নিউইয়র্ক     বৃহস্পতিবার, ৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে রাজনীতি আমাদের বিভক্ত করে, সে রাজনীতি আমরা করিনা – ওজোনপার্কে দুদিনব্যাপী পথমেলায় স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ০১:৪৯ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ০১:৫৫ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
যে রাজনীতি আমাদের বিভক্ত করে, সে রাজনীতি আমরা করিনা – ওজোনপার্কে দুদিনব্যাপী পথমেলায় স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ

গ্লোবাল পিস অ্যামব্যাসেডর নিউইয়র্কে বাংলাদেশি সমাজে হোম কেয়ার সেবার পথিকৃৎ স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ বলেছেন, নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের নতুন নেতৃত্ব গড়ে উঠছে। এই নতুন নেতৃত্বকে বেগবান করার জন্য আমরা কাজ করছি। এ জন্য আমাদের সব রকমের আঞ্চলিক বিভেদ পরিহার করতে হবে। যে রাজনীতি আমাদের বিভক্ত করে, সে রাজনীতি আমরা করিনা। যে রাজনীতি আমাদের অসুস্থ করে, পরস্পরকে পরস্পরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়, সেই রাজনৈতিক সংগঠন ও নেতাদের আমরা ত্যাগ করি। অন্য সব জাতির মাঝে বাংলাদেশিদের ভিন্নতা হলো একতা ও ভালোবাসা।

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাউন্টেন ব্যাটালিয়ান কমাণ্ডার স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ নিউ ইয়র্কের ওজোনপার্কে লিবার্টি এভিনিউ ও গ্লেনমোর এভিনিউয়ের মাঝামাঝি সড়কে দুদিন ব্যাপী পথমেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। ২৬ আগস্ট শনিবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পথমেলা উদ্বোধন করেন। পরদিন ২৭ আগস্ট রোববার তিনি মেলার সমাপনী বক্তব্য রাখেন। বক্তব্য শেষে তার হোম কেয়ার প্রতিষ্ঠান বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের কর্মকর্তারা ফুল ছিটিয়ে মেলার আয়োজক ও উপস্থিত দর্শকদের অভিনন্দন জানান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ওসমানী স্মৃতি পরিষদের সভাপতি ও জেনারেল ওসমানীর আমৃত্যু সহকারি ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাদির।

স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ বলেন, ওজোনপার্কে বাংলাদেশি সমাজের সৌন্দর্য প্রেম ও ভালোবাসা। বাংলাদেশিরা অঞ্চল ভেদে অসাধারণ পারিবারিক মূল্যবোধ লালন করেন। সুখী জীবনযাপন ও দেশপ্রেমই আমাদের মূল্যবোধের প্রধান শক্তি। আমরা আপনজনরা যখন এক হয়ে থাকি, তখন আমাদের অমিত শক্তি অন্যান্য জাতিগোষ্ঠির কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ড. আবু জাফর মাহমুদ, বিয়ানীবাজারে বসবাসকারী সব বাংলাদেশিদের প্রতি তার গভীর সম্পর্কের কথা তুলে ধরে বলেন, মানুষের ভালোবাসার টানে আমি পথমেলা আয়োজনের চাকচিক্যের দিকে তাকাইনি। মঞ্চের দিকে তাকাইনি। আমরা একে অন্যকে ভালোবাসি। এটিই আমাদের সৌন্দর্য। ভালোবাসি বলেই বাঙালি জাতির মধ্যে হোম কেয়ার শুরু করেছি। সতের বছর আগে আমি আমার আত্মীয় পরিজন সঙ্গে নিয়েই শুরু করেছিলাম। এখনও আমার সঙ্গে যারা রয়েছে, তাদের নিয়েই আমাদের পরিবার।

