নিউইয়র্ক     রবিবার, ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রিগোজনের মৃত্যুতে পুতিনকে নিয়ে সন্দেহ বাইডেনের

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৩ | ০২:৫০ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৬ আগস্ট ২০২৩ | ০২:৫০ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
প্রিগোজনের মৃত্যুতে পুতিনকে নিয়ে সন্দেহ বাইডেনের

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মনে করছেন, বিমান বিধ্বস্ত হয়ে গ্রিগোজিনের মৃত্যুর পেছনে পুতিনের হাত থাকলেও থাকতে পারে। গ্রিগোজিন যদি পুতিনের নিশানা হন, তবে বাইডেন একটুও বিস্মিত হবেন না।

রুশ ভাড়াটে যোদ্ধাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়েছে গণমাধ্যমে, তবে এ নিয়ে নিশ্চিত তথ্য জানা যাচ্ছে না। বিষয়টি যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে এর পেছনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হাত থাকতে পারে বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

মস্কো থেকে ১০০ কিলোমিটার উত্তরে টিভার অঞ্চলে ১০ জনকে নিয়ে স্থানীয় সময় বুধবার বিধ্বস্ত হয় একটি বিমান। এই বাহনে প্রিগোজিনও ছিলেন বলে এখনও পর্যন্ত তথ্য এসেছে। বিমানটিতে তিন পাইলট ও সাতজন যাত্রী ছিলেন। যাত্রীদের তালিকায় ছিল ওয়াগানার প্রধানের নাম।

সিএনএন বলছে, জো বাইডেন মনে করছেন, বিমান বিধ্বস্ত হয়ে গ্রিগোজিনের মৃত্যুর পেছনে পুতিনের হাত থাকলেও থাকতে পারে। গ্রিগোজিন যদি পুতিনের নিশানা হন, তবে বাইডেন একটুও বিস্মিত হবেন না।

সিএনএনকে বাইডেন আরও বলেন, ‘আপনাদের হয়তো মনে থাকতে পারে, আমাকে আগেও এই ব্যাপারটি নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল।’

গত জুলাইয়ে ওয়াগনার প্রধানের প্রসঙ্গে কথা বলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। গ্রিগোজিনের নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেছিলেন তিনি।
ফিনল্যান্ডে তখন সাংবাদিকদের তিনি কৌতুকের সুরে বলেছিলেন, আমি যদি গ্রিগোজিন হতাম তবে আমি আমার খাবারের মেন্যুর দিকেও নজর রাখতাম।

বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা নিয়ে বাইডেন বলেন, ‘রাশিয়ায় এমন কোনো ঘটনা ঘটে না, যার পেছনে পুতিন নেই। তবে এখানে কী ঘটেছে তা নিয়ে পর্যাপ্ত আমি জানি না।’

বুধবার ওয়াগনার-ঘনিষ্ঠ একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল গ্রে জোন জানায়, মস্কোর উত্তরে টিভার অঞ্চলে বিমানটিকে গুলি করে নামায় রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী।বিমানটি ভূপাতিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায় বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা তাস।

ওয়াগনার প্রধান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে লড়াই করেছে ওয়াগনার বাহিনী। পূর্ব ইউক্রেনের বাখমুতে যখন রাশিয়ার সেনাবাহিনী কোণঠাসা, তখন ওয়াগনার সেনাদের ভূমিকায় বাখমুতের নিয়ন্ত্রণ নেয় রাশিয়া।

অবশ্য এক পর্যায় গত ২৩ জুন অস্ত্র সরবরাহ এবং যুদ্ধের নীতি-কৌশল নিয়ে ওয়াগনার প্রধানের সঙ্গে রাশিয়ার শীর্ষ কমান্ডারদের মতবিরোধ দেখা দেয়।ওয়াগনার প্রধান সে সময় তার সেনাদের মরদেহের মাঝে দাঁড়িয়ে অস্ত্র সংকটের কথা জানান। বলেন, রাশিয়া চাহিদা অনুযায়ী অস্ত্র সরবরাহ করছে না। পরিস্থিতি না বদলালে তার সেনাদের যুদ্ধের ময়দান থেকে প্রত্যাহার করে নেবেন।

এ নিয়ে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু ও সামরিক প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভের সঙ্গে তার প্রকাশ্য বিরোধ সামনে আসে। ২৩ জুন তিনি রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তার সেনাদের ওপর বিমান হামলার অভিযোগ করেন। এর প্রতিবাদে রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে উৎখাতের জন্য ইউক্রেন সীমান্ত থেকে মস্কো অভিমুখে অভিযান শুরু করেন তিনি।

পথে রোস্তভ-অন-দনসহ কয়েকটি শহর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেন ওয়াগনারের যোদ্ধারা। ওয়াগনারের নিয়ন্ত্রণে যায় গুরুত্বপূর্ণ একটি রুশ সেনাঘাঁটিও। এরপর ওয়াগনারের অগ্রযাত্রা এবং পুতিনের পাল্টা হুঁশিয়ারি মুখোমুখি সংঘাত অনিবার্য করে তোলে। পরবর্তীতে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় অভিযান বন্ধের ঘোষণা দেন প্রিগোজিন।

বেলারুশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পুতিনের সম্মতিতে তাদের সঙ্গে প্রিগোজিনের আলোচনা হয়েছে। লুকাশেঙ্কো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দেন। বিনিময়ে ওয়াগনার যোদ্ধাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়ার বিষয়ে মতৈক্য হয়।

বিদ্রোহের পর ওয়াগনার সেনারা বেলারুশে চলে যান বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর হয়। তবে প্রিগোজিনের অবস্থান নিয়ে সৃষ্টি হয় নতুন জল্পনা। শোনা যায়, তিনি বেলারুশে আছেন। এমনকি তার রাশিয়া সফর এবং পুতিনের সঙ্গে স্বাক্ষাত করার খবরও জানা যায়। কিন্তু ওই ঘটনার পর থেকে কখনোই তাকে জনসম্মুখে আসতে দেখা যায়নি।

শেয়ার করুন