নিউইয়র্ক     রবিবার, ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুইডেনে কেন বার বার কোরআন পোড়ানো হয়

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৩ | ০৬:৫৩ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৩ | ০৬:৫৩ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
সুইডেনে কেন বার বার কোরআন পোড়ানো হয়

সুইডিশ রাজধানী স্টকহোমের প্রধান মসজিদের সামনে পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে প্রকাশ্যে কোরআন শরিফে যিনি আগুন দিলেন তিনি এক ইরাকি বংশোদ্ভূত ব্যক্তি। সালওয়ান মোমিকা পাঁচ বছর আগে অভিবাসী হিসেবে সুইডেনে আসেন এবং সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন এখন তার সুইডিশ পাসপোর্ট রয়েছে। তিনি নিজেকে একজন নাস্তিক বলে দাবি করেন।

তার বক্তব্য : পশ্চিমা সমাজে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার এবং নারী অধিকারের মতো বিষয়গুলোর সাথে কোরআন শরিফ সাংঘর্ষিক এবং তাই এটা নিষিদ্ধ করা উচিত। কিন্তু সুইডেনে প্রকাশ্যে কোরআনের অবমাননার কাজটি তিনিই প্রথম করেননি।

এরও আগেও বেশ কয়েকবার সুইডেনে কোরআন পোড়ানো হয়েছে। গত এপ্রিল মাসে মালমো শহরে স্ট্রাম কুর্স নামের একটি কট্টর ডানপন্থী সংগঠন কোরআন শরিফ পোড়ায় এবং এর জেরে সে দেশে ব্যাপক বিক্ষোভ চলে। স্ট্রাম কুর্স অভিবাসন-বিরোধী ও ইসলাম-বিদ্বেষী বলে পরিচিত এবং সংগঠনটির নেতৃত্বে রয়েছেন রাসমুস পালুদান নামের একজন উগ্রপন্থী। চলতি বছর জানুয়ারিতে এবং ২০২০ সালেও সুইডেনে একই রকম ঘটনা ঘটেছে।

ডানপন্থার উত্থান

সুইডিশদের সাথে ইসলামের প্রথম পরিচয় হয় ১৬শ-১৭শ শতকে, যখন দেশটি সামরিক শক্তি অর্জন করছিল। সুইডিশ সাম্রাজ্যের প্রসারের সাথে সাথে তার ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিও চরম আকার ধারণ করে। সুইডিশরা যদিও মূলত ক্যাথলিক ছিলেন, কিন্তু ১৬শ শতকে দেশটি একটি লুথেরান প্রটেস্টান্ট দেশে পরিণত হয়। ১৬৬৫ সালে সুইডিশরা তার পিতৃপুরুষের ধর্মমতকে বেআইনি ঘোষণা করেন।

সে সময় ক্যাথলিক ও মুসলমানদের “প্রকৃত খ্রিস্টান ধর্মের” শত্রু হিসেবে দেখা হতো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সাথে সাথে সুইডেনে উদারনৈতিক চেতনার বিকাশ ঘটে। দেশটি পরিচালিত হয় ধর্মনিরপেক্ষ আইনের আওতায়। কিন্তু বর্তমান সময়ে সুইডিশদের মনোভাবে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটছে বলে মনে করছেন সুইডেনের ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ওমর মুস্তাফা।

তিনি বলছেন, সুইডেনে ইসলাম বিদ্বেষ ক্রমশই বাড়ছে। আর সেটার বহি:প্রকাশ শুধু ইন্টারনেটে নয়, বাস্তবে মুসলমানদের জীবনে প্রতিনিয়ত তা ঘটছে। কোরআন পোড়ানোর সর্বশেষ ঘটনার পর সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি নানা ধরনের বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ডের বিবরণ দিয়েছেন।

এর মধ্যে রয়েছে : রাস্তাঘাটে মুসলমান নারীদের হেনস্থা, মুসলিমদের বাড়িঘরে আগুন দেয়া এবং মসজিদের ওপর চোরা হামলার ঘটনা। সুইডেনে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন সাংবাদিক তাসনীম খলিল। সুইডিশ সমাজের মূল ধারার সঙ্গে তার পরিচয় গভীর। তিনি মনে করেন, এর পেছনে কাজ করছে রাজনীতি। পুরো ইউরোপ জুড়ে যে উগ্র ডানপন্থী মতবাদের উত্থান ঘটছে, তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে সুইডেনেও।

