খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের উদ্দেশ্যেই আজকের এই সমাবেশ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতাসীনরা রিজার্ভ চিবিয়ে খাননি, গিলিয়েই ফেলেছেন। বাংলাদেশ থেকে গত ১০ বছরে ৮৬ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। এ সময়ে ক্ষমতায় কারা ছিলেন। তারা বিদ্যুতের দাম তারা আবার বাড়িয়েছে। ক্ষমতাসীনদের প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আর কত বাড়াবেন? একটা জিনিসও নাই, যেটার দাম বাড়ানো হয়নি। কারো বেতন বাড়েনি। ওদের টাকা বেড়েছে। ওরা ফুলে মোটা হয়ে গেছে। কোথাও কিছু রাখেনি। কেউ ন্যায় বিচার পায় না।
আজ শনিবার (২৬ নভেম্বর) কুমিল্লা টাউন হল প্রাঙ্গণে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় তিনি বলেন, বিএনপির সবার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যেভাবে খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে তা ইঙ্গিত দিচ্ছে- তারা এ দেশকে কারান্তরীণ করে রেখেছে। আমরা বলতে চাই, নতুন কমিশন গঠন করে নির্বাচন দিতে হবে। নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া কেউ নির্বাচনে যাবে না।
গুমের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ভুক্তভোগীদের পরিবার আর তাদের খোঁজ করেন না। ক্ষমতাসীনরা এতো ভয়ংকর হয়ে গেছে। তারা পাশবিক হয়ে গেছে। তিনি বলেন, তারেক রহমান বলেছেন, টেক ব্যাক বাংলাদেশ। কোন বাংলাদেশ? যে বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা একাত্তরে দেখেছেন।
তিনি আরো বলেন, আমি দুঃখ ভারাক্রান্তে বলছি, বিনা কারণে আমাদের ভাই, আমাদের ছেলেকে হত্যা করেছে ক্ষমতাসীনরা। আজকে সমগ্র বাংলাদেশে শোকের আগুন। আজ তারা দেশের মানুষকে ভাতে মারছে, পানিতে মারছে। আজ দেশের মানুষ এই জালিম সরকারের পতন চায়।
কুমিল্লা নিয়ে এ নেতা বলেন, এই কুমিল্লা মেধার জায়গা। এই কুমিল্লায় বড় বড় গুণী মানুষের জন্ম হয়েছে। আমি বলতে চাই আখতার হামিদ খানের কথা। যিনি তিন ফসলের চাষ শিখিয়েছেন। আপনারা সেই ইতিহাসের সেই গৌরবময় ধারক। আমি স্মরণ করতে চাই অলি আহাদ, কাজী জাফর, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁকে।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা জোর করে দুইবার নির্বাচন করেছে। ২০১৪ সালে কেউ ভোট দিতে যায়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালটবক্স ভর্তি করেছেন তারা। শেখ হাসিনা নাকি আবার নির্বাচন করতে চান। ভুলে যান, এসব ভুলে যান। আব্বাস উদ্দিনের গানের কথা বলে ফখরুল বলেন, আগে জানলে তোর ভাঙা নৌকায় চরতাম না। মানুষ আর ভাঙা নৌকায় চড়বে না। সময় থাকতে আগে আগে কেটে পড়ুন।
তিনি বলেন, আমরা একটি সুখী, সমৃদ্ধ, প্রেমময় বাংলাদেশ দেখার জন্য এ দেশ স্বাধীন করেছিলাম। কিন্তু আজ আবার এই দেশে প্রহসন চলছে। আপনারা ক্ষমতায় এসে যেমন খুশি তেমন চুরি করবেন। অত্যাচার করার পর লজ্জাও নেই, শরমও নেই। এদের চামড়া গণ্ডারের মতো মোটা হয়ে গেছে। ১০ তারিখের সমাবেশ বন্ধ করার জন্য বিএনপি কর্মীদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে মামলা দায়ের করছে তারা। ঘরে ঘরে রেইড দিচ্ছে ক্ষমতাসীনরা। কিন্তু ঢাকার সমাবেশ বন্ধ করা যাবে না। যেমনটা আগের সমাবেশ বন্ধ করা যায়নি। তারা আগে বলেছিল, ঢাকায় সমাবেশ করা যাবে না। এরপর পূর্বাচল থেকে সোহরাওয়ার্দী আসলেন। একটু এগিয়ে এবার পল্টনে আসুন। সূত্র : সাম্প্রতিক দেশকাল