নিউইয়র্ক     মঙ্গলবার, ১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সমালোচনায় বিরক্ত সাকিব, নিউ ইয়র্কে বসে নিজের অবস্থান পরিস্কার করলেন

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | ০৪:০৭ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | ০৪:০৭ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
সমালোচনায় বিরক্ত সাকিব, নিউ ইয়র্কে বসে নিজের অবস্থান পরিস্কার করলেন

Screenshot

দেশের খেলা বড় নাকি ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলাটা বেশি প্রয়োজন? জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরুতে না খেলে ঢাকা লিগ খেলবেন সাকিব আল হাসান, বিষয়টি সামনে আসার পর এমন আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। তাতে বর্তমানে সাকিব পরিবারের সঙ্গে অবস্থান করছেন যুক্তরাষ্ট্রে।গত ২৪ এপ্রিল বুধবার রাতে নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের শেফ মহল রেষ্টুরেন্টে শোটাইম মিউজিক এর আয়োজনে এবং আলমগীর খান আলমের সঞ্চালনায় এক মীট এন্ড গ্রীট অনুষ্ঠানে সাকিব তাঁর অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। অবান্তর সমালোচনায় প্রকাশ করেন বিরক্তি। নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সাকিব জানান, কোচ-অধিনায়ক-নির্বাচক সবার সঙ্গে আলোচনা করেই নেওয়া হয়েছে সিদ্ধান্ত।

‘জিম্বাবুয়ে সিরিজে অবশ্যই খেলব। দেশে হয়তো এ নিয়ে একটা কনফিউশন (দ্বিধা) চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটা নিয়ে কথা চলছে যে আমি জিম্বাবুয়ে সিরিজে শুরু থেকে খেলব না, ডিপিএল খেলব…আসলে কোচ, অধিনায়ক সবার সঙ্গে আগে কথা বলে রেখেছিলাম।’

‘কোচ বলেছিলেন দুটো ম্যাচ খেললেই হবে। এরপর অধিনায়ক ও নির্বাচকদের সঙ্গে কথা বলি, তারা বলেছে দুটো না তিনটা ম্যাচ খেলো, তাহলে আমাদের জন্য ভালো হয়। আমি বলেছি সমস্যা নেই। এটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে, যেটা নিয়ে দেশে এত কনফিউশন দেখতে পাচ্ছি। খুবই অবান্তর আলোচনা’-আরও যোগ করেন সাকিব।

 

২৩ এপ্রিল জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য ১৭ জনের প্রাথমিক দল ঘোষণা করে বাংলাদেশ। এই দল ২৪ এপ্রিল থেকে চট্টগ্রামে রুদ্ধধার অনুশীলন করবে তিনদিন। সাকিব এখানে না থাকায় মূলত শুরু হয় আলোচনা। এরপর সংবাদমাধ্যমে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু জানান সাকিব ঢাকা লিগ খেলবেন দেশে ফিরে। এরপর যোগ দেবেন দলের সঙ্গে।

‘আসলে এগুলো আলোচনার মাধ্যমেই হয়, আমার ইচ্ছামতো হয় না। যেহেতু ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দুটি ম্যাচ থাকবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ তিন ম্যাচ খেলার আগে। সেহেতু দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগ থাকবে, এ ছাড়া প্রস্তুতিটাও ভালো হবে। সে কারণে আসলে এই দুইটা ম্যাচ খেলা। এখানে এর বেশি নাই।’

জিম্বাবুয়ে সিরিজে টিম ম্যানেজম্যান্ট চাইছে বিকল্প ক্রিকেটার তৈরি করে রাখতে। সাকিব না থাকলে তার পরিবর্তে ভিন্ন কাউকে দেখার সুযোগ তৈরি হবে। সাকিবের কণ্ঠেও একই সুর, ‘আমাদের অন্যান্য খেলোয়াড়দেরও দেখা জরুরি। বিভিন্ন ধরনের কম্বিনেশন তৈরি করতে হলে আমাদের কী অবস্থায় থাকতে হবে, সে প্রস্তুতিটা নিতে পারি।’

