নিউইয়র্ক     শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেঙ্গালুরুতে আজানের সময় ‘হনুমানের ভজন’ বাজানোয় দোকানিকে পেটাল হিন্দু-মুসলমান মিলে

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৪ | ০৬:১৫ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৪ | ০৬:১৫ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
বেঙ্গালুরুতে আজানের সময় ‘হনুমানের ভজন’ বাজানোয় দোকানিকে পেটাল হিন্দু-মুসলমান মিলে

আজানের সময় ‘হনুমানের ভজন বা প্রশংসাগীতি’ বাজানোয় দোকানমালিককে হিন্দু-মুসলমান মিলে মারধর করেছে। মূলত মাগরিবের আজানের সময় লাউডস্পিকারে তুলসী দাস রচিত ‘হনুমান চালিশা’ বাজাচ্ছিলেন তিনি। এই ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে দুজন মুসলিম ও অপরজন হিন্দু।

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে। এ নিয়ে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যটিতে। আজ মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

এনডিটিভি জানিয়েছে, আজানের সময় গান বাজানোর অভিযোগে বেঙ্গালুরুর এক দোকানদারকে লাঞ্ছিত করা নিয়ে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে পড়েছে। দোকানদার দাবি করেছেন, হামলার সময় তিনি মধ্য বেঙ্গালুরুতে তাঁর দোকানে হনুমান চালিসা বাজাচ্ছিলেন।

তবে পুলিশ বলেছে, তারা এই অভিযোগের সমর্থনে যথেষ্ট প্রমাণ পায়নি এবং অভিযোগে এটি উল্লেখও করা হয়নি। পুলিশ আরও স্পষ্ট করেছে, মারামারির ঘটনাটি সাম্প্রদায়িক কোনো বিষয় ছিল না।

একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অভিযোগে হনুমান চালিসার কোনো উল্লেখ নেই। যেসব ব্যক্তি দোকানদারকে লাঞ্ছিত করেছেন তাঁদের মধ্যে হিন্দু ও মুসলিম উভয়ই রয়েছেন।

এফআইআর অনুসারে, গত রোববার সন্ধ্যায় সিদ্দনাগল্লিতে গান বাজানো নিয়ে দোকানদার মুকেশ এবং কলোনির কিছু লোকের মধ্যে লড়াই শুরু হয়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, জোরে জোরে ভজন বাজানো নিয়ে একদল লোক দোকানদারের মুখোমুখি হয়। একপর্যায়ে একজন ব্যক্তি মুকেশের কলার চেপে ধরলে তর্ক শিগগিরই হিংসাত্মক রূপ নেয়।

পরে ক্ষুব্ধ লোকেরা তাঁকে দোকান থেকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে নিয়ে মারধর করে। হামলার পর লোকেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং দোকানদার রক্তাক্ত মুখ নিয়ে দোকানে ফিরে আসেন।

ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইকে মুকেশ বলেন, ‘আমি হনুমান ভজন বাজাচ্ছিলাম। চার থেকে পাঁচজন লোক এসে বলল আজানের সময় হয়ে গেছে এবং গান বাজালে আমাকে মারধর করার হুমকি দেয়। তারা আমাকে মারধর করে এবং আবারও হুমকি দেয়, তারা আমাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করবে।’

হামলার দায়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত এখনো চলছে। তিন অভিযুক্তের মধ্যে দুজন মুসলিম এবং অন্যজন হিন্দু বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

এদিকে কর্ণাটক বিজেপি সভাপতি বিওয়াই বিজয়েন্দ্র রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সিদ্দারামাইয়া নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারকে আক্রমণ করেছেন এবং পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

হিন্দু ও হিন্দুদের প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলার জন্য মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, সিদ্দারামাইয়ার ‘তুষ্টির রাজনীতি’ বর্বরদের রাজ্যে তাণ্ডব চালাতে উৎসাহিত করেছে।

এ ছাড়া বিজেপির লোকসভা প্রার্থী তেজস্বী সূর্য আগামীকাল (বুধবার) দুপুরে মুকেশের দোকানে হনুমান চালিসা বাজানোর কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

এই নেতা ‘হনুমান চালিসা’ ওই এলাকার ঘরে ঘরে হনুমান চালিসা বাজাতে বিজেপি কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। যদিও বিজেপির এই কর্মসূচির অনুমতি দিতে পুলিশ অস্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে – এনডিটিভি।

শেয়ার করুন