নিউইয়র্ক     সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যুতে কি তাহলে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র মুখোমুখি?

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ | ০২:৪৮ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ | ০২:৪৮ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যুতে কি তাহলে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র মুখোমুখি?

বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন মনে করেন, পরিবর্তিত ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অ্যামেরিকার দৃষ্টিভঙ্গীও বদলেছে। তিনি ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘‘যেহেতু ইন্দোপ্যাসিফিকে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ অনেকটা বেড়েছে, সবক্ষেত্রে হয়তো সেটা ভারতের যে চাওয়া সেটার সঙ্গে মেলে না৷ বাংলাদেশের সঙ্গে একটা অর্থবহ সম্পর্ক তৈরি করতে যায় যুক্তরাষ্ট্র৷ সেটা আমার ধারণা, অনেকেরই ধারণা৷ সে কারণে তারা চায় এখানে একটি প্রোপার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক৷”

তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘‘এই নির্বাচনের ব্যাপারে ভারত এবং চীনের অবস্থান এক৷ অথচ ভারত এবং চীন কিন্তু পরস্পর বিপরীত৷ এক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভারতের অবস্থান মেনে নেয়া মানে চীনের অবস্থানটাও মেনে নেয়া৷ কিন্তু এই মুহূর্তে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একটা দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক চলছে, সেটা আমাদের মনে রাখতে হবে৷ কাজেই তারা তাদের স্বার্থ দেখবে, এজন্যই তারা নিজেদের একটা পদ্ধতি চাইবে, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ কিন্তু তারা মনে করছে, তাদের স্বার্থ ভারত যে অবস্থান নিয়েছে সেটা দিয়ে রক্ষিত হচ্ছে না৷”

ডয়চে ভেলে বাংলার ফেসবুক লাইভে যোগ দিয়েছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্য৷ তিস্তা নদীর পানিবণ্টন, সীমান্ত হত্যাসহ নানা বিষয়ে ভারত-বাংলাদেশের বিরোধ ইস্যুতে তিনি ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশের অনেকে মনে করেন, বড় দেশ হওয়ায় ভারত বাংলাদেশের ওপর ইনফ্লুয়েন্স খাটাচ্ছে৷ তবে এই সব বিষয়েরই লং টার্ম সলিউশন হয়ে যাবে৷ এটা নিয়ে খুব বেশি স্টাবর্ন হওয়ার কিছু নেই৷ এটা বিরোধী দলের জন্য পয়েন্ট হতে পারে৷ তবে এগুলো কয়েক বছর সময় লাগলেও শেষ পর্যন্ত সমাধান হয়ে যাবে৷”

এ বিষয়ে অবশ্য সম্পূর্ণ একমত নন বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব। তিনি মনে করেন, ভারতের সদিচ্ছার অভাবই এক্ষেত্রে মূল বাধা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তই পৃথিবীর একমাত্র সীমান্ত, যেখানে নিয়মিত গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘দাদাগিরিতে কোনো সমস্যা নেই, যদি দাদা তার রোলটা ঠিকমতো প্লে করে৷ বাংলাদেশের মানুষের চোখে, দাদা সে রোলটা প্লে করছে না৷”

তিস্তা ইস্যুতে তিনি বলেন, ”২০০৬ সালে এটা সমাধানের কাছাকাছি গিয়েছিল৷ তার মানে ১৫ বছর হয়ে গেছে৷ কোনো অগ্রগতি নাই, বরং পশ্চাদপসারণ হয়েছে৷ এগ্রিমেন্টের ড্রাফট এগ্রিড হয়ে যাওয়ার পর সেটা ডিপ ফ্রিজে রেখে দেয়া হয়েছে, কোনো কথাই নেই আর এ নিয়ে৷ এগুলোর কিন্তু প্রভাব পড়ে৷ তিস্তা নদীতে পানি কম আছে, আমরা সবাই জানি৷ প্রয়োজন অনেক বেশি৷ কিন্তু সেটা যে ভাগাভাগি করা যাবেই না, একটুও করা যাবে না, সেটা তো দাদাগিরি হলো না আসলে৷ সেটা নিগেটিভ দাদাগিরি হলো৷”

নতুন যে মেরুকরণের রাজনীতি বিশ্বজুড়ে চলছে, তাতে বাংলাদেশের এখনই সরাসরি কোনো পক্ষে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন না তৌহিদ হোসেন। এমনকি সরকার পরিবর্তন হলেও তারা চীনবিরোধী জোট কোয়াডে যোগ দেবে না বলে বিশ্লেষণ তার৷ তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ সরকার আরেকটু ভালোভাবে সামলাতে পারতো বলেও মনে করেন তিনি৷

শেয়ার করুন