নিউইয়র্ক     শুক্রবার, ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানের রিজার্ভে আছে মাত্র ৪ বিলিয়ন ডলার, বাংলাদেশের ৩৪ বিলিয়ন ডলার

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৩ | ১২:৪৪ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৩ | ১২:৪৬ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
পাকিস্তানের রিজার্ভে আছে মাত্র ৪ বিলিয়ন ডলার, বাংলাদেশের ৩৪ বিলিয়ন ডলার

পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৪ বিলিয়ন ডলারের সামান্য বেশি। ২০১৪ সালের পর এমন খারাপ অবস্থা আর হয়নি পাকিস্তানের। সম্প্রতি পাকিস্তানের কিছু ঋণ পরিশোধ করে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপরই রিজার্ভের এই করুণ অবস্থার কথা প্রকাশ করে ‘দ্য স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান’ (এসবিপি)। তুলনায় বাংলাদেশের রিজার্ভে রয়েছে ৩৪ বিলিয়ন ডলার।

গত ১২ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার এসবিপি এক বিবৃতিতে জানায়, তাদের কাছে এখন মাত্র ৪.৩ বিলিয়ন ডলার আছে রিজার্ভ হিসেবে। এছাড়া বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে আছে আরও ৫.৮ বিলিয়ন ডলার। সব মিলিয়ে ১০.১ বিলিয়ন ডলারের ফরেন রিজার্ভ রয়েছে দেশটির কাছে। এই বিপদ থেকে উদ্ধারে এখন পাকিস্তানকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে আইএমএফ-এর দিকে। সংস্থাটি ১.১ বিলিয়ন ডলার দেবে পাকিস্তানকে। এছাড়া যেসব দেশের সঙ্গে দারুণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে তাদের দিকেও আর্থিক সহায়তার জন্য তাকিয়ে আছে ইসলামাবাদ।
এরইমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে গিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ।

দেশটি থেকে এরইমধ্যে বিশাল ঋণ নিয়েছে পাকিস্তান। নতুন করে আরও এক বিলিয়ন ডলার চেয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। গত কয়েক বছর ধরেই পাকিস্তানের অর্থনীতি ধুঁকছে। তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে খাদ্য ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় দ্রুত ডলারের রিজার্ভ শেষ হয়ে যায় দেশটির। এরমধ্যে গত বছর ভয়াবহ বন্যায় দেশটির বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সম্পদ ধ্বংস হয়ে যায়। ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হন। মারা যান ১৭০০ জনেরও বেশি।

এমন অবস্থায় জেনেভায় আন্তর্জাতিক দাতা গোষ্ঠীর কাছে ১০ বিলিয়ন ডলার চায় পাকিস্তান। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাকিস্তানকে এখন নিজের অর্থনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমেই সমাধান খুঁজতে হবে। ইসলামাবাদ-ভিত্তিক অর্থনীতিবিদ সাকিব শেরানি বলেন, এখন থেকে পাকিস্তানকে প্রতি বছর ২০ বিলিয়ন ডলার করে ঋণ ফেরত দিতে হবে। ২০১৭ সালে বার্ষিক ঋণ ফেরতের পরিমাণ ছিল ৭ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু এ বছর তা ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। আগামী বছর এ সংখ্যা আরও বাড়বে। পাকিস্তান শুধু বাইরে থেকে ঋণ এনে এনে চলতে পারে না। দেশটির এখন সমাধান প্রয়োজন।

তিনি বলেন, সরকারের উচিত তার অর্থনৈতিক কৌশলের জন্য একটি পরিষ্কার রোডম্যাপ তৈরি করা। আমার কাছে যা মনে হয় তা হল, তারা এই অর্থনৈতিক সমস্যাটিকে রাজনৈতিক লেন্স থেকে দেখছে। তারা চাইছে আপাতত এই সংকট ঠেকিয়ে রাখতে যাতে পরবর্তী সরকারকে এসে এই অবস্থা সামাল দিতে হয়। পাকিস্তানে এ বছরের শেষের দিকে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।

ইসলামাবাদের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট পলিসি ইনস্টিটিউটের’ একজন সিনিয়র কর্মকর্তা সাজিদ আমিন বলেছেন, বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলো থেকে স্বল্পমেয়াদী পুনঃঅর্থায়ন এবং রোলওভার পাওয়া দেশের অর্থনৈতিক সমস্যার টেকসই সমাধান নয়। আমরা একটি চাপপূর্ণ পরিস্থিতিতে আছি। এখন হিসেব করে করে প্রতিটি ডলার খরচ হচ্ছে। পাকিস্তানের অনিশ্চিত অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বিশ্বব্যাংকও দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। গত বছরের জুনে সংস্থাটি ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অনুমান করেছিল। তবে চলতি অর্থবছরের জন্য সেটি ২ শতাংশে নামিয়ে এনেছে বিশ্ব ব্যাংক। এক রিপোর্টে সংস্থাটি বলেছে,পাকিস্তানে সাম্প্রতিক বন্যা এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। সুত্র আল-জাজিরা।

সুমি/পরিচয়

শেয়ার করুন