নিউইয়র্ক     শনিবার, ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিউ ইয়র্কে ৩ দিনব্যাপী ‘ইউএসবিসিআই বিজনেস এক্সপো-২০২২’ অনুষ্ঠিত

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২২ | ০৫:২৪ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২২ | ০৫:২৪ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
নিউ ইয়র্কে ৩ দিনব্যাপী ‘ইউএসবিসিআই বিজনেস এক্সপো-২০২২’ অনুষ্ঠিত

নিউইয়র্ক : ‘ইউএস-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ইউএসবিসিসিআই)’-এর উদ্যোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তিন দিনব্যাপী ‘ইউএসবিসিসিআই বিজনেস এক্সপো-২০২২’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গত শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) থেকে নিউইয়র্কের লাগোর্ডিয়া ম্যারিয়ট হোটেলে এই এক্সপো অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতিসংঘের ৭৭ অধিবেশনকে সামনে রেখে ‘এক্সপোর্ট-ইম্পোর্ট অপর্চুনিটি ফর ইউএস-বাংলাদেশ সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট’ প্রতিপাদ্য নিয়ে শুরু হয়েছিল এক্সপোটি।

ইউএসবিসিসিআই বিজনেস এক্সপো একটি B2B ট্রেড শো, কনফারেন্স এবং নেটওয়ার্কিং ইভেন্ট। এর লক্ষ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের রপ্তানি-প্রস্তুত পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রসারিত করতে সহায়তা করা। উভয় দেশের ২ শতাধিক প্রতিনিধি এবং স্টেকহোল্ডার এক্সপোতে অংশগ্রহণ করেছেন। ব্যবসায়ীরা নিজেদের ব্যবসাকে একে অন্যের দেশে প্রসারিত করার পাশাপাশি কীভাবে বিশ্ববাজারেও নিজেদের পণ্য পৌঁছে দিতে পারেন, ব্যবসার সুযোগ তৈরি করতে পারেন এসব বিষয়ে নিয়ে এই এক্সপোতে পর্যালোচনা হয়েছে।

তিন দিনব্যাপী এই এক্সপোতে অংশ নেয়া সফল ব্যবসায়ীরা নিজেদের সফলতার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। এছাড়া এই এক্সপোর মাধ্যমে ব্যবসার ব্র্যাতন্ডকে কীভাবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া যায়, সেসব বিষয় নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে।

ইউএসবিসিসিআই বিজনেস এক্সপো-২০২২’র শেষ দিনে (২৫ সেপ্টেম্বর) দুটো সেমিনার ছিল। যেগুলো হল-কমার্শিয়াল ল্যান্ডিং রিয়েল স্টেট সেমিনার ২০২২ এবং বিজনেস সলিউশনস ফর বিজনেস ওনার বাই নিউ ইয়র্ক লাইফ।

এর আগে প্রথম দিনের (২৩ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠানসূচীতে ছিল- এক্সপোতে রেজিষ্ট্রেশন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও বিভিন্ন সেশন থাকবে, যেখানে অতিথিরা বক্তব্য রাখেন। পাশাপাশি ইউএস-বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট সেশন হয়েছে৷ এখানেও সম্মানিত বক্তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। পুরস্কার বিতরণীর মধ্য দিয়ে শেষ হয় প্রথম দিনের অনুষ্ঠান।

এক্সপোর ২য় দিনে (২৪ সেপ্টেম্বর) ছিল সাইবার সিকিউরিটির উপর বিশেষ সেমিনার। এছাড়া উদ্বাবন, নেতৃত্ব ও টেকনোলজির উপর কর্মশালা করা হয়েছিল। কীভাবে সফটওয়্যার ও ব্যবসার উন্নয়ন শুরু করা যায় এ সম্পর্কিত সেমিনারেরও আয়োজন ছিল। পাশাপাশি ‘ইউএনজিএ সাইডলাইন কনফারেনন্স ২০২২ অন ব্র্যাান্ডিং বাংলাদেশঃ এনআরবি, ইউএন পিস কিপিং’ শীর্ষক আলোচনা হয়েছে এক্সপোর দ্বিতীয় দিনে।

ইউএসবিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট লিটন আহমেদ বলেন, ‘ইউএসবিসিসিআই বিজনেস এক্সপো-২০২২ আমাদের সিগনেচার ইভেন্টগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই এক্সপোর মাধ্যমে ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক সৃষ্টি, ব্যবসার উন্নয়ন এবং মূল্যবান কৌশলগত ব্যবসায়িক অংশীদারত্ব বিকাশের সুযোগ হয়েছে। আমাদের সংস্থার অন্যতম দায়িত্ব, ছোটো ও মাঝারি আকারের ব্যবসাগুলোকে পরিষেবা দেয়া এবং ব্যবসা প্রসার করা। এছাড়া আমরা বিভিন্ন কর্পোরেশন ও সরকারি সংস্থার সঙ্গে অংশীদার হয়েছি। যার মাধ্যেম ব্যবসার অগ্রগতি ও সম্প্রসারণের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এই বছরের এক্সপো আমাদেরকে নতুন উদ্দীপনা প্রদান করেছে। আমরা ব্যবসার নতুন নতুন উপাদান প্রবর্তনের প্রয়াস রেখেছি, যেই কারণে এই এক্সপো আমাদের কাছে বিশেষ স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে আমি আশা করি। ব্যবসার চ্যালেঞ্জিং সময়গুলোকে কীভাবে মোকাবেলা যায়, এই বিষয়ে বিস্তর তথ্য সহায়তা এবং দিকনির্দেশনা প্রদানে আমরা বদ্ধ পরিকর।

লিটন আহমেদ জানান, আমাদের তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান ছিল। এখানে অনেক অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী, এজেন্সি এবং সংস্থা রয়েছে, যাদের শেয়ার করা ব্যবসায়িক পরামর্শগুলো ব্যবসার প্রচার ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই এক্সপোতে প্রযুক্তি, পর্যটন, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি সহ নানান বিষয়ের উপর কর্মশালা ছিল, যা ব্যবসা উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বিজনেস এক্সপোতে অংশ নেয়া সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ইউএসবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট বলেন, আমাদের সদস্য, অংশীদার, স্পন্সর, মিডিয়া পার্টনার, সাংবাদিক, প্রদর্শক, বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। সবার একান্ত প্রচেষ্টায় অনেক অনিশ্চয়তাকে জয় করে আমরা এই আয়োজন করতে পেরেছি। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, আপনাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এই এক্সপো সফলতা পেয়েছে। এখানে সবার নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে, আমরা আনন্দ করেছি অনেক, পাশাপাশি সফল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। এর মাধ্যমে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ ও শক্তিশালী একটি ব্যবসায়িক সম্পর্ক তৈরি হবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

ইউএসবিসিসিআই বিজনেস এক্সপোতে প্রধান বক্তা ছিলেন- সেন্টার ফর এনআরবি’র চেয়ারপার্সন ও প্রতিষ্ঠাতা এম.এস. শেকিল চৌধুরী এবং পিটার টিয়ার্নি, পরিচালক, হারলেম মার্কিন রপ্তানি সহায়তা কেন্দ্র, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রশাসন, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্স।

