নিউইয়র্ক     সোমবার, ১৭ই জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৩রা আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একটি শক্তিশালী দেশকে বঙ্গোপসাগরে ঘাঁটি বানাতে দিচ্ছি না তাই সমস্যা করছে, বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৪ | ০৩:৩২ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৫ মে ২০২৪ | ০৩:৩২ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
একটি শক্তিশালী দেশকে বঙ্গোপসাগরে ঘাঁটি বানাতে দিচ্ছি না তাই সমস্যা করছে, বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে একটি শক্তিশালী দেশ ঘাঁটি বানাতে চায়। যা হতে দিচ্ছি না বলেই এখন কিছু সমস্যা হচ্ছে। এ সময় বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশে তিনি বলেন, যতই মুরুব্বি ধরুক, জ্বালাও-পোড়াও করলে রেহাই নেই।

গত বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে গ্যাস বিক্রির চুক্তিতে রাজি হইনি বলে শক্তিশালী দেশটি আমাদের সেই সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নেয়নি। গ্যাস বিক্রিতে রাজি হইনি বলে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় বসার মতো দৈন্যতায় আমরা কখনই ছিলাম না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমার যুদ্ধ ঘরে-বাইরে সব জায়গায়। ওই অবস্থায় আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে ছেড়ে দিলাম। চক্রান্ত এখনো আছে। পূর্ব তিমুরের মতো বাংলাদেশের একটি অংশ নিয়ে… তারপরে চট্টগ্রাম, মিয়ানমার এখানে একটা খ্রিস্টান দেশ বানাবে, বঙ্গোপসাগরে একটা ঘাঁটি করবে। তার কারণ বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরে প্রাচীনকাল থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য চলে। এ জায়গাটার ওপর অনেকেরই নজর। সেটা আমি হতে দিচ্ছি না। এটাও আমার একটা অপরাধ।

তিনি বলেন, যদি আমি বাংলাদেশে কারও এয়ার বেজ করতে দেই, ঘাঁটি করতে দেই তাহলে আমার কোনো অসুবিধা নাই। কোনো এক সাদা চামড়ারই প্রস্তাব। আমি একই জবাব দিয়েছি। আমি স্পষ্ট বলেছি আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে, আমরা যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি, দেশের অংশ ভাড়া দিয়ে বা কারও হাতে তুলে দিয়ে আমি ক্ষমতায় যেতে চাই না, ক্ষমতার দরকার নেই। যদি জনগণ চায় ক্ষমতায় আসব, না হলে আসব না। এই কথাগুলো বললাম, কারণ সবার জানা উচিত।

দেশটা যে উন্নতি হচ্ছে, এটাও কারো পছন্দ না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা যে খাদ্য উৎপাদন করি, খোদ এক বড় দেশ বলে ফেলল, এত খাদ্য উৎপাদনের দরকার কী? আমাদের তো যথেষ্ট আছে, আমরাতো দিতে পারি। আমি বললাম হ্যাঁ ওই আশায় আমি বসে থাকব? আমরা বলেছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলে গেছেন নিজের মাটি মানুষ দিয়ে দেশ গড়ব। আমরা সেটাই করব। নিজেদের মানুষের খাবার এখানেই যতটুকু পারি উৎপাদন করে খাদ্য নিরাপত্তা দেব। আমরা দিয়েছিও সেটা।

তিনি বলেন, আমরা যারা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আছি, আমাদের আরও সুসংগঠিত হয়ে মানুষের কাছে গিয়ে, মানুষকে এ চেতনায় ফিরিয়ে আনতে হবে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৪৪টা টেলিভিশনের মধ্যে প্রায় ৩৪টি চালু আছে। সবাই কথা বলে, টকশোতেও কথা বলে, সারা দিন সমালোচনা করে, এতগুলো সংবাদপত্র, এত কথা বলার পরেও বলে কথা বলতে দেওয়া হয় না। টেলিভিশনে সবাই যখন এইভাবে কথা বলে আমরাতো গলা টিপে ধরি না। কেউ বাধা দেয় না। যার যা খুশি বলে যাচ্ছে। তা সত্য-মিথ্যা যা হোক। ডিজিটাল বাংলাদেশে যে যার মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে সমালোচনা, মিথ্যা, অপবাদ দিচ্ছে। আর ভবিষ্যতে সমস্যা যেটা হবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করা, সেটা করা হচ্ছে, নজরদারিতে আনার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। শুধু আমরা না, উন্নত দেশগুলোও এ ব্যাপারে চিন্তিত। এআই মোকাবিলা করার প্রক্রিয়া খুঁজে দেখা হচ্ছে।

মুদ্রাস্ফীতি এখন সমস্যা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এটা শুধু বাংলাদেশ না, আমেরিকার অর্থনৈতিক রিপোর্ট দেখলাম সেখানেও মুদ্রাস্ফীতি বিরাট সমস্যা। অনেক দেশের রিজার্ভ কমে যাচ্ছে, আমাদেরও। কারণ করোনার সময় ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ, আমদানি-রপ্তানি সব বন্ধ ছিল, তখন বাহির থেকে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারেনি, তাই টাকাটা ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে, তাই আমাদের রিজার্ভটা বেড়ে গিয়েছিল। তারপর যখন সবকিছু চালু হলো তখন খরচ। খরচ হবেই।

১৪ দলীয় জোটের শীর্ষ নেত্রী শেখ হাসিনা জোটটিকে সক্রিয় ও ঐক্যবদ্ধ রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ভবিষ্যতের করণীয় ঠিক করতে আলোচনা হবে ১৪ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে।

সূচনা বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ১৪ দলের বৈঠক শুরু হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক-মুখপাত্র আমির হোসেন আমু এবং সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ জোটের শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন