নিউইয়র্ক     রবিবার, ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ড্রোন ধ্বংস নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের ফোনালাপ, ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার নিয়ে প্রতিযোগিতা

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৩ | ০৩:৩৯ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৩ | ০৩:৩৯ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
ড্রোন ধ্বংস নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের ফোনালাপ, ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার নিয়ে প্রতিযোগিতা

কৃষ্ণ সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন ধ্বংস নিয়ে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শইগুর সঙ্গে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। পুরো ঘটনার জন্য ওয়াশিংটন প্রথম থেকেই মস্কোকে দায়ী করে আসছিল। এর প্রেক্ষিতেই গত ১৫ মার্চ বুধবার মস্কোর সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তবে নির্দিষ্ট করে কী কথা হয়েছে তা সাংবাদিকদের জানাননি তিনি।

রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক বেশ বিরল। তবে কৃষ্ণ সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের একটি দামি এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন ধ্বংসের পর দুই দেশের মধ্যে সরাসরি সংঘাতের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। এরইপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্র। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই তৃতীয় বারের মতো রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের মধ্যে প্রথম কথা হয়।

তবে অস্টিন পেন্টাগনের সংবাদ সম্মেলনে আলোচনার বিষয়বস্তু চেপে গেছেন। তিনি শুধু বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র সম্ভাব্য যে কোনো সংঘাতের বিষয়টিকে খুব গুরুত্ব সহকারে নেয়। এ কারণে রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের রাস্তা খোলা রাখা গুরুত্বপূর্ণ। আমি বারবার বলেছি বড় শক্তিগুলোর উচিৎ স্বচ্ছ হওয়া এবং অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ ধরে রাখা। যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইন মেনে তার ড্রোন ওড়ানো অব্যাহত রাখবে। রাশিয়ারও উচিৎ তাদের সামরিক বিমানকে নিরাপদ ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে পরিচালনা করা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, যা ঘটেছে তা আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় রুশ পাইলটদের আক্রমণাত্মক, ঝুঁকিপূর্ণ এবং অনিরাপদ কর্মকাণ্ডের একটি অংশ। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা আরও বলেছেন যে রাশিয়ার জেটটি সংঘর্ষের আগে ৩০ মিলিয়ন ডলারের ড্রোনটির ওপরে জ্বালানী ফেলেছিল। রাশিয়া ড্রোনটি হয়ত ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করেনি। তবে তাদের আক্রমণাত্মক আচরণ ইচ্ছাকৃত ছিল। এসবের ভিডিও প্রমাণ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে।

ড্রোনটিকে এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এটি এখন ১২১৯ থেকে ১৫২৪ মিটার গভীর পানিতে ডুবে আছে। ফলে এটি উদ্ধার সহজ হবে না। তবে ড্রোনটি উদ্ধারে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কারণ রাশিয়ার হাতে এই ড্রোন পড়লে তা যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর নজরদারি প্রযুক্তিকে হুমকির মুখে ফেলে দেবে। এদিকে রাশিয়া জানিয়েছে, তারা কৃষ্ণ সাগরে বিধ্বস্ত হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের চেষ্টা চালাবে। ১৫ মার্চ বুধবার এই ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ খোঁজার চেষ্টার কথা রাষ্ট্রীয় টিভিতে জানিয়েছেন রাশিয়ার সিকিউরিটি কাউন্সিলের সেক্রেটারি নিকোলাই পাত্রুশেভ। রোশিয়া-১ টিভি চ্যানেলে তিনি বলেন, এটি আমরা উদ্ধার করতে পারব কিনা তা আমি জানি না। কিন্তু একাজ করতেই হবে। আমরা অবশ্যই এটা করব।

হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জন কিরবিও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রও ড্রোনটির অবস্থান শনাক্ত করতে চায়। এটি কখনো উদ্ধার করা সম্ভব না হতে পারে- এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি। তবে কিরবি বলেন, রাশিয়া যদি ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারও করে তাহলেও তারা যাতে এটা থেকে খুব বেশি তথ্য পেতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র কাজ করছে। তাছাড়া ড্রোনটি অনেক গভীর পানিতে পড়ায় এটি উদ্ধার করা কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং হবে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছিল যে, সংঘর্ষের আগে রাশিয়ার জেট বিমানগুলো বেশ কয়েকবার ড্রোনের ওপর জ্বালানি ফেলেছে। পেন্টাগনের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট রাইডার সাংবাদিকদের বলেন, ড্রোনটি ওড়ার অযোগ্য এবং অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে। প্রায় ৩০-৪০ মিনিট ধরে ড্রোনটিকে নানাভাবে উত্যক্ত করে রাশিয়ার দুটি যুদ্ধবিমান। এরপর তারা এটিকে আঘাত করে সমুদ্রে ফেলে দেয়।- আল-জাজিরা।- সুত্র আল জাজিরা

এসএ/এমএএস/এমউএ/টিএ/পরিচয়

শেয়ার করুন