নিউইয়র্ক     মঙ্গলবার, ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেবামুলক প্রতিষ্ঠান ‘ভালো’র বার্ষিক ইফতার-নৈশভোজ অনুষ্ঠিত

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২৪ | ০৩:৩৬ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৪ | ০৯:০৬ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
সেবামুলক প্রতিষ্ঠান ‘ভালো’র বার্ষিক ইফতার-নৈশভোজ অনুষ্ঠিত

গত ২২ মার্চ শুক্রবার নিউইয়র্ক ভিত্তিক অলাভজনক সামাজিক সেবামুলক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশী আমেরিকান হিউম্যানেটেরিয়ান এইড লিডারশাপ আউটরিচ-সংক্ষেপে “ভালো” পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে তৃতীয় বার্ষিক কমিউনিটি ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করে লং আইল্যান্ড সিটির ফাইভ স্টার বাঙ্কোয়েট হলে।

শৃঙ্খলাপুর্ণ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ইফতার সমাবেশে বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রতিনিধিরা ছাড়াও সিটি কমিশনার, ডিপার্টমেন্ট অফ ইউথ এন্ড কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট, কুইন্স চেম্বার অফ কমার্স, সিটি মেয়রের অফিস ও তার প্রশাসনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশী কমিউনিটিতে সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন শক্তিশালী এবং নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষের সাথে সেতুবন্ধন সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছে ভালো। বিশেষ করে শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্পোর্কন্নয়নে অবদান রাখতে ভালো প্রায়শ:ই এ ধরণের কর্মসূচী গ্রহণ করে থাকে। অনুষ্ঠানস্থলে কাবা শরীফের গিলাফ, কাবা ও রাসুল সা. এর রওজা মোবারকের তালা-চাবি প্রদর্শন করা হয়।

শাহারিয়ার নবীর পরিচালনায় পবিত্র ইমাম আহমেদ আলী উজিরের কণ্ঠে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াতের মাধ্যমে দিনের কার্যক্রম শুরু হয়। শাহারিয়ার নবী অতিথিদেরকে স্বাগত জানিয়ে ভালো’র বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম তুলে ধরেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, পরিবার, বন্ধু ও কমিউনিটির মানুষের সাথে ইফতার আয়োজন ভালো’র কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করবে। তিনি বলেন, ইফতার আয়োজনের মধ্য দিয়ে ধর্মীয় মূল্যবোধের ক্ষেত্রে আমাদের সম্পর্ক আরো গভীর হবে। বাংলাদেশী খাবার ও আনুষ্ঠানিকতা আমাদের মাঝে বিরাজমান বন্ধন আরো সুদৃঢ় করবে।

ইফতার মাহফিল পূর্ব আলোচনায় বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক এডভোকেট জুমানে উইলিয়ামস। তিনি কমিউনিটির শক্তির ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে বলেন যে কমিউনিটির শক্তিই সিটির শক্তি। আরো বক্তব্য রাখেন অ্যাসেম্বলিম্যান জোহরান মামদানি, সিটি কাউন্সিল মেম্বার নাতাশা উইলিয়ামস ও লিন্ডা লি প্রমুখ। অ্যাসেম্বলিম্যান জোহরান মামদানি অনতিবিলম্বে গাজায় ইসরাইলী হত্যাযজ্ঞ বন্ধের দাবী জানান।

ইফতার মাহফিলে উপস্থিত অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ছিলেন নিউ ইয়র্ক সিটির ডেপুটি কমিশনার ফর ট্রেড ইনভেস্টমেন্ট এনড ইনোভেশনের দিলীপ চৌহান, মেয়রের অফিসে চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার মীর বাশার, ডাইরেক্টর অফ এমসিসি/লিয়াজোঁ কমিউনিটি অ্যাফেয়ার্স ইউনিট মোহাম্মদ বাহি, ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিসের কমিউনিটি কোঅর্ডিনেটর রোকেয়া আখতার, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার ফর স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপস জেসিকা ভিডেস-হার্নান্দেজ. সিটি ডিওয়াইসিডি’র সিনিয়র ডাইরেক্টর নূরুস সালাম, এনওয়াইপিডি’র ডেপুটি ডাইরেক্টর আবদুল্লাহ খন্দকার, এনওয়াইপিডি’র ডেপুটি ইন্সপেক্টর আদিল রানা, এনওয়াইপিডি’র পুলিশ কমিশনার, এনওয়াইসি ওথ কমিশনার আসিম রহমান, সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ওয়াজেদ এ খান, নিউ ইয়র্ক বাংলাদেশ লায়নস ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও সাপ্তাহিক আজকাল সম্পাদক শাহ নেওয়াজ, আইটিভি-র মাওলানা শহীদুল্লাহ, আহাদ আলী সিপিএ প্রমুখ। এছাড়াও এনওয়াইপিডি, জেএমসি, ইউএসবিসিসিআইন, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি, নিউ আমেরিকান ডেমোক্রেটিক ক্লাব, বিওএনওয়াই, এওয়াইএস্এব, বাপা, ডিওয়াইডিসডি, বিপিএল, ডিএইচকেয়ার এর প্রনিধিরা ইফতারে উপস্থিত ছিলেন।

ইফতারের পর মাগরিব নামাজে ইমামতি করেন ইমাম শামসি আলী।

অনুষ্ঠানে কম্যুনিটিতে সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ কয়েকজনকে সম্মানিত করা হয়। মাগরিবের নামাজের পর বক্তব্য রাখেন ড. সুজি ইসমাইল। তিনি ইসলামে কমিউনিটি সেবার গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করেন।

উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সিটিতে করোনা ভাইরাস মহামারি আকারে দেখা দিলে সাধারণ মানুষের মাঝে খাবার ও স্বাস্থ্য রক্ষা সামগ্রী পৌছে দিতে রাস্তায় নামেন ভালো’র একদল তরুণ। করোনাকালে একদিনও ঘরে বসে থাকেনি তারা। “মানুষ মানুষের জন্য” এ শ্লোগান সামনে রেখে জীবনের মায়া পেছনে ফেলে রাস্তায় নেমে আসেন। নিউইয়র্ক, নিউজার্সি ও কানেকটিকাট রাজ্যের অসহায় মানুষের কাছে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য উপকরণ পিপিই প্রদান, ত্রাণ বিতরণ ও আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা।

ডিএইচ কেয়ারের সহযোগিতায় বছর জুড়ে তারা খাদ্য বিতরণ কর্মসূচী চালিয়ে যায় ভালো। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে শুক্রবার জুমার নামাজের পর মসজিদের সামনে খাবার বিতরণ করতে দেখা যায় সংগঠনটিকে। এজন্য একটি খাবারের ট্রাকও ক্রয় করা হয়। ভালো’র মাধ্যমে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচী অব্যাহত রাখা হয়েছে। নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন কমিউনিটির এসব মানুষের পাশে দাঁড়ানোই অলাভজনক এ সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য। বাংলাদেশী আমেরিকান হিউম্যানেটেরিয়ান এইড লিডারশাপ আউটরিচ-সংক্ষেপে “ভালো”র শাহারিয়ার রহমান জানান, ভবিষ্যতে খাদ্য বিতরণ সহ বিভিন্ন ধরণের সেবামূলক কর্মকান্ডে অংশ নিতে সংগঠনটি আগ্রহী এবং এ কাজে কমিউনিটির মানুষের সহযোগিতা পেলে তা আরো ব্যাপকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব।

শেয়ার করুন