নিউইয়র্ক     সোমবার, ১৭ই জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৩রা আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এমপি আনার হত্যাকাণ্ড নিয়ে মুখ খুললেন ‘মাস্টারমাইন্ড’ শাহিন

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৪ | ০১:৫১ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৫ মে ২০২৪ | ০১:৫১ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
এমপি আনার হত্যাকাণ্ড নিয়ে মুখ খুললেন ‘মাস্টারমাইন্ড’ শাহিন

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে তার বন্ধু আক্তারুজ্জামান শাহিনের নাম জানিয়েছে পুলিশ। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি দাবি করেছেন, বন্ধু হত্যায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে।

গত ২৩ মে বৃহস্পতিবার মোবাইল ফোনে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আক্তারুজ্জামান শাহিন বলেন, ‘আমাকে ফাঁসায় দেওয়া হয়েছে। জানতাম না, আর আমি ওখানে ছিলামও না। ইন্ডিয়াতে ছিলামও না। সো, আমি কারও সঙ্গে কথা বলব না, আমার আইনজীবীরাও বলেছে কারও সঙ্গে কথা না বলতে। মানুষ বাংলাদেশে অনেক কথাই বলে। যদি তাদের কাছে প্রমাণ থাকে, তাদের দেখাতে বলেন।’

তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে ছিলামও না। আমার বাসায় আমার বন্ধু (আনোরুল আজিম আনার) আমার কাছে চাবি চাইছিল। সে আমার সঙ্গে গেছিল। কয়েকবার ট্রিটমেন্টের জন্য গেছে। তারপর একবার যখন বলেছি যে, বাংলাদেশ পুলিশ আমার সঙ্গে কথা-টতা বলতেছে যে, আমার বন্ধু রেসপন্ড (সাড়া) হচ্ছে না, তখন আমি চলে আসছি এ দেশে। চলে এসে তাদের (পুলিশ) সঙ্গে কথা বলেছি।’

বন্ধু খুনের বিষয়ে মাস্টারমাইন্ড বলার বিষয়ে আক্তারুজ্জামান শাহিন বলেন, ‘আমাকে বলা হচ্ছে মাস্টারমাইন্ড। তো তারা (পুলিশ) আমাকে বলেছে কারও সঙ্গে কথা না বলতে। বাংলাদেশ সরকার বা পুলিশের কাছে কোনো ডকুমেন্ট থাকলে তারা এখানে দেক। প্রমাণ হলে সেটা হবে। আমি এর বাইরে আর কথা বলতে চাচ্ছি না।’

কলকাতায় যে ফ্ল্যাটে হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেটির ভাড়া করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আচ্ছা আমি যদি এখন ফ্ল্যাট ভাড়া নেই, আমি কি আমার ফ্ল্যাটে এই ধরনের কাজ করব? আমার ফ্ল্যাটেই আমি করব এটা? আপনাদের একটু সেন্স থাকা উচিত। আমি ফ্রেমড হইছি এবং এখানে আসছি। এই দেশে (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) আইনের প্রটেকশন আছে এবং আমার ল’ইয়ার বলেছে ফোন দিয়েছে তাই ধরেছি। এখন রাত অনেক।’

৫ কোটি টাকায় খুনের কথা উড়িয়ে দিয়ে শাহিন বলেন, ‘আমার পাসপোর্ট রেকর্ড দেখেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আমাকে বলা হচ্ছে আমি নাকি ৫ কোটি টাকা দিয়েছি। কীভাবে আমি ৫ কোটি টাকা দিয়েছি? কোথায় পেলাম আমি এই ৫ কোটি টাকা? এগুলা বললে আপনারা বলেন। আর আমার এগুলা শোনা ছাড়া আর কী করার আছে? ঘটনা কবে ঘটেছে, আমি তো পেপারে দেখেছি। আর আমি তো সে সময় বাংলাদেশে ছিলাম।’

তিনি বলেন, ‘আমার ড্রাইভার, আমি যদি অন্যায় করে থাকি আমার ড্রাইভার তো করে নাই। আমার গাড়ি, আমার বাসা, আমার সবকিছু নিয়ে চলে গেছে। এটা কোন ধরনের বিচার? আমি যদি অন্যায় করে থাকি তাহলে আমাকে ধরুক। তো, আমি তো ওই দেশে (বাংলাদেশ) বিচার পাব না। আমি আমেরিকার নাগরিক, আমেরিকাতে চলে এসেছি। কী করব?’

উল্লেখ্য, গত ১১ মে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। এরপর তার পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি।

ভারতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বরানগর থানার ১৭/৩ মণ্ডল পাড়া লেনের বাসিন্দা গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন আনার। গোপাল বিশ্বাস তার দীর্ঘদিনের পরিচিত। মূলত ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যান আনার। পরদিন ১৩ মে দুপুরে ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে বের হন এই সংসদ সদস্য। সন্ধ্যায় ফেরার কথা থাকলেও তিনি আর ফিরে আসেননি। পরে ১৮ মে বরাহনগর থানায় একটি নিখোঁজের অভিযোগ করেন গোপাল বিশ্বাস।

গতকাল বুধবার পশ্চিমবঙ্গের বিধাননগরের নিউটাউন এলাকায় সঞ্জিভা গার্ডেন থেকে নিউটাউনের একটি ফ্ল্যাট থেকে রক্তমাখা কাপড় উদ্ধার করে কলকাতা পুলিশ। এই ফ্ল্যাটেই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা তাদের।

গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা করেছেন এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। পরিকল্পিতভাবে খুন করার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে মামলাটি করেছেন তিনি। এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

শেয়ার করুন