আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে সরকারের ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আসবে বলে মনে করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার শুধু ভোট চোরের সরকার নয়, দেশের সব ক্ষেত্রেই তারা চুরি করছে। তাদের এই ভোট চুরি ও নির্বিচারে হত্যার কারণে আমেরিকা আজ নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। আগামীতে ভোট সুষ্ঠু না হলে তারা আর আমেরিকায় ঢুকতে পারবে না। আরও কঠোর নীতি আসবে। তাই এবার আওয়ামী লীগের ভোট চুরি বন্ধে নেতা-কর্মীদের রাজপথে থাকতে হবে।’
শুক্রবার (১৬ জুন) বিকেল সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার ইসলামিয়া সরকারি কলেজ মাঠে এক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি, সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি ও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহবায়ক আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও ফরমায়েশী রায় বাতিলের দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্যায়ভাবে ফরমায়েশের রায়ে আজ ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও আমান উল্লাহ আমানকে সাজা দেয়া হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’ সুষ্ঠু ভোটের দাবিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ শুধু ভিসানীতিতে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা এসেছে। আগামীতে সুষ্ঠু ভোট না হলে ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে সব ক্ষেত্রে আমেরিকায় প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেয়া হবে।
এই এই সরকারের অধীনে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই বাংলাদেশের নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রয়োজন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি আজ মাঠে নেমেছে তাদের অধিকার আদায় করেই তারা ঘরে ফিরবে।’
সরকারের পাচারের কারণে কয়লার টাকা বাকি পড়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের বিদ্যুৎ তৈরির জন্য কয়লা কেনার টাকা আমরা ঠিকই পরিশোধ করি। কিন্তু এই সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে কয়লা কেনার টাকা বাকি ফেলেছে। আজ বিদ্যুৎ নিয়ে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে। সাধারণ মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে।’
প্রশাসনের কর্তাদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার এদেশের শেষ সরকার নয়। আগামীতে এদেশে আরও সরকার গঠন হবে। তাই সবাইকে তার নিজ নিজ জায়গা থেকে সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্রমূলক মামলা’ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের আগেই খালেদা জিয়ার মুক্তি, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও আমান উল্লাহ আমানসহ জাতীয় নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।’
সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি রোমানা মাহমুদের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুদার দুলু। তিনি বলেন, ‘এই সরকারের সময় ফুরিয়ে এসেছে। আমাদের নেতা-কর্মীদের সোচ্চার হতে হবে। বর্ডারে বর্ডারে পাহারা বসানো হবে। যাতে এই স্বৈরাচারী সরকারের কেউ পালাতে না পারে।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চুর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমসহ জেলা বিএনপির নেতারা। সূত্র : দৈনিক বাংলা
সুমি/পরিচয়
