নিউইয়র্ক     সোমবার, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘ইন্ডিয়া’ মুছে মোদিও লিখলেন ‘ভারত’, জল্পনায় নতুন মাত্রা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
‘ইন্ডিয়া’ মুছে মোদিও লিখলেন ‘ভারত’, জল্পনায় নতুন মাত্রা

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর পরে এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সরকারি নথিতে বদলে গেল তাঁদের পদের পরিচয়লিপি। তবে ‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ সরকারি ঘোষণাপত্রে নয়, শাসকদল বিজেপির দেওয়া ‘সরকারি তথ্যে’! বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র মঙ্গলবার তাঁর এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) প্রধানমন্ত্রী মোদীর আসন্ন ইন্দোনেশিয়া সফরের ঘোষণা সংক্রান্ত একটি সরকারি নথি প্রকাশ করেছেন। সেখানে মোদীর পদ লেখা হয়েছে, ‘প্রাইম মিনিস্টার অফ ভারত’। যদিও সরকারি প্রথা অনুযায়ী তাঁর পদটিকে ‘প্রাইম মিনিস্টার অফ ইন্ডিয়া’ লেখা হয়।

আগামী ৭ সেপ্টেম্বর মোদী ইন্দোনেশিয়ায় যাবেন ২০তম ‘আশিয়ান-ইন্ডিয়া শীর্ষ সম্মেলনে’ যোগ দিতে। সরকারি নথিতে অবশ্য ওই সম্মেলনের নামের ক্ষেত্রে ‘ইন্ডিয়া’ শব্দটি রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কূটনৈতিক বিভ্রাট এড়াতেই এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও সরকারি ভাবে এখনও এ বিষয়ে কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার জি২০ শীর্ষবৈঠকে অংশ নেওয়া বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের কাছে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্র প্রকাশ্যে আসার পরেই জল্পনা শুরু হয়, লোকসভা ভোটের আগে দেশের নাম শুধুই ‘ভারত’ করতে চলেছে মোদী সরকার। এ সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধনী বিল পাশের জন্যই আগামী ১৮-২২ ডিসেম্বর সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে বলেও জল্পনা দানা বেঁধেছে।
এর আগে জি ২০ সম্মেলন উপলক্ষে ভারতীয় রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে যে নৈশ্যভোজের আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে তাতে ইংরেজিতে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’র পরিবর্তে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’ লেখা হয়েছে।

বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, কেন্দ্রের সরকার সংবিধান অমান্য করে দেশের নামও পরিবর্তন করে দিচ্ছে। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতেই বিরোধী দলগুলো এক ছাতার নিছে এসেছে। বিজেপি বিরোধী জোটের নাম ইন্ডিয়া। জোটের এই নামকরণের পর কম হয়নি রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্ক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এ নিয়ে সরব হতে দেখা গেছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, লোকসভা ভোটে ইন্ডিয়া জোট মোদি সরকারকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে চলেছে বলে বিশ্বাস বিরোধীদের। বিরোধীদের পাল্টা চাপে রাখতে তড়িঘড়ি ইন্ডিয়ার পরিবর্তে ভারত নামকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে হিন্দুবাদীরা। সেই ইঙ্গিত মিলল রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে জারি করা জি ২০ সম্মেলনে নৈশ্যভোজের আমন্ত্রণপত্রে। এই আমন্ত্রণপত্র ঘিরে ইতিমধ্যেই তোলপাড় শুরু হয়েছে ভারতীয় রাজনীতিতে।

এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। এক্স-বার্তায় তিনি লিখেছেন, এনডিএ সরকারের পদক্ষেপ নিন্দাজনক। তিনি লেখেন, খবর আসলেই সত্য। ৯ সেপ্টেম্বর আয়োজিত জি ২০ সম্মেলনের নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবন। তাতে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’র পরিবর্তে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’ লেখা হয়েছে।

দেশের নাম হিসেবে শুধু ‘ভারত’ ব্যবহারের পক্ষে বিজেপি। তাদের দাবি, ‘ইন্ডিয়া’ শব্দটি বিদেশী। ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটলেও রয়ে গেছে এই নাম। এবার দেশের নামের মধ্যেও নিজস্বতা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের ছোঁয়া ধরে রাখতে বিজেপি সাংসদ হরনাথ সিং যাদব দেশের নাম পাকাপাকি ভাবে ‘ভারত’ করার প্রস্তাব দেন। পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশন ডাকার সঙ্গে সঙ্গে ভারতের সংবিধান থেকে ‘ইন্ডিয়া’ শব্দটি বাদ দেওয়ার দাবি আরও জোরদার হয়েছে। সূত্র: পিটিআই

শেয়ার করুন