প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ৭ই জুলাই শুক্রবার সাক্ষাৎ করে সিদ্ধান্ত বদলেছেন তামিম ইকবাল। অবসর ভেঙে মাঠে ফিরছেন। খেলবেন বিশ্বকাপে। তবে এখন থাকবেন দেড় মাসের ছুটিতে। এশিয়া কাপ দিয়ে ফিরবেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।
প্রধানমন্ত্রীর বাসা থেকে বের হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমকে তামিম বলেছেন, ‘আজ দুপুরে আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার বাসায় দাওয়াত করেছিলেন। উনার সঙ্গে অনেকক্ষণ আমরা আলোচনা করেছি। উনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন খেলায় ফিরে আসতে। আমি আমার রিটায়ারমেন্ট এই মুহূর্তে তুলে নিচ্ছি। কারণ আমি সবাইকে না বলতে পারি, কিন্তু দেশের যে সবচেয়ে বড় ব্যক্তি তাকে না বলা আমার পক্ষে অসম্ভব। তাতে অবশ্যই পাপন ভাই ও মাশরাফি ভাইয়ের বড় ভূমিকা ছিল। মাশরাফি ভাই আমাকে ডেকে নিয়েছেন। পাপন ভাই সঙ্গে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী আমাকে দেড় মাসের জন্য একটা ছুটিও দিয়েছেন।’
বিসিবিপ্রধান নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘আমার সব সময় একটা ধারণা হয়েছিল প্রেস কনফারেন্সটা দেখে। এত ক্ষোভ, হয়তো ও ইমোশনালি সিদ্ধান্তটা নিয়েছে। আমার একটা বিশ্বাস ছিল, ওর সঙ্গে সামনা-সামনি বসতে পারলে হয়তো এর একটা সল্যুশন পাব। আজকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে আমরা সবাই ওর সঙ্গে বসেছিলাম। ও আপনাদের সামনেই বলে গেল, সে যে রিটায়ারমেন্টের চিঠিটা দিয়েছে সেটা সে উইথড্র করেছে। সে রিটায়ারমেন্ট করেনি।’
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) বাংলাদেশের ক্রিকেটে এক সুনামিই বইয়ে দিয়েছিলেন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান। আফগানিস্তান সিরিজের মাঝপথে আচমকা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে হইচই ফেলে দেন তিনি। এদিকে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর ওয়ানডে বিশ্বকাপ মাঠে গড়ানোর আর মাত্র তিন মাস বাকি। সব মিলিয়ে কঠিন এক সময় পার করছিল দেশের ক্রিকেট। সংকট এড়াতে তামিমকে গণভবনে ডেকে নেন ক্রিকেটপ্রেমী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মাশরাফি বিন মর্তুজার মাধ্যমে তামিম ইকবালকে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী। বিসিবিপ্রধান নাজমুল হাসান পাপন শেষ পর্যন্ত তামিমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় ৭ জুলাই শুক্রবার দুপুরে মাশরাফির মাধ্যমে যোগাযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
গণভবনে মাশরাফিকে নিয়ে তামিমের সঙ্গে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তামিমের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকীও ছিলেন সেখানে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানকেও সেখানে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ৫ই জুলাই বুধবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের পর রাতভর নানা জল্পনা-কল্পনা শেষে সকালে সাংবাদিকদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের কথা জানান তামিম। পরে ৬ই জুলাইবৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে কান্নাভেজা চোখে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৭০টি টেস্ট, ২৪১টি ওয়ানডে ও ৭৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তামিম। যেখানে টেস্টে ১০টি সেঞ্চুরি ও ৩১টি ফিফটিতে ৫১৩৪ রান করেছেন। ওয়ানডেতে ১৪টি সেঞ্চুরি ও ৫৬ ফিফটিতে দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৩১৩ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। টি-টোয়েন্টিতে একটি সেঞ্চুরি ও সাতটি হাফ সেঞ্চুরিতে তার রান ১৭৫৮। তবে টি-টোয়েন্টিতে আগেই অবসর নিয়েছিলেন তিনি। খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন ওয়ানডে ও টেস্টে। সেখান থেকেও নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন তামিম।