুন আজ সারা দিন কোন কোন বিষয়গুলো আপনাকে কেন এবং কীভাবে চাপে ফেলেছে। কারণগুলো নোট করে রাখুন।

২. সম্ভব হলে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে এমন ঘটনাগুলো এড়িয়ে চলা। কোনো ব্যক্তি অথবা কোনো পরিবেশ যদি এর কারণ হয় তবে সেটাও এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। কর্মক্ষেত্র যদি মানসিক চাপের কারণ হয় তবে কর্মক্ষেত্রের পরিবর্তন আনা যেতে পারে।

৩. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে কার্যকর ব্যবস্থা হচ্ছে পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানো। পরিস্থিতি বদলানো সম্ভব না হলে, নিজের মধ্যে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন। কিছু কিছু সময় পরিস্থিতি এমন হয় যে, প্রতিকূলতাকে স্বীকার করে নেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না যেমন—কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা দুর্ঘটনা। এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতিকে স্বীকার করে নিয়ে মানসিক শান্তি অক্ষুণ্ন রাখা যায়।

৪. নিয়মিত ৬-৭ ঘণ্টা ঘুম এবং ৩০ মিনিট ব্যায়াম করলে মানসিক চাপ সামলানোর জন্য শরীর ও মন উভয়ই সমানতালে সাহায্য করবে। ভালো ঘুমের জন্য রাতে টিভি, মোবাইল, ল্যাপটপসহ সব ধরনের স্ক্রিন ব্যবহার সীমিত করুন। শোবার আগে রিল্যাক্সেশন মিউজিক শুনে মেডিটেশন করতে পারেন। শরীর সচল থাকলে এন্ডোরফিন হরমোন নিঃসৃত হয়, যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। সূর্যের আলো মস্তিষ্কে সেরেটোনিনের মাত্রা বাড়ায়। তাই ভোরে ঘুম থেকে উঠে সকালের রোদে ৩০-৪০ মিনিট হাঁটুন বা জগিং করুন।

৫. পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, বিশেষ করে পুষ্টিকর সকালের নাশতা আপনার শরীর ও মনকে সারা দিনের যাবতীয় চাপ সামলানোর উপযুক্ত করে তুলবে। তাই দৈনিক পুষ্টি ও বিশ্রাম নিশ্চিত করুন। সঠিক খাদ্যাভ্যাস পাশাপাশি চা-কফি ও কোমল পানীয় কম পান করা, ধূমপান না করা, নেশাজাতীয় দ্রব্য পরিহার করতে হবে।

৬. নিজের একান্ত সময় খুঁজে বের করা এবং জীবনকে উপভোগ করা খুব জরুরি। প্রতিদিন অন্তত ২০-৩০ মিনিট নিজের জন্য সময় রাখুন। এ সময়টা শুধুই আপনার। পছন্দের যে কোনো কাজ করুন এ সময়ে। ব্যায়াম করা, গান শোনা, বই পড়া, ছবি আঁকা কিংবা কিছুই না করে এক কাপ চা বা কফি হাতে বারান্দায় বসে থাকা যেতে পারে। মোটকথা যেসব কাজ করে আনন্দ পাওয়া যায় সেগুলোই করুন। একইভাবে সাপ্তাহিক বা দুই সপ্তাহে একবেলা সময় নিজের জন্য নির্দিষ্ট করুন। বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করা, কেনাকাটা বা ঘুরতে যাওয়া, বাইরে খেতে যাওয়া, সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা যেতে পারে এই বেলায়।- মারজান ইমু

এসএ/এমএএস/এমউএ/টিএ/পরিচয়

শেয়ার করুন