নিউইয়র্ক     রবিবার, ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইন্ডিয়া টুডের সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাৎকার

খুনিদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে কানাডা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ০৮:২৩ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ০৮:২৩ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
খুনিদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে কানাডা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন । ছবি: সংগৃহীত

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, কানাডা খুনিদের আড্ডাখানা বা আশ্রয়স্থল হতে পারে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে খুনিরা কানাডায় গিয়ে আশ্রয় নিতে পারেন এবং সুন্দর জীবনযাপন করেন। অথচ তারা যাদের হত্যা করেছে, তাদের স্বজনরা কষ্ট পাচ্ছে। সম্প্রতি ইন্ডিয়া টুডের কূটনৈতিক প্রতিবেদক গীতা মোহনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি নূর চৌধুরীকে প্রত্যর্পণ করতে কানাডা অস্বীকৃতি জানানোয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করে এসব কথা বলেন।

কানাডার মাটিতে খালিস্তান আন্দোলনের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারের হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে তলানিতে নেমেছে ভারত-কানাডা সম্পর্ক। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অভিযোগ করেছেন, তার হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকার জড়িত। এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে প্রতিবেশী দেশটি পাল্টা বলছে, হরদীপসহ সন্ত্রাসবাদে জড়িতদের আশ্রয় দিচ্ছে কানাডা।

সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধুর খুনির মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি আরও বিশদভাবে বর্ণনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিচার বিভাগ খুবই স্বাধীন এবং সরকার এতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তবে, (নূর চৌধুরী) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সুযোগ রয়েছে। তিনি যদি বাংলাদেশে ফিরে আসেন, তাহলে নূর চৌধুরী এবং রশিদ চৌধুরী উভয়েই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি তাদের প্রাণভিক্ষার আবেদন মঞ্জুর করে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজাও মঞ্জুর করতে পারেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রত্যপর্ণ বিষয়ে কানাডার অবস্থান নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এক ধরনের সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে কানাডার অবস্থান অপরাধীদের জন্য একটি প্রতিরক্ষামূলক ঢাল হয়ে উঠছে।

মানবাধিকারের নাম ভাঙিয়ে খুনিদের বাঁচানোর চেষ্টা করার প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মোমেন। তিনি বলেন, অনেক সময় অনেকের মাধ্যমেই মানবাধিকারের ধারণার অপব্যবহার করা হচ্ছে। এটি সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক কারণ অনেক সময় খুনি এবং সন্ত্রাসীদের রক্ষা করার জন্য কিছু লোক অজুহাত হিসেবে মানবাধিকারের অজুহাত দেয়।

তিনি বলেন, আমি আশাবাদী এবং আমি বিশ্বাস করি যে একদিন কানাডিয়ান সরকার এই অনিয়ম পরিবর্তন করবে কারণ কানাডা এখন খুনিদের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে। আমি জানি, কেউ খুনি হলে তারা নানা ধরনের মিথ্যা ছলনা করে কানাডায় আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করে ও এই প্রক্রিয়ায় কানাডা খুনিদের আখড়ায় পরিণত হচ্ছে। কানাডা একটি সুন্দর দেশ। তবে এই বিশেষ আইন কানাডার সুনামকে প্রভাবিত করছে। কানাডার খুনিদের আশ্রয় দেয়া উচিত নয়।

উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে খুন হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছয়জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। বাকি আছেন আরও পাঁচজন। তারা হলেন: আব্দুর রশীদ, শরীফুল হক ডালিম, মোসলেম উদ্দিন, রাশেদ চৌধুরী ও এবিএমএইচ নূর চৌধুরী। এর মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে এবং নূর চৌধুরী কানাডায় অবস্থান করছেন। অন্যদিকে আব্দুর রশীদ, শরীফুল হক ডালিম ও মোসলেম উদ্দিন কোথায় আছেন সেই খোঁজ এখন পর্যন্ত পায়নি সরকার। সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

শেয়ার করুন