নিউইয়র্ক     রবিবার, ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে ‘কোনো অবস্থাতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে না – আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৩ | ০১:১৩ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০৬ মে ২০২৩ | ০১:১৩ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
বাংলাদেশে ‘কোনো অবস্থাতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে না – আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘কোনো অবস্থাতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করবে না সরকার, প্রয়োজনে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে কিছু সংশোধন করা হবে। প্রত্যেক আইনের মধ্যেই যারা সত্য সাংবাদিকতা করেন, তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।’ বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উদযাপনের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ইউনেস্কো, আর্টিকেল নাইনটিন ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘শেপিং আ ফিউচার অব রাইটস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় গতকাল তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস, ইউনেস্কোর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুসান ভিজে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন, ‘এ আইন প্রণয়নের আগে এডিটরস কাউন্সিল, এটকো, সাংবাদিক সংগঠনসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করা হয়। এমনকি এ আলোচনার দ্বার সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। আইনটি বাস্তবায়নের প্রথম দিকে এর কিছু মিসইউজ ও অ্যাবিউজ হয়েছে—এটা আমি অস্বীকার করব না। তবে আমাদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে সেই মিসইউজ ও অ্যাবিউজ আগের তুলনায় অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। আমরা এটি আরো কমানোর লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে পরিশুদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সংবিধান উপহার দেন, তার ৩৯ অনুচ্ছেদে প্রত্যেক নাগরিকের বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদ ক্ষেত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দান করা হয়। এ স্বাধীনতাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তির অঙ্গীকার এবং আওয়ামী লীগের উদার গণতান্ত্রিক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।’ তবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার সমুন্নত রাখা এবং মানুষের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ছাড়া কোনো উপায় নেই বলে মন্তব্য করেন আলোচকরা।

ডিজিটাল আইন বাতিল করে নতুন আইন প্রণয়নের জোর দাবি জানান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ছাড়া কোনো সমাধান হবে না। কেননা এ আইনের যথেচ্ছ ব্যবহার ও অপব্যবহার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার পাশাপাশি মানুষের মৌলিক অধিকার হরণের হাতিয়ার হিসেবে প্রয়োগ হচ্ছে। শুধু সংশোধন করলে অথবা আইনটিকে ঢেলে সাজালেও জনস্বার্থের প্রতিফলন ঘটবে না। এমনকি জনগণের কাছেও গ্রহণযোগ্য হবে না। বরং এ আইনটি বাতিল করে নতুন সাইবার সিকিউরিটি আইন প্রণয়ন করা উচিত।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গুয়েন লুইস বলেন, ‘সাংবাদিকতায় জনস্বার্থকেই প্রাধান্য দেয়া হয়। তাই এর সুরক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে সত্য উদ্ঘাটনের মাধ্যমে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেয়া বাংলাদেশের সব গণমাধ্যমকর্মীকে আমি অভিনন্দন জানাই।’

প্যানেল আলোচনায় অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন বলেন, ‘লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ, পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর ও তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরার ক্ষমতা আছে কেবল গণমাধ্যমের। দেশে অনেকগুলো গণমাধ্যম থাকলেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিহ হয়ে যায় না। সেজন্য বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে অবশ্যই কাজ করতে হবে।’

সাথী / পরিচয়

শেয়ার করুন