তিনি ব্যাখ্যা করছেন, সুইডেনের বর্তমান সরকার যে একক বড় দলের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় রয়েছে, সেই সুইডেন ডেমোক্র্যাট পার্টি গত নির্বাচনে ২০% ভোট পেয়েছে। ৩৪৯ আসনের সংসদে তারা পেয়েছে ৭২টি সিট। সুইডেন ডেমোক্র্যাট পার্টি মূলত উগ্র ডানপন্থী দল যারা এক সময় নাৎসি ধ্যানধারণায় বিশ্বাস করতো। মাত্রা কম হলেও এরা এখনও বর্ণবাদী, এবং মাইগ্র্যান্ট-বিরোধী।

“ফলে যেসব কট্টর ডানপন্থী দলকে একসময় ‘ফ্রিঞ্জ’ বা প্রান্তিক গোষ্ঠী বলে মনে করা হতো তারাই এখন রাজনীতির ময়দানে প্রধান শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে,” বলছেন তিনি। এসব ডানপন্থী দল পরিকল্পিতভাবে সুইডিশ সমাজে যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা ‘ট্যাবু’ বা নিষিদ্ধ, তারা সেটা ভাঙতে চায়।

তাসনীম খলিল বিষয়টা ব্যাখ্যা করছেন এভাবে: জাতিগত বা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সমস্যার সমালোচনা করা সুইডেনের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ভীষণ অপছন্দ। তারা মনে করেন, এসব লোক যুদ্ধপীড়িত দেশ থেকে এসেছে এবং এরা দুর্বল। তাই শুধু শুধু এদের খোঁচানো রুচিসম্মত কাজ নয়।

“কিন্তু সুইডেনের সংবিধানে মত প্রকাশের স্বাধীনতার যে গ্যারান্টি রয়েছে কট্টর ডানপন্থী দলগুলো তাকে ব্যবহার করে সেই ট্যাবুকে এখন ভেঙে দিতে চাইছে এবং সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ চালানোর কাজে মত প্রকাশের সাংবিধানিক অধিকারকে ব্যবহার করছে,” বলছেন তিনি, “আর সেজন্যই আমরা কোরান পোড়ানোর মতো ঘটনাগুলো বেশি বেশি দেখতে পাচ্ছি।“

“মুসলমানরা এখানে জনসংখ্যার খুব একটা বড় অংশ নয়। কিন্তু তাদের উসকানি দেয়া সহজ। আর সামান্য উসকানিতেই সারা বিশ্বের মুসলমানরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এবং নানা রকম ঘটনা ঘটান। আর সেই কাজটাই উগ্র ডানপন্থী শক্তিগুলো সুপরিকল্পিতভাবে করছে, যাতে মুসলমানদের ব্যাপারে সুইডেনের বৃহত্তর সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন ঘটে।“

অভিবাসী-বিদ্বেষ এবং ইসলাম-বিদ্বেষ

ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস এবং সুইডেনে ইসলাম বিদ্বেষ নিয়ে গবেষণা চালিয়েছে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া। এর একজন গবেষক আবদেলকাদের এনজি দেখিয়েছেন, নব্বইয়ের দশকের গোড়া থেকে মুসলিমদের ব্যাপারে সুইডিশদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ২০১৪ সালে এক জরিপে দেখা যায় ৩৫% উত্তরদাতা মনে করেন ইসলাম ইউরোপীয় জীবনযাত্রার বিরুদ্ধে একটা হুমকি। ২০১৬ সালে আরেকটি জরিপে দেখা গেছে, ৩৫% সুইডিশ মুসলমানদের ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেন, এবং ৫৭% মনে করেন শরণার্থীরা সুইডেনের জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে হুমকি।

আর এই ন্যারেটিভকেই কাজে লাগাচ্ছে উগ্র ডানপন্থী দলগুলো।

শুধু সুইডেন না, বিশ্বজুড়েই ইসলাম-বিদ্বেষ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে বার্কলে পলিটিক্যিাল রিভিউতে এক নিবন্ধে লিখছেন জুডি সাফেইন।

“বিশেষ করে সিরিয়া এবং ইরাকের মতো দেশের মুসলিমরা যারা নিজ দেশে যুদ্ধাপরাধ এবং আর্থিক সংকটের শিকার হয়েছেন। বিভিন্ন দেশে কট্টর জাতীয়তাবাদী মনোভাবের সাথে যুক্ত হয়েছে ‘জেনোফোবিয়া’ বা বিদেশিদের সম্পর্কে আতঙ্ক। মানুষ নিজের সাংস্কৃতিক পরিচয়, জীবিকা এবং এমনকি নিরাপত্তা হারানোর ভয়ে এখন ‘অন্যদের’ সাহায্য করতে অস্বীকার করছে।“