স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ গত বন্যায় সুনামগঞ্জের হাওড়ের বিপন্ন ২২’শ পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, এসব পরিবারের গড়ে ৬জন সদস্য হিসেবে এতজন মানুষের সঙ্গে আমি আত্মীয়তা গড়ার সুযোগ পেয়েছি।তিনি সম্প্রতি ভিয়েতনাম থেকে হাজার বছরে ঐতিহ্যবাহী, পৃথিবীর প্রাচীনতম সম্মাননা নাইট অফ সেন্ট জন অফ জেরুজালেম উপাধি গ্রহণের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, তখন আমার মনে হয়েছে, আমার বাংলাদেশ আমার সঙ্গে রয়েছে। আমি সেখান থেকে বাংলাদেশের মাটিতে চুম্বন দিতে যাই।

কারণ সেটিই আমার ঠিকানা। সেখানেই আমার অস্তিত্ব। আমি সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার আলীগঞ্জ বাজারে এক অভূতপূর্ব সমাবেশে হাজির হই। সেখানে স্থানীয়রা আমাকে সংবর্ধনা দেন, সত্যিকার অর্থে এত বেশি ভালোবাসা পৃথিবীতে বিরল। বাংলাদেশে গিয়ে আমি শারিরীক প্রতিকূলতা সত্বেও সেখানে গেছি, কারণ সেখানে শুয়ে আছেন হযরত শাহজালাল রহ.সহ ৩৬০ জন আউলিয়া। প্রায় ৩০০ জনেরই পদচারণার স্মৃতি রয়েছে ওই আলীগঞ্জে।

আবু জাফর মাহমুদ বলেন, কেয়ারের সঙ্গে ব্যবসা যুক্ত হলে সেটি আর যত্ন থাকে না। আমরা সতের বছর ধরে আমেরিকায় হোম কেয়ার করে মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি, পরিবার থেকে শিখে আসা ভালোবাসাই আমাদের বড় পুঁজি। এই শক্তি নিয়েই আমরা মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে চাই। ভালোবাসা ও সম্মান আমরা আমেরিকান সমাজে মিশিয়ে দিয়ে সমাজে সভ্যতার এই ধারা ছড়িয়ে দিচ্ছি।

এই কারণেই আমরা সফল। আমাদের সফলতার পেছনে সবচেয়ে আগে রয়েছে আল্লাহর রহমত। রয়েছে সব মানুষের ভালোবাসা আর আমার টিমের পরিশ্রম। আমরা আমাদের পোশাক আশাক থেকে শুরু করে জীবনাচারের সকল শুদ্ধ সংস্কৃতি যেমন ধরে রাখবো, একইভাবে মায়া ভালোবাসা ও একে অন্যকে সহ্য করার যে গুণ তাও ধরে রাখবো। স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ জন্মভূমি বাংলাদেশ সম্পর্কে তার নিজস্ব অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, আমার মাতৃভূমি হযরত শাহজালাল (র.)সহ ৩৬০ আউলিয়ার পূণ্যভূমি। আমার বাংলাদেশ মহান মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর বাংলাদেশ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি জেনারেল ওসমানীর আমৃত্যু সহকারি ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাদির অন্তরের অন্তস্থল থেকে উচ্ছ্বাস, ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, স্যার ড. আবু জাফর একটি নাম। তিনি বাঙালি জাতির শৈর্য, বির্য ও সাহসের নাম। তিনি আজীবন সংগ্রামী একজন মুক্তিযোদ্ধা। নিঃস্বার্থ দেশপ্রেমিক। যতদিন জাতি লাল সবুজে পতাকা ওড়াবে ততদিন স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদের নাম স্মরনীয় হয়ে থাকবে। তার মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত খাঁটি বাঙালি। একইভাবে মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত একজন খাঁটি মুসলমান। খাটি বাঙালিকত্ব ও সাচ্চা মূসলমানের এমন মিলন সচরাচর দেখা যায় না দুদিনের মেলায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাউল কালা মিয়াসহ নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট শিল্পীবৃন্দ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি

শেয়ার করুন