নিউইয়র্ক     সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নভেম্বরে ৩ দলের সঙ্গে বৈঠক করে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের উপ-সহকারী মন্ত্রী ফের ঢাকায়

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৩ | ০১:১৪ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১৩ মে ২০২৩ | ০১:১৪ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
নভেম্বরে ৩ দলের সঙ্গে বৈঠক করে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের উপ-সহকারী মন্ত্রী ফের ঢাকায়

৩ দিনের সফরে পুনরায় বাংলাদেশে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের উপ-সহকারী মন্ত্রী আফরিন আক্তার। ১১ মে বৃহস্পতিবার তিনি ঢাকায় পৌঁছানোর কথা। ১২ মে শুক্রবার থেকে ঢাকায় দু’দিনের ৬ষ্ঠ ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্সে অংশ নেয়াই তার এবারের সফরের মুখ্য উদ্দেশ্য। তবে ওই সম্মেলনের আগে-পরে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতি বিশেষত: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনটি সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য করার পরিবেশ পর্যালোচনাসহ উভয়ের অভিন্ন উদ্বেগ নিয়ে সরকারের প্রতিনিধি, নির্বাচনী স্টেকহোল্ডার ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক মতবিনিময় করবেন। তাছাড়া মিস আক্তার আগারগাঁওস্থ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর পরিদর্শন করবেন। তিনি গত নভেম্বরে সর্বশেষ বাংলাদেশ সফর করেন। তখন তার সফরের সবেচেয়ে আলোচিত কর্মসূচি ছিল সরকার ও বিরোধী পক্ষের ৩ নেতার সঙ্গে একত্রে বসে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আলোচনা। দেশের প্রধান ৩ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির প্রতিনিধির সঙ্গে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের গুরুত্ব নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছিল তাঁর। ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের আমন্ত্রণে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাসরুর মাওলা অংশ নিয়েছিলেন। সেই বৈঠকে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন কীভাবে আয়োজন করা যেতে পারে? সে সম্পর্কে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের উপ-সহকারী মন্ত্রী আফরিন আক্তার।

সেই সফরে তার অপর গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি ছিল বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সেই বৈঠকের পর আফরিন আক্তার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সবদলের অংশগ্রহণে বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এমন নির্বাচনে বাংলাদেশকে সর্বোতভাবে সহযোগিতা করবে বাইডেন প্রশাসন। মিস আফরিন আক্তারের নভেম্বরের সফরে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত দুই প্রতিরক্ষা চুক্তি এক্যুইজেশন অ্যান্ড ক্রস-সার্ভিসিং এগ্রিমেন্ট (আকসা) এবং জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্ট (জিসোমিয়া) নিয়েও আলোচনা হয়েছিল। ২০৩০ সালের মধ্যে সামরিক বাহিনীকে আধুনিকীকরণের অংশ হিসেবে উন্নত সরঞ্জাম বিক্রির জন্য যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি দু’টি সই করতে আগ্রহী। গত বছরের বছরের এপ্রিলে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ৮ম পার্টনারশিপ ডায়ালগে জিসোমিয়া চুক্তির খসড়ার পরিমার্জিত সংস্করণ বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করেন ওই ডায়ালগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেয়া স্টেট ডিপার্টমেন্টের আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড।

চলতি মাসে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ পার্টনারশিপ ডায়ালগেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ওই ডায়ালগে মার্কিন প্রতিনিধি দলে মিজ আফরিন আক্তারও ছিলেন। বৈঠক সূত্র জানিয়েছে আফরিনসহ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও জনগণের বাকস্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেছেন। মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতিতে র‌্যাব’র ওপর বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা নিয়েও কথা হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ওয়াশিংটনের নবম পার্টনারশিপ ডায়ালগে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের যৌক্তিকতা যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছে বলে জানিয়েছেন সেগুনবাগিচা। যদিও স্পর্শকাতর ওই ইস্যুতে দুই পক্ষই নিজ নিজ যুক্তি এবং ব্যাখ্যায় অনড় ছিল। স্টেট ডিপার্টমেন্টের তথ্য মতে, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া ব্যুরোর উপ-সহকারী মন্ত্রী আফরিন আক্তার বাংলাদেশ ছাড়াও নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান এবং মালদ্বীপ দেখভাল করেন। পাশাপাশি তিনি বাইডেন প্রশাসনের নিরাপত্তা ও ট্রান্সন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স দেখেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী মন্ত্রী ডন লু’র সিনিয়র এডভাইজার হিসেবে কাজ করেছেন। এসব দায়িত্বে আসার আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেনের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন।

বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসাইনমেন্ট করেছেন তিনি। কাজ করেছেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের পাকিস্তান অ্যাফেয়ার্স অফিস, পলিটিক্যাল-মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো, মার্কিন দূতাবাস বেইজিং এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলে। হার্ভার্ড কেনেডি স্কুল অব গভর্নমেন্ট থেকে পাবলিক পলিসিতে স্নাতোকোত্তর আফরিন আক্তার একজন ফুলব্রাইট স্কলার এবং প্রেসিডেন্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট ফেলোও বটে। সুত্র : মানবজমিন

সাথী/পরিচয়

শেয়ার করুন