নিউইয়র্ক     শুক্রবার, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১১ মাসে বাংলাদেশের প্রবাসী আয় ২ হাজার কোটি ডলার-বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৩ | ১১:৪৪ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২৩ জুন ২০২৩ | ১১:৪৪ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
১১ মাসে বাংলাদেশের প্রবাসী আয় ২ হাজার কোটি ডলার-বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন

চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) দেশে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে ১ হাজার ৯৪১ কোটি ডলার। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৩২৭ কোটি ২৫ লাখ ডলার পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসীরা। আগের বছরের একই সময়ে প্রবাসীরা ১ হাজার ৯১৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিল। অর্থাৎ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবাসী আয় বেশি এসেছে ২২ কোটি ডলার।

এছাড়া চলতি জুন মাসের প্রথম নয় দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৫৭ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। বর্তমানে প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রতি ডলারে দাম পাচ্ছেন ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম এগারো মাসে (জুলাই-মে) প্রবাসীরা ১ হাজার ৯৪১ কোটি ডলার পাঠিয়েছে। এর মধ্যে জুলাই মাসে এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার ও আগস্টে এসেছিল ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার।

এরপরের মাস সেপ্টেম্বর থেকে টানা পাঁচ মাস দেড় বিলিয়ন ডলারের ঘরেই থেমে যায়। সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার, অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে প্রায় ১৭০ কোটি ডলার বা ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। আর জানুয়ারি মাসে আসে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি ডলার, মার্চে ২০২ কোটি ডলার, এপ্রিলে ১৬৮ কোটি ডলার এবং মে মাসে ১৬৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠায় প্রবাসীরা।

এদিকে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বা বিএফআইইউ। তবে সামনে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা রয়েছে। এ কারণে এ সময় রেমিট্যান্স বেশি পরিমাণ আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। এছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।

জানা গেছে, রেমিট্যান্স বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। সর্বশেষ সেবার বিনিময়ে দেশে রেমিট্যান্স আয় আনতে ফরম সি পূরণ করার শর্ত শিথিল করেছে। পাশাপাশি সেবা খাতের উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের ঘোষণা ছাড়াই ২০ হাজার ডলার বা সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া গত ৩১ মে রেমিট্যান্স-রপ্তানি আয়ে ফের ডলারের দাম বাড়িয়ে দেয় ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে জড়িত ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস এসোসিয়েশনের (বাফেদা) নেতারা। এর ফলে এখন প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রতি ডলারে দাম পাবেন ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা। আর রপ্তানিকারকরা রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের দাম পাবেন ১০৭ টাকা। এর আগে প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম ছিল ১০৮ টাকা এবং রপ্তানি আয়ে ছিল ১০৬ টাকা।

এদিকে গত বছরের মার্চ থেকে দেশে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এ অবস্থা তৈরি হয়। সংকট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণ করত বাংলাদেশ ব্যাংক।

তবে এতে সংকট কমার পরিবর্তে আরো বেড়ে যায়। পরে গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। দায়িত্ব দেয়া হয় এবিবি ও বাফেদার ওপর। এরপর থেকে এই দুই সংগঠন মিলে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় এবং আমদানি দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে।

শেয়ার করুন