বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, দেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভোটব্যাংক ভাবা আর ঠিক হবে না। গত ১৯ মে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বাংলাদেশ আইনজীবী ঐক্য পরিষদের ত্রিবার্ষিক জাতীয় সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন। রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশের পুনঃপ্রতিষ্ঠা চাই। কিন্তু তুচ্ছতাচ্ছিল্য বা অবহেলা যদি আমাদের সাথে করে, আমাদের যদি ভাবা হয় এরা তো ভোটব্যাংক, যাবে কোথায়—এই ভাবনাটা বোধ হয় প্রগতির রাজনীতি যাঁরা করছেন, তাঁদের ভাবাটা আর ঠিক হবে না।’
সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, দেবোত্তর সম্পত্তি আইন ও বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন এবং অর্পিত সম্পত্তি আইন, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বেশ কিছু বিষয় আওয়ামী লীগ সরকার গত নির্বাচনী ইশতেহারে বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বলে জানান রানা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, সেসব প্রতিশ্রুতি এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ‘বেকুব’ ভাবা ঠিক হবে না বলেও মন্তব্য করেন রানা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘এখনো বাংলাদেশে ৯ দশমিক ১ ভাগ বা দুই কোটি সংখ্যালঘু বাংলাদেশে আছে। এখনো ১২০টি সংসদীয় আসনের নিয়ামক শক্তি আমরাই।’
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির প্রয়াস গভীর শঙ্কায় লক্ষ করছেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের এই নেতা। রানা দাশগুপ্ত বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে, প্রতিক্রিয়াশীল মহল এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরিতে এ দেশের ধর্মীয়, জাতিগত সংখ্যালঘুদের টার্গেট করতে পারে। অনুষ্ঠানে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইনের প্রণয়ন, সংখ্যালঘু কমিশন গঠনসহ ১০ দফা দাবি তুলে ধরা হয় আইনজীবী ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে। এসব দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘কে হিন্দু, কে মুসলিম, এই ভেবে আমরা যুদ্ধ করি নাই।’
আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুনীল রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনায় বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এ সময় আরও বক্তব্য দেন আইনজীবী ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিভাস চন্দ্র বিশ্বাস, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নিম চন্দ্র ভৌমিক, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির, আইনজীবী প্রশান্ত অ্যালবার্ট বাড়ৈ প্রমুখ। সুত্র দৈনিক প্রথম আলো
এসএ/এমএএস/এমইউএ/টিএ/পরিচয়