“এটা কোন আশ্চর্যের বিষয় নয় যে সুইডেনের ঘটনাও একই রকম,” লিখছেন তিনি।

ডেনমার্ক ও সুইডেনের দ্বৈত নাগরিক উগ্র ডানপন্থী নেতা রাসমুস পালুদান

শরণার্থী কিংবা অভিবাসীদের প্রতি মনোভাব বদলে যাওয়ার আরেকটি দিক উল্লেখ করেছেন জুডি সাফেইন তার ঐ নিবন্ধে।

রাশিয়ার অভিযানের পর ইউক্রেন থেকে আসা শরণার্থীদের সাথে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা শরণার্থীদের তুলনা করে তিনি লিখেছেন, সুইডেনের সংবাদমাধ্যম এবং রাজনৈতিক নেতারা বারবার করে উল্লেখ করেন, ইউক্রেনীয় শরণার্থীরা “সিরিয়া থেকে আসা শরণার্থী নয়, এরা ইউক্রেন থেকে আসা শরণার্থী … এরা খ্রিস্টান এবং এরা শ্বেতাঙ্গ।”

একারণে ইউরোপে অ-খ্রিস্টান এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের প্রতি ঘৃণাসূচক অপরাধ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।

 

চ্যালেঞ্জের মুখে মূলধারার দৃষ্টিভঙ্গি

কিন্তু বার বার করে কোরআন পোড়ানো কিংবা অন্য কোনভাবে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার প্রচেষ্টা সুইডিশ সমাজের মূলধারার আরেকটি দিককে সামনে তুলে এনেছে বলে মনে করছেন সাংবাদিক তাসলীম খলিল।

তিনি বলছেন, বৃহত্তর সুইডিশ সমাজ সংখ্যালঘুদের সমালোচনা না করলেও তাদের ব্যাপারে, তার ভাষায়, “সফট বিগট্রি অফ লো এক্সপেকটেশন” কাজ করে। অর্থাৎ সুবিধা-বঞ্চিত গোষ্ঠীর সদস্যদের কাছ থেকে খুব একটা কিছু আশা করা যায় না, এমন এক দৃষ্টিভঙ্গি। এটিও এক ধরনের বর্ণবিদ্বেষ।

তিনি বলছেন, এই বিদ্বেষের ফলেই সুইডিশদের অন্তত একাংশ মনে করেন ধর্মের ব্যাপারে যে ধরনের সংযত প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত, সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলো সেভাবে তা দেখাতে পারে না। আর এটাই কট্টর ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলিকে কোরআন পোড়ানোর ব্যাপারে উৎসাহী করে তোলে বলে তিনি মনে করেন।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বনাম সহনশীলতা

ইরাকি বংশোদ্ভূত সালওয়ান মোমিকা কিন্তু হঠাৎ করে কোরআন পোড়ানোর পরিকল্পনা করেননি। মসজিদের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর জন্য তিনি অনেক আগে সুইডিশ কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ অনুমতি না দেয়ায় বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায় এবং এ নিয়ে তিন মাস ধরে মামলা চলে। শেষ পর্যন্ত আদালত তাকে অনুমতি দিয়েছিল।

কারণ সুইডিশ সংবিধান অনুযায়ী এধরনের বিক্ষোভ করার অধিকার তার রয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে মুসলিম বিশ্বে যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তাতে সুইডিশ সরকার বেশ হতচকিত হয়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত ‘চরম ইসলাম-বিদ্বেষী’ আখ্যা দিয়ে সালওয়ান মোমিকার কঠোর সমালোচনা করে।

কিন্তু এই ঘটনার পর বাক-স্বাধীনতার সীমা নিয়ে সুইডেনে শুরু হয়েছে ব্যাপক বিতর্ক।

সুইডিশ পুলিশ এখন বলছে, শুধু কোরআন না, তাওরাত এবং বাইবেল পোড়াতে চায় এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে বিক্ষোভের জন্য তারা নতুন আবেদনপত্র পেয়েছে।

সুইডেনের কিছু উদারপন্থী ভাষ্যকারও এখন মনে করছেন যে এধরনের বিক্ষোভকে ঘৃণাসূচক কাজ হিসেবে গণ্য করা উচিত। কারণ কোন নির্দিষ্ট জাতিগোষ্ঠীকে লক্ষ্য এসব করা হচ্ছে, যা সুইডিশ আইনে নিষিদ্ধ।

