নিউইয়র্ক     রবিবার, ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় : ছাগল বাঁচাতে গিয়ে বাবা-ছেলের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২৩ | ১২:৪৬ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১৬ জুন ২০২৩ | ১২:৪৬ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় : ছাগল বাঁচাতে গিয়ে বাবা-ছেলের মৃত্যু

ঘূর্ণিঝড়ের জেরে গুজরাটে বহু গাছ ভেঙে পড়েছে

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় আঘাত হেনেছে ভারতের গুজরাট উপকূলে। আরব সাগরে সৃষ্ট এই ঘূর্ণিঝড় কার্যত ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় এই রাজ্যটিতে। আর এর মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে সৃষ্ট বন্যায় আটকে পড়া ছাগল বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন দু’জন। সম্পর্কে তারা বাবা ও ছেলে। শুক্রবার (১৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের জেরে গুজরাটের বেশ কয়েকটি অংশে ভারী বর্ষণ হয়েছে এবং এর ফলে রাজ্যটির ভাবনগর জেলায় প্লাবিত উপত্যকায় আটকে থাকা ছাগল বাঁচাতে গিয়ে বৃহস্পতিবার বাবা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। এনডিটিভি বলছে, বৃহস্পতিবার গুজরাট উপকূলে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। আর এরই জেরে ভাবনগরসহ গুজরাটের বেশ কয়েকটি অংশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। স্থানীয় রাজস্ব কর্মকর্তা এস এন ভালা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টিপাতের পর সিহোর শহরের কাছে ভান্ডার গ্রামের মধ্য দিয়ে যাওয়া একটি গিরিখাতে পানি প্রবাহিত হতে শুরু করে। তিনি বলেন, ‘আচমকা পানির প্রবাহের কারণে এক পাল ছাগল ওই খাদে আটকে যায়। এসব গবাদি পশুদের বাঁচাতে ৫৫ বছর বয়সী রামজি পারমার ও তার ছেলে রাকেশ পারমার (২২) উপত্যকায় ঢুকে পড়ে। তবে পানির স্রোতে তারা ভেসে যায়। পরে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।’

গিরিখাতে আটকে পড়া ২২টি ছাগল এবং একটি ভেড়াও সেসময় মারা গেছে বলে জানান এস এন ভালা। এছাড়া গুজরাট রাজ্যে অন্য কোথাও ঘূর্ণিঝড়-সম্পর্কিত মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কালেক্টর অমিত অরোরা বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল হচ্ছে কচ্ছ জেলা। তবে সেখানেও মৃত্যুর কোনও খবর পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আগে থেকে যে গণহারে বহু মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছিলাম। ঘূর্ণিঝড়ের কোনও ঘটনার কারণে কচ্ছে এখনও পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি। ঘণ্টায় প্রায় ৮০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যাওয়ার কারণে কিছু গাছ এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে গেছে।’ এদিকে উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় গুজরাট রাজ্যে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। রাজ্যটিতে পাঁচ শতাধিক গাছ ভেঙে পড়েছে। এছাড়া বিপর্যয়ের জেরে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে প্রায় এক হাজার গ্রাম।

এনডিটিভির পৃথক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুজরাটে ‘অতি তীব্র’ ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় আঘাত হানার পর বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছ উপড়ে পড়ে রাজ্যটিতে অন্তত ২২ জন আহত হয়েছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়টি রাজস্থানের দিকে এগোচ্ছে এবং সন্ধ্যা নাগাদ এটি দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এছাড়া গুজরাট রাজ্যে আঘাত হানার সময় প্রবল বৃষ্টির সাথে দমকা হাওয়ার সৃষ্টি হয়। রাজ্যের কর্মকর্তাদের মতে, গুজরাটের বিভিন্ন স্থানে ৫২৪ টিরও বেশি গাছ এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। একইসঙ্গে বিপর্যয়ের আঘাতের পর প্রায় ৯৪০ গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। তবে পানিতে ডুবে বাবা-ছেলের মৃত্যু ছাড়া রাজ্যটিতে এখন পর্যন্ত আর কোনও প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।

এসএ/এমএএস/এমইউএ/টিএ/পরিচয়

শেয়ার করুন