নিউইয়র্ক     শুক্রবার, ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানি সাংবাদিকের মৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২২ | ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২২ | ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
পাকিস্তানি সাংবাদিকের মৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য

কেনিয়ায় গুলিতে নিহত পাকিস্তানি সাংবাদিক আরশাদ শরিফের মৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। আরশাদ শরিফ কীভাবে নিহত হয়েছেন, সে ব্যাপারে কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন কেনিয়ার অনুসন্ধানী সাংবাদিক ব্রায়ান অবুয়া। এতে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে রজস্য আরও ঘনীভূত হলো।

এক টুইটারে সাংবাদিক ব্রায়ান ওবুয়া বলেন, আরশাদ শলিফ যে গুলির আঘাতে নিহত হয়েছেন সেটি নির্ভুলতার সঙ্গে তার গাড়ির সামনের আয়না দিয়ে ছোড়া হয়। গুলিটি তার মাথার পেছন ভাগ দিয়ে প্রবেশ করে এবং সামনের দিক দিয়ে বের হয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, শরিফ যে গাড়িতে যাচ্ছিলেন সেটিতে সবমিলিয়ে নয়টি গুলি করা হয়। যার মধ্যে চারটি বাঁ পাশে ছোড়া হয়। আরেকটি গাড়ির ডান পাশের চাকায় আঘাত করে। এদিকে আরশাদ শরিফের মুত্যু নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পাকিস্তানের একটি তদন্তকারী দল। দলটি ইতোমধ্যে কেনিয়ার পুলিশের সঙ্গে হত্যাকাণ্ড নিয়ে বৈঠক করেছে।

সাংবাদিক আরশাদ শরিফ দুই মাস আগে পাকিস্তান থেকে পালিয়ে আফ্রিকার দেশ কেনিয়ায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে গত ২৩ অক্টোবর গুলিতে নিহত হন তিনি। সেদিন রাতে এক টুইটার বার্তায় আরশাদ শরিফের স্ত্রী জাভেরিয়া সিদ্দিক স্বামীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমি আজ আমার বন্ধু, স্বামী ও খুবই প্রিয় একজন সাংবাদিককে হারালাম। পুলিশের তথ্য মতে, তাকে কেনিয়ায় গুলি করা হয়েছে।’

কেনিয়ার গণমাধ্যম স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে জানায়, গুলির ঘটনা ‘ভুলবশত’ ঘটেছে। তবে কেনিয়ার পুলিশ ও গণমাধ্যমের এ তথ্য নিয়ে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের সন্দেহ তৈরি হয়। দেশটির সাংবাদিক মহল ও মানবাধিকার সংস্থা কেনিয়া সরকারের কাছে এ ঘটনার স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করে তা দ্রুত প্রকাশ করার দাবি জানায়।

সে সময় সাংবাদিক ব্রায়ান ওবুয়া জানান, পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী যেখানে গুলির ঘটনা ঘটে সেখান থেকে অন্তত ৭৮ কিমি দূরের একটি মর্গে আরশাদের মরদেহ পাওয়া যায়। এর মধ্যে নেশন মিডিয়া গ্রুপে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আরেকজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক জানিয়েছেন, আরশাদ শরীফের গাড়ির ভেতর থেকে পুলিশ সদস্যদের দিকে গুলি ছোড়া হয়।

আরশাদ শরিফ পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কড়া সমালোচক এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বড় সমর্থক ছিলেন। ইরমান খান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা তাকে (শরিফ) হয়রানি করে আসছিল বলে তিনি অভিযোগ করেন।

ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী শাহবাজ গিলের একটি সাক্ষাৎকার গ্রহণ ও তার প্রকাশ করায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাসহ তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি হয়রানিমূলক মামলা দেয়া হয়। ওই সাক্ষাৎকারে সেনাবাহিনী নিয়ে শাহবাজ আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে হয়রানি ও মৃত্যুর হুমকির মুখে গত আগস্ট মাসে দেশ ছাড়েন ৪৯ বছর বয়সী এই সাংবাদিক। প্রথমে যুক্তরাজ্য, সেখান থেকে দুবাইয়ে, এরপর কেনিয়া যান তিনি।

দেশ ছাড়ার আগ পর্যন্ত পাকিস্তানি টিভি চ্যানেল এআরওয়াই নিউজে কাজ করতেন আরশাদ। ‘মিথ্যা, বিদ্বেষপূর্ণ ও রাষ্ট্রদ্রোহী’ সংবাদ সম্প্রচারের অভিযোগে গত আগস্ট মাসে টিভির সম্প্রচারও সাময়িক বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।

শেয়ার করুন