বিশ্বকাপে বাংলাদেশ কেমন করতে পারে এমন প্রশ্নে সাকিব আশা করেন বিশ্বাস নিয়ে খেলতে পারলে তারা ভালো করবেন। টাইগার অলরাউন্ডার বলেন, ‘বিশ্বকাপ পাওয়ার মতো অবস্থায় আসছি কি না, এটা বলাটা একটু মুশকিল। তবে টি-টোয়েন্টিতে যে কেউ যে কাউকে হারাতে পারে, বড় ছোট দল নেই। আমাদের বিশ্বাসটা দরকার, ওই বিশ্বাসটা নিয়ে যদি খেলতে পারি, আমরা ভালো করব। বলছি না, ট্রফি জিততে পারব কি পারব না।

তবে আমাদের ভালো কিছুর সম্ভাবনা আছে। আমরা যদি মোমেন্টাম পেয়ে যাই এটা ধরে রাখতে পারি। খুব বেশি কিন্তু ম্যাচ জিততে হয় না ভালো কিছু করতে।’

এবারের আসরে ‘ডি’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গী শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, নেদারল্যান্ডস ও নেপাল। সবমিলিয়ে টাইগারদের এটা কঠিন গ্রুপ। তবে গ্রুপ কঠিন হলেও যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কন্ডিশন, দুই দেশের উইকেট বিবেচনায় বাংলাদেশ সুবিধা পেতে পারে বলে মনে করেন সাকিব।

তিনি বলেন, ‘যদিও আমরা কঠিন গ্রুপে। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে আসলে দলগুলোর পার্থক্য খুব কম হয়। যেকোনো দিন যেকোনো দল যে কাউকে হারিয়ে দিতে পারে। অবশ্যই কঠিন প্রতিযোগিতা হবে। তবে আমার মনে হয় কন্ডিশন যেমন হবে সেটা আমাদের সহায়তা করবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ আমাদের (খেলার) সঙ্গে বেশ মানানসই। একই ধরনের পিচ (বাংলাদেশের মতো) আমরা পেতে পারি। বিশেষ করে ডালাসে।’

বিশ্বের যে প্রান্তেই বাংলাদেশের খেলা হয়, সমর্থনের অভাব হয় না। সাকিবের আশা এই বিশ্বকাপেও প্রচুর সমর্থন পাবেন। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের হয়তো সহায়তা করবে। আমি জানি না নিউইয়র্কের পিচ কেমন হবে। আশা করছি প্রচুর সমর্থন পাব। ভালো করি, খারাপ করি আপনাদের অনেক সমর্থন পাব, এটাই আমার আশা। সমালোচনাও করতে পারেন, সমস্যা নেই। আমি মনে করি, আমরা আপনাদের ভালোবাসা ও সমর্থনের প্রতিদান দিতে পারব।’

এর আগে ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হয় অস্ট্রেলিয়ার। সাকিবের নেতৃত্বে সেবার সেমিফাইনালে উঠতে না পারলেও প্রথমবার কোনো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২টি জয় পায় টাইগাররা। নেদারল্যান্ডস ও জিম্বাবুয়েকে হারানো টাইগারদের জয়ের সুযোগ ছিল ভারতের বিপক্ষেও। কিন্তু লিটন দাসের ২৭ বলে ৬০ রানের অতিমানবীয় ইনিংসের পরও হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে সাকিব আল হাসানের দল। তবে এবার আরও ভালো ফলাফল করা সম্ভব বলে মনে করছেন সাকিব।

এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের সেই সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল সাকিব আল হাসানের দল। ৩ ম্যাচের সিরিজে ৩ উইকেট এবং ব্যাট হাতে ১০৩ রান নিয়ে সিরিজ সেরা হন সাকিব। এবারও এখানে ভালো করতে চান বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক। সাকিব বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতিটা আশা করি বেশ ভালো হবে। এর আগে যখন আমরা এখানে খেলেছি প্রচুর সমর্থন পেয়েছি। আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওই সময় সিরিজ জিতেছিলাম। আশা করি এবারও ওরকম ভালো কিছু করতে পারব আমরা। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমাদের পারফরম্যান্স অনেক ভালো ছিল। ওখান থেকে যদি আরেকটু উন্নতি করতে পারি আমার মনে হয় এবার আমাদের আরো ভালো করার সম্ভাবনা আছে।’

এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ৮ই জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। গত মাসে ঘরের মাঠে এই দলের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছে টাইগাররা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ ১০ই জুন। ১৩ই জুন নেদারল্যান্ডস ও ১৭ই জুন টাইগাররা নেপালের বিপক্ষে মাঠে নামবে।

শেয়ার করুন