অন্যদিকে, সুইডেনের ভেতরে অনেকেই বলছেন যে ধর্মের সমালোচনা করা, এমনকি সেটি যদি ঐ ধর্মবিশ্বাসীদের কাছে আপত্তিকর বলেও মনে হয়, তাহলেও তার অনুমতি দেয়া উচিত।

পাশাপাশি তারা বলছেন, ব্লাসফেমি আইন ফিরিয়ে আনার জন্য সুইডেনের ওপর যে চাপ দেয়া হচ্ছে তাও প্রতিরোধ করা উচিত। ধর্মনিরপেক্ষ সুইডেনে কয়েক দশক আগে আইনটি বাতিল করা হয়েছিল।

সুইডেনের নেটো স্বপ্ন

স্টকহোমে ছ’মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় নেটো জোটে সুইডেনের সদস্যপদ পাওয়ার আশা আরেকবার ধাক্কা খেতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা আর যে সময়ে এই ঘটনা ঘটেছে তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

ইউক্রেনে রুশ অভিযানের পর সামরিক জোটনিরপেক্ষতার দীর্ঘদিনের নীতি বিসর্জন দিয়ে সুইডেন এবং ফিনল্যান্ড গত বছর নেটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছিল।

সদস্যপদ পাওয়ার জন্য নেটোর সব সদস্য রাষ্ট্রের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। কিন্তু তুরস্ক ও হাঙ্গেরি এখনও সুইডেনের আবেদনের প্রতি সমর্থন জানায়নি।

তুরস্কের এরদোয়ান সরকার বারবার করে অভিযোগ করেছে যে নিষিদ্ধ ঘোষিত বিদ্রোহী দল কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির বা পিকেকে-কে এবং আরও কিছু তুর্কি বিরোধী দলকে সুইডিশ সরকার আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে।

আঙ্কারার সরকার এদেরকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে।

এদের বিরুদ্ধে সুইডিশ সরকার ব্যবস্থা না নিলে তারা নেটোতে যোগদানে সমর্থন জানাবে না।

এর বিরুদ্ধে গত জানুয়ারি মাসে স্টকহোমে তুর্কি দূতাবাসের সামনে একটি বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছিল। সে সময়ও কোরআন শরিফ পোড়ানো হয়।

ঐ বিক্ষোভটি আয়োজন করেছিলেন কট্টর ডানপন্থী ও ইসলাম-বিরোধী নেতা রাসমুস পালুদান।

ব্রিটেনের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্যা গার্ডিয়ান খবর দিচ্ছে যে মি. পালুদানের ঐ বিক্ষোভের জন্য সরকারি পারমিটের ৩২০ সুইডিশ ক্রোনার অর্থ জমা দিয়েছিলেন ক্রেমলিনপন্থী টিভি চ্যানেল আরটি’র প্রাক্তন সাংবাদিক চ্যাং ফ্রিক।

মি. ফ্রিক এখন সুইডেন ডেমোক্র্যাট পার্টির খবর নিয়মিতভাবে কভার করেন। পারমিটের অনুমতির জন্য অর্থ দেয়ার কথা তিনি স্বীকার করেছেন। তবে বলেছেন তিনি কাউকে কোরআন পোড়াতে বলেননি।

সুইডিশ মিডিয়া সে সময় জানিয়েছিল, নেটো সদস্যপদ পাওয়ার সুইডিশ প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করতে ঐ বিক্ষোভের পেছনে কাজ করেছে ক্রেমলিন সরকার। ফলে এবারও তেমন কোন লক্ষ্য ছিল কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সংবাদমাধ্যমে।

ওদিকে, তুর্কি প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এরদোয়ান গত সোমবার ইঙ্গিত দিয়েছেন যে নেটোতে সুইডেনের সদস্যপদ অনুমোদন করতে তার দেশ এখনও প্রস্তুত নয়। তিনি বলেছেন, ‘হোম-ওয়ার্ক’ শেষ করার জন্য স্টকহোমকে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।

“স্টকহোমে আমাদের পবিত্র গ্রন্থ কোরআনের ওপর জঘন্য হামলা আমাদের সকলকে ক্ষুব্ধ করেছে,” তিনি বলেন, “দু’শ কোটি মুসলমানের অনুভূতির প্রতি এই বিকৃত অবহেলা কোন মৌলিক মানবিক মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে না, চিন্তার স্বাধীনতা তো নয়ই।” সব মিলিয়ে সুইডেনের এখন শ্যাম রাখি না কূল রাখি অবস্থা।- মাসুদ হাসান খান, বিবিসি নিউজ বাংলা

শেয়ার করুন