নিউইয়র্ক     শনিবার, ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভুটানকে ট্রানজিট দিল বাংলাদেশ

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৩ | ১২:৩৯ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৩ | ১২:৩৯ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
ভুটানকে ট্রানজিট দিল বাংলাদেশ

ভুটানকে ট্রানজিট সুবিধা দিল বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশ ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন দ্য মুভমেন্ট অব ট্রাফিক ইন-ট্রানজিট অ্যান্ড প্রটোকল’ স্বাক্ষর করেছে। এই ট্রানজিট চুক্তির আওতায় চারদিকে স্থলভাগবেষ্টিত ভুটান বাংলাদেশের বিমান, রেল, স্থল, নৌ ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সুযোগ পেল। দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সহজতর করার লক্ষ্যে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে উভয় দেশ এই ট্রানজিট চুক্তি সম্পন্ন করল।

গত ২২ মার্চ বুধবার বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ভুটানের শিল্প, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী কর্মা দর্জি নিজ নিজ দেশের পক্ষে ট্রানজিট চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ভুটানের শিল্প, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব দাশ তাশি ওমাং এবং শক্তি ও নবায়নযোগ্য সম্পদবিষয়ক সচিব দাশ কর্মা শেরিং, ভুটান চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি, ভুটানের বিভিন্ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, তিন দফা দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে এই চুক্তি এবং চুক্তির আওতায় প্রটোকল চূড়ান্ত করা হয়। গত ১৩ মার্চ মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত প্রটোকল অনুমোদিত হয়। এর আগে স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ-ভুটান অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) নতুন ট্রানজিট চুক্তি ও প্রটোকলকে অধিকতর কার্যকর করবে। স্বাক্ষরিত চুক্তিটি উভয় দেশ কর্তৃক রেটিফিকেশনের পরে কার্যকর হবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, যুগান্তকারী এই চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে দুদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সহজতর হবে। বাণিজ্য সম্পর্ক পাবে নতুন মাত্রা। স্বাক্ষরিত চুক্তি দেশের জন্য কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক, সংযোগ এবং কৌশলগত সুবিধা বয়ে আনবে বলেও জানান তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ আন্তঃযোগাযোগ বৃদ্ধি ও আঞ্চলিক ভ্যালু চেইন সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতে চায়। এর অংশ হিসেবে চারদিকে স্থলভাগবেষ্টিত ভুটানকে বাংলাদেশ ট্রানজিট চুক্তির আওতায় বিমান, রেল, স্থল, নৌ ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সুযোগ প্রদান করছে।

এ চুক্তির ফলে উভয় দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক যোগাযোগে ব্যাপক প্রসার ঘটবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভুটানের পণ্য রপ্তানি ও আমদানি করলে বাংলাদেশ বিভিন্ন ফি এবং চার্জ লাভ করবে। এ ছাড়া অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটবে। ট্রানজিট অ্যাগ্রিমেন্ট বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের সমুন্দ্রবন্দরগুলো অধিকতর কর্মক্ষম হবে এবং রাজস্ব আয় বাড়বে। অধিকন্তু কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ বন্দরগুলোর সার্বিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আসবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে তিনি গর্বিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তির প্রাক্কালে ৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে সর্বপ্রথম স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ভুটান। এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভুটানের নিবিড় বন্ধুত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। বলেন, বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দ্বিপক্ষীয় এই সহযোগিতা ও অংশীদারত্ব ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত এবং শক্তিশালী করতে উভয় রাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে গত এক দশকে অর্থ-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য-শিক্ষা, যোগাযোগ, অবকাঠামোসহ সব খাতে অসাধারণ সাফল্য অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে টিপু মুনশি আরও বলেন, এর ফলে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। পরিচিতি ‍পেয়েছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে। এ সময় বিগত বছরগুলোর মতো সব আঞ্চলিক এবং বহুপক্ষীয় ফোরামে বাংলাদেশকে সমর্থন প্রদান অব্যাহত রাখা ছাড়াও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের ট্রিলিয়ন ডলারের যাত্রায় ভুটানকে উন্নয়ন অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর ভুটানের মন্ত্রী, সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি কৃষি খাতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বিশেষ করে মাশরুমসহ কৃষিপণ্যের বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়ের গুরুত্ব আরোপ করেন।সুত্র কালবেলা

শেয়ার করুন