নিউইয়র্ক     রবিবার, ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সাত বছরে বাংলাদেশের ৯৪ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত

বাংলাদেশ ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১১:৩৪ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৩ | ০১:৪৫ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সাত বছরে বাংলাদেশের ৯৪ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত

বাংলাদেশের ৫৮ জেলায় মৌসুমি, আকস্মিক বন্যা, নদীভাঙন, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও ভূমিধসসহ বিভিন্ন দুর্যোগে ১ হাজার ৫৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৯৪ লাখ মানুষ। এতে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ৪ হাজার ১২০ মিলিয়ন ডলার। ২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সাত বছরের বড় বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেশের ৪৫টি এনজিওর নেটওয়ার্ক স্টার্ট ফান্ড বাংলাদেশের (এসএফবি) সমীক্ষায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

‘জলবায়ু বিপর্যয়ের বহুমুখী বিশ্লেষণ, আর্থিক প্রবাহ বিশ্লেষণ এবং বন্যাপ্রবণ জেলাগুলোতে পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থার বিশ্লেষণ’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে প্রকাশ করা হয়। গবেষণায় কালবৈশাখী, শৈত্যপ্রবাহ ও শিলাবৃষ্টির মতো অন্য দুর্যোগগুলোও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, মাল্টি হ্যাজার্ড রিস্ক অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি অ্যাসেসমেন্ট মডেলিং ও ম্যাপিং, ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স কো-অর্ডিনেশন সেন্টার, সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিস, পূর্বাভাস-ভিত্তিক সতর্কতা, বিশ্লেষণ ও প্রতিক্রিয়া নেটওয়ার্কসহ একাধিক উত্স থেকে গবেষণার জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় করা এসএফবির সমীক্ষায় বলা হয়েছে, একই সময়ে ১৫টি বড় দুর্যোগে ৪ কোটি ২০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সহায়তা পেয়েছে ১০৪ মিলিয়ন ডলার। প্রতিবছর ২৭ লাখ ১০ হাজার পরিবারের ১ কোটি ২১ লাখ মানুষের ওপর বর্ষার বন্যা, আকস্মিক বন্যা, নদীভাঙন, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিধস ও ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন জলবায়ু সংক্রান্ত দুর্যোগের প্রভাব পড়তে পারে।

সমীক্ষায় ধারণা করা হয়েছে, ২০২১-২০২৫ সাল পর্যন্ত ৬৪টি জেলার ১৮.৩৩ মিলিয়ন মানুষ দুর্যোগপূর্ণ স্থানে বসবাস করবে। যার মধ্যে প্রতি হাজারে ৬৬০ জন দুর্যোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছে। এই সময়ে বার্ষিক ৩৩৭.৯৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। সমীক্ষায় দেখা যায়, উত্তরাঞ্চলের ৪ জেলা- কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ ও জামালপুর বন্যা এবং নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। দক্ষিণের ৪ জেলা- সাতক্ষীরা, খুলনা, বরগুনা ও পটুয়াখালী ঘূর্ণিঝড় ও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে। সেখানে ২৭টি জেলা দুর্যোগের কবলে পড়বে।

স্টার্ট নেটওয়ার্কের প্রোগ্রামের কো-অর্ডিনেটর শফিউল আলম বলেন, গবেষণাটিতে নদীর অববাহিকা ও চরাঞ্চলে বসবাসরত দরিদ্র এবং অতিদরিদ্র মানুষের আয়-ব্যয়, দুর্যোগ, ক্ষয়ক্ষতি ও খাপখাইয়ে নেওয়ার প্রচলিত কৌশল চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষ দুর্যোগে বার্ষিক ১৮ হাজার ২২৩ টাকা এবং নদীর অববাহিকাগুলোয় বসবাসরত মানুষ বার্ষিক ১১ হাজার ৪৭২ টাকার ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়।

তিনি আরও বলেন, এই দুর্যোগগুলোতে মানবিক সাড়াদানে প্রাপ্ত তহবিলের প্রায় ৬৫ শতাংশ পুল ফান্ড, প্রাইভেট ফান্ড ও ইনস্টিটিউশনাল ফান্ড থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। যার অধিকাংশই আন্তর্জাতিক সংস্থা ও ইউএন এজেন্সির। ট্রাস্ট ফান্ড বাংলাদেশ এসব তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দুর্যোগের প্রতিবেদন তৈরি করছে। এই মডেলের ভিত্তিতে দুর্যোগের আগে ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থায়ন করবে বলেও জানান তিনি।-সুত্র প্রতিদিনের বাংলাদেশ

শেয়ার করুন