ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রবল বর্ষণে গত দুই দিনে অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ৪০ বছরে এমন বৃষ্টি দেখেনি দিল্লিবাসী। আগামী দু-একদিন আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। রাস্তাঘাট শুক্রবার থেকে জলমগ্ন ছিল। শনিবারও সারাদিন দিল্লিতে টানা বৃষ্টি হয়েছে। মুষলধারে বৃষ্টির কারণে এক দিনেই শহরের ১৫টি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ইন্ডিয়ান মেট্রোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট (আইএমডি) দিল্লি, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, পাঞ্জাব এবং জম্মু ও কাশ্মীরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। আইএমডি বলেছে উত্তর ভারতে পশ্চিমী উত্তেজনা বিরাজ করছে, যার ফলে গতকাল দিল্লি সহ বৃষ্টির তীব্র স্পেল হয়েছে যা এই মৌসুমের প্রথম ভারী বৃষ্টির সম্মুখীন হয়েছে।
জলাবদ্ধতার কারণে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। শহরে ২৪ ঘন্টায় ১৫৩ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা ১৯৮২ সাল থেকে জুলাই মাসে এক দিনে সর্বোচ্চ। ৪০ বছরের নজির ভেঙে তুমুল বৃষ্টিতে ভেসে গেছে রাজধানী।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে দিল্লিতে বৃষ্টি শুরু হয়। সারারাত বৃষ্টি হওয়ার পর শনিবার সকালেও পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। ফলে সকাল থেকেই রাজধানীর অধিকাংশ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। শনিবার বৃষ্টি থামার পরিবর্তে তা আরও তীব্র হয়। শহরের নানা প্রান্তে ১৫টি বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। কারোল বাগ এলাকার টিবিয়া কলেজ সোসাইটিতে একটি বড় দেয়াল ধসে পড়ায় তার নিচে চাপা এক বয়স্ক নারীর মৃত্যু হয়। রঞ্জিৎ কউর নামের ওই নারীর বয়স ৫৮, তিনি ওই এলাকারই বাসিন্দা।
এদিকে দেশবন্ধু কলেজের পেছন দিকের দেওয়ালও শনিবারের বৃষ্টিতে ধসে গেছে। ওই দেওয়ালের পাশে অনেক গাড়ি দাঁড় করানো ছিল। ১৫টি বিলাসবহুল গাড়ি এবং ১০ থেকে ১২টি বাইক ও স্কুটার দেয়ালের নিচে চাপা পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রাস্তায় রাস্তায় পানি জমে থাকার কারণে শনিবার সারাদিন দিল্লিতে তীব্র যানজট দেখা দেয়। কোথাও কোমর পর্যন্ত পানি, কোথাও হাঁটু সমান পানি জমে ছিল। সামাজিক মাধ্যমে বেশ কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এসব ভিডিওতে দেখা গেছে, পানির মধ্যেই কোনও রকমে যাতায়াত করছে সাধারণ মানুষ। পানির কারণে রাস্তায় আটকে গেছে গাড়ি। কোনও কোনও আন্ডারপাসের নিচে পানির পরিমাণ এত বেশি ছিল যে, পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে সেই রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে সরকারি কর্মীদের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকারি কর্মীদের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।
আবহাওয়া অফিস শনিবার জানিয়েছে, আগামী দুই থেকে তিনদিন দিল্লিসহ উত্তর ভারতের অধিকাংশ এলাকায় ভারী বৃষ্টি হবে। তবে বৃষ্টির কারণে ভ্যাপসা গরমের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে রাজধানী। গত দু’দিনে তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে।