এবার এক্সপোতে আমন্ত্রিত অতিথি ও বক্তাদের মধ্যে ছিলেন নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটের সিনেটর জেসিকা রামোস, নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান ডেভিড আই. ওয়েপ্রিন (অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট 24),অ্যাসেম্বলিওম্যান জেনিফার রাজকুমার, এনওয়াইসি মেয়র’স অফিস ফর ইন্টারন্যাশনাল এফেয়ার্সের কমিশনার এডওয়ার্ড মারমেইলস্টেন, ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি’র চ্যান্সেলর ও চেয়ারম্যান আবু বকর হানিপ, এনওয়াইসি ডিপার্টমেন্ট অব এসবিএস’র কমিশনার কেভিন ডি কিম, নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল’র কাউন্সিল মেম্বার রবার্ট এফ. হোল্ডেন, ব্রুকলিন চেম্বার অব কমার্স’র প্রেসিডেন্ট ও সিইও রেন্ডি পিয়ার্স, কুইন্স চেম্বার অব কমার্স’র প্রেসিডেন্ট ও সিইও থমাস জে. গ্রেচ, ইউএস কমার্সিয়াল সার্ভিস হার্লেম’র ডিরেক্টর পিটার টিয়ারনে হারলেম ইউএস এক্সপোর্ট অ্যাসিসট্যান্স সেন্টার, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ, ট্রেড, ইনভেস্টমেন্ট এন্ড ইনোভেশন ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স-এর ডেপুটি কমিশনার দিলীপ চৌহান, সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, নিউইয়র্ক শহরের শ্রম-সম্পর্ক দপ্তরের প্রধান তথ্য-নিরাপত্তা কর্মকর্তা ম ই হাসান, নিউইয়র্ক লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির জ্যেষ্ঠ অংশীদার মনোজ মহাজন, নিউ জার্সির টাউনশিপ অব ফ্র্যাংতকলিন এর কাউন্সিলওমেন শেপা উদ্দিন, ইন্টারন্যাশনাল ফান্ডিং ক্লাইমেফ লাইভ’র টিমি বারাবাস, ফ্লাসিং ব্যাংক’র ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও বিজনেস ডেভেলপমেন্ট অফিসার শাহীন খান, আইএইচআরও-ইউএসএ এবং আইওএলজি-ইউএসএ’র প্রেসিডেন্ট ড. আহলেম আরফাওই, ভারসাইল ভ্যাঞ্চার্স’র এক্সিকিউটিভ ভিনয় ডিক্সন, প্রধান কৌশল কর্মকর্তা আনা গাজ্জারা, স্টেবল কুপনস ইনক’র কো-ফাউন্ডার ক্যান চেস্টার জুনিয়র, আর্জেন্টিনা-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র প্রেসিডেন্ট আলিম তালুকদার আল রাজী, জেট ডিরেক্ট মর্টগেজ’র শাখা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জান ফাহিম, প্রফেসর হানা সিদ্দিক, পপুলার ক্যাপিটাল ইনক’র সিইও মোহাম্মদ এ কাদের ভূঁইয়া, এসজে ইনোভেশন এলএলসি’র সিইও শাহেদ ইসলাম, ইউএন গ্লোবাল পিস’র এম্বাসেডর ড. সীমা কারেতনায়া প্রমুখ। এছাড়াও ইউএসবিসিসিআই- ভাইস-প্রেসিডেন্ট বখত রুম্মান বিরতীজ, পরিচালক শেখ ফরহাদ, পরিচালক আব্দুল কাদের শিশির, পরিচালক রাজিব খান, ফিন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান কাজী হেলাল আহমেদ, উইমেন এম্পাওরমেন্ট কমিটির চেয়ারপারসন রুমা আহমেদ এবং নিউইয়র্কের প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এক্সপোর অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ।

এই বিজনেস এক্সপো’র কো-পার্টনার হিসেবে ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয় (গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার) এবং এনওয়াইসি ডিপার্টমেন্ট অফ স্মল বিজনেস সার্ভিসেস। স্ট্রেটেজিক পার্টনার-বেটার বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন-বিবিএফ এবং বিবিএফ গ্লোবাল (অফিসিয়াল পার্টনার বিডা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়)। আরো সহযোগিতায় রয়েছে- ইউএস চেম্বার অব কমার্স, ব্রুকলিন চেম্বার অব কমার্স এবং কুইন্স চেম্বার অব কমার্স। এছাড়া স্পনসরদের মধ্যে ছিল Washington University of Science & Technology, Peopletech, Brand Means Business, USBD Group LLC, USBD Soft.com ও SJ Innovation। মিডিয়া পার্টনার হিসেবে আছে-The Nrb Times, Nrb Connect, USA News Online, Channel 786, Time Television, প্রথম আলো, বাংলাদেশ প্রতিদিন, চ্যানেল আই এবং পরিচয়।

উল্লেখ্য, ইউএস-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ইউএসবিসিসিআই) হল এমন একটি সংস্থা, যা বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশে আমেরিকান ব্যবসার সমৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য কাজ করে থাকে। এছাড়াও ক্রমবর্ধমান ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের চাহিদা পূরণে সংস্থাটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসার মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন এবং একটি উদ্যোক্তা পরিবেশ তৈরি করা ইউএসবিসিসিআই-এর অন্যতম লক্ষ্য। তথ্য, সহায়তা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, উৎসব, ব্যবসায়িক রেফারেল, নেটওয়ার্কিং, সামাজিকীকরণ এবং আরও অনেক কিছুর উৎস এই ব্যবসায়িক সংগঠনটি। ইতিবাচক নানান কর্মের জন্য ইউএস-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিকে বাংলাদেশী সম্প্রদায়ের ‘বিশ্বস্ত কণ্ঠ’ বলা হয়।- প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুসারে

পরিচয়/টিএ

শেয়ার করুন