ইউক্রেন ইস্যু, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে ‘ওয়ান আর্থ, ওয়ান ফ্যামিলি, ওয়ান ফিউচার’ শীর্ষক দু’দিনের জি২০ শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয়েছে ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে। এতে অন্য বিশ্বনেতাদের সঙ্গে উপস্থিত আছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক প্রমুখ। তবে এতে উপস্থিত নেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সম্মেলন শুরুর আগে ঋষি সুনাক এবং জো বাইডেনকে কৌতুক করতে দেখা যায়। তারা একে অন্যের দিকে তাকিয়ে মজা করতে থাকেন। হাসতে থাকেন দুই নেতা। চোখে চোখে ভাষা বিনিময় হয়। তা অন্যরা খেয়াল না করলেও ফটোশিকারিদের দৃষ্টি এড়ায়নি। এমনই বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করেছে পশ্চিমা মিডিয়া। অনলাইন ডেইলি মেইল লিখেছে, ঋষি সুনাকের বয়স ৪৩ বছর।

জো বাইডেন ৮০। সম্মেলন শুরুর আগেই তারা নির্ধারিত চেয়ারে বসেন। বসেই দু’জন হাসিতে ফেটে পড়েন। দু’দিনের এই সম্মেলন শেষ হওয়ার কথা রোববার। এ সময়ে বিশ্বের বড় বড় ও জটিল সমস্যা নিয়ে এখানে আলোচনা হওয়ার কথা। জাপান, চীন, কানাডা, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সমমর্যাদার সদস্য রাশিয়াও।

কিন্তু ভারতের এই সম্মেলনে যোগ দেননি ভ্লাদিমির পুতিন। পক্ষান্তরে তিনি প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভকে। গত বছরের সম্মেলনে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দেয়া হয়েছিল। এবার যদি ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন না ঘটে তাহলে সম্মেলনের নেতাদের যৌথ বিবৃতিকে ব্লক করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ। জাতিসংঘ ও তুরস্ক মধ্যস্থতায় শস্যচুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করার কারণে রাশিয়ার সমালোচনা করা হয়েছে বিভিন্ন ফোরামে। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের আগেই ভারতের সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের উপস্থিতিতে ব্যর্থতার জন্য কড়া সমালোচনা করেন ঋষি সুনাক।

তিনি বলেন, আরও একবার জি২০তে নিজের মুখ দেখাতে ব্যর্থ হলেন ভ্লাদিমির পুতিন। কূটনৈতিকভাবে নিজেকে ‘নির্বাসনে’ রাখার ক্ষেত্রে তিনি নিজেই নিজের কারিগর। তিনি নিজেকে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের ভিতরে নিঃসঙ্গ করে রেখেছেন। সমালোচনাকে এবং বাস্তবতাকে ব্লক করে রেখেছেন। জি২০র অন্যরা সবাই এটাই দেখিয়েছি যে, আমরা কাজ করবো একসঙ্গে। পুতিন যা ধ্বংস করেছেন, আমরা তা একত্রিত করবো। ঋষি সুনাকের মুখপাত্র বলেছেন, তিনি শনিবারের সম্মেলনে ইউক্রেন যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে আনা নিয়ে কথা বলার প্রস্তুতি নিয়েছেন। শনিবারের সম্মেলন শেষে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা। এতে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে।

দুইদিনের এই সম্মেলন হচ্ছে ৩০ কোটি ডলারে নির্মিত কোণের আকৃতির কনভেনশন হলো ভারত মণ্ডপে। এটি ষোড়শ শতাব্দীর স্টোন ফোর্টের ঠিক বিপরীতে। এ উপলক্ষে দিল্লিতে সব ব্যবসা, দোকানপাট, অফিস ও স্কুল বন্ধ রয়েছে। সূত্র : মানবজমিন