নিউইয়র্ক     বুধবার, ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শহীদ মিনারে ডা. জাফরুল্লাহকে শ্রদ্ধা জানানো হবে আজ

বাংলাদেশ ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২৩ | ১১:৪২ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৩ | ১১:৪৮ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
শহীদ মিনারে ডা. জাফরুল্লাহকে শ্রদ্ধা জানানো হবে আজ

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ছবি : সংগৃহীত

সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ আজ বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে। একই সঙ্গে সেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবেও তাকে সম্মান জানানো হবে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আজ দুপুর আড়াইটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

গতকাল বুধবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গণস্বাস্থ্য ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন এবং শ্রদ্ধা নিবেদন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. আলতাফুন্নেসা। এদিকে একাত্তরের রণাঙ্গনের সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা।

তার মৃত্যুতে রুহের মাগফিরাত কামনা করে এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে তারা বলেছেন, ডা. জাফরুল্লাহ এ দেশের গণমানুষের সংগ্রামের মাঝে বেঁচে থাকবেন। তিনি অসীম সাহসে সাদাকে সাদা বলতেন। ভয়ভীতি উপেক্ষা করে সত্যের পথে অবিচল ছিলেন। তারা বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ ছিলেন অসহায় গরিব মানুষের জন্য বটবৃক্ষ। তার মৃত্যুতে দেশের উজ্জ্বল নক্ষত্র খসে পড়ল এবং অপূরণীয় ক্ষতি হলো। বাংলাদেশের ইতিহাস যতদিন থাকবে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নাম ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার মৃত্যুর খবরে হাজার হাজার মানুষ শোক জানিয়েছেন। তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণাও করছেন অনেকে।

গত মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাতে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে মারা যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। গত কয়েক দিন তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তার মরদেহ এখন রাখা আছে বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে। জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুর খবর শুনে মধ্যরাতে হাসপাতালে ছুটে যান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। তার শুভান্যুধায়ীরাও হাসপাতালে ভিড় করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী শিরিন হক, মেয়ে বৃষ্টি চৌধুরী এবং ছেলে বারিশ চৌধুরীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

অধ্যাপক ডা. আলতাফুন্নেসা বলেন, আগামীকাল শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সকাল ১০টায় ডা. জাফরুল্লাহর মরদেহ নেওয়া হবে সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে। জুমার নামাজ শেষে সেখানে তার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য, একাত্তরে ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে মুক্তিযোদ্ধাদের সেবায় আত্মনিয়োগকারী জাফরুল্লাহর বড় অবদান ছিল জাতীয় ওষুধ নীতি প্রণয়নে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তুলে কম খরচে দরিদ্রদের চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করায়ও তার অবদান স্মরণ করা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপ্রধান গতকাল বুধবার এক শোকবার্তায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ওষুধ শিল্প ও জনস্বাস্থ্য খাতে ডা. জাফরুল্লাহর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে এক শোকবার্তায় নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বলেন, সেদিন অস্ত্র হাতে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মতো সাহসী সূর্যসন্তানরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান অতুলনীয়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমিও তার বিদেহী আত্মার প্রতি সম্মান জানাচ্ছি।

গভীর শোক প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর সেনানি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আজীবন দেশ, জাতি ও জনগণের কল্যাণে অবদান রেখেছেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত স্পষ্টবাদী। রাষ্ট্রের সব সংকটে তিনি এগিয়ে এসেছেন অকুতোভয় সৈনিক হিসেবে। দেশ ও জনগণের কল্যাণে তার বলিষ্ঠ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে জিয়াউর রহমান তাকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করেন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন প্রকৃত বীর। তার সারাটা জীবনই বীরত্বগাথা। দেশের প্রতি অসীম ভালোবাসা ছিল তার। তিনি অসীম সাহসে সাদাকে সাদা বলতেন। ভয়ভীতি উপেক্ষা করে সত্যের পথে অবিচল ছিলেন। তার মৃত্যুতে জাতি দেশপ্রেমিক এক অভিভাবক হারাল। তার শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়।

এছাড়াও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পরিবেশ মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণফোরামের অপর অংশের সভাপতি সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান, গণ-অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, জনস্বার্থে বাংলাদেশ, ১২ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ এবং গণস্বাস্থ্য পরিবার, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও সহযোগী সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। সূত্র : সাম্প্রতিক দেশকাল

এসএ/এমএএস/এমউএ/টিএ/পরিচয়

শেয়ার করুন