নিউইয়র্ক     সোমবার, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অন্যের সমালোচনার আগে নিজেদের গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত করুন – যুক্তরাষ্ট্রকে ওবায়দুল কাদের

বাংলাদেশ ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৩ | ১২:০৭ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৩ | ১২:১২ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
অন্যের সমালোচনার আগে নিজেদের গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত করুন – যুক্তরাষ্ট্রকে ওবায়দুল কাদের

যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক মানবাধিকার প্রতিবেদনের কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অন্যের সমালোচনার আগে নিজেদের গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত করুন। বিশ্বের কোনো দেশেই গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত নয়। তাদের দেশেও ত্রুটিমুক্ত নয়। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ পর্যন্ত পরাজয় স্বীকার করেননি বলেও এ সময় মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজধানীর বংশালে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্কুল মাঠে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী যুবলীগের বংশাল ও কোতোয়ালি থানার ৫টি ওয়ার্ডের ইউনিটসমূহের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে আজ মঙ্গলবার তিনি এ কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের কাছে অবাধ ও সুষ্ঠু বলে বিবেচিত হয়নি। ওই নির্বাচনে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরানো, বিরোধী দলের প্রার্থীদের এজেন্ট ও ভোটারদের ভয় দেখানোসহ নানা অনিয়মের খবরে পর্যবেক্ষকেরা এ ধারণা পোষণ করেন। ‘২০২২ কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাকটিসেস’ শীর্ষক এই প্রতিবেদন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে গত সোমবার (২০ মার্চ) প্রকাশ করা হয়।

মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশে গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত নয়। যারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলে তাদের দেশেই গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত নয়। তিনি বলেন, বিএনপি যতই নালিশ করুক, বিদেশিদের কথায় বাংলাদেশের মানুষ ভোট দেবে না। সেতুমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র হঠাৎ করে একটা প্রতিবেদন দিল, গত নির্বাচন নাকি অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। বিরোধীদলের কর্মসূচিতে নাকি আমরা বাধা দেই। নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উদ্দেশে আমার প্রশ্ন, পৃথিবীর কোন দেশে গণতন্ত্র সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত? আমরাও শতভাগ পারফেক্ট নই। এখানে আমরা সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত নই। কিন্তু যেটাকে আপনারা ত্রুটিমুক্ত বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য দল জিততো? এই সত্যটা স্বীকার করেন না। গণতন্ত্রের ত্রুটি দেশে-দেশে আছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে কাদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ পর্যন্ত পরাজয় স্বীকার করেননি। অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার আগে, এ কথা কি ভুলে যান? নিজের ঘরের চিত্রটা দেখুন, কীভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের নির্বাচনের বিরুদ্ধে ক্যাপিটাল হিলে দাঙ্গা বাধিয়ে পাঁচটি প্রাণ রক্তাক্ত হয়ে ঝরিয়েছেন। সেই ইতিহাস আমরা কিন্তু ভুলিনি। তিনি বলেন, আপনাদের (যুক্তরাষ্ট্রের) হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভের স্পিকার নির্বাচন করতে ‘১৫ বার’ (ভোট) লেগেছে। স্পিকার নির্বাচন করতে ‘১৫ বার’ ভোট করতে হয়েছে। গণতন্ত্র কোথাও ত্রুটিমুক্ত নয়। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন এক সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে ছিল। আইন করে নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করা হয়েছে। এসব পদেক্ষেপের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ত্রুটিমুক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা চেষ্টা করছি। রাতারাতি কিছু হবে সেটা আমরা বলছি না, আমাদের চেষ্টা আছে, আমাদের গণতন্ত্র ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার। ক্রমাগত আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা ক্রমান্বয়ে ত্রুটিমুক্ত করছি, আমরা রিফর্ম করছি, নির্বাচন কমিশন আইন করেছি।বিরোধীদলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে না দাবি করে কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের এতগুলো শান্তি সমাবেশ হল, কোনো মিটিং মিছিল থেকে কি বাধা দেওয়া হয়েছে। তাহলে এই অবান্তর অভিযোগ কেন দেওয়া হচ্ছে? এই অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। তিনি বলেন, বিএনপির এখন কোনো কাজকর্ম নেই। লবিস্ট নিয়োগ করে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিদেশিদের দ্বারে ধরনা দিয়ে নালিশ করা- এটা হচ্ছে তাদের কাজ।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হয়েছে। সুষ্ঠু ভোট হলে শেখ হাসিনা আবারও বিজয়ী হবেন। বিএনপির আন্দোলন কাঁদায় আটকে গেছে। আন্দোলনের এ গাড়ি আর উঠবে না। তাদের আন্দোলনে জনগণ নেই। নেতাকর্মীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তাদের এখন অবলম্বন ষড়যন্ত্র, নাশকতা ও চোরাগোপ্তার পথ। সেই প্রস্ততি নিচ্ছে বিএনপি। এর আগে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ সম্মেলন উদ্বোধন করেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দীন রানার সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, মৃনাল কান্তি জোদ্দার, ড. রেজাউল কবির, এহতাসামুল হাসান ভূইয়া রুমি, রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ।

শেয়ার করুন