নিউইয়র্ক     বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুদ্ধে সত্যিই কি অগ্রগতি হচ্ছে ইউক্রেনের?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১২:০৭ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১২:০৭ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
যুদ্ধে সত্যিই কি অগ্রগতি হচ্ছে ইউক্রেনের?

রবোটাইন গ্রামের কাছে ধ্বংসপ্রাপ্ত ট্যাংকের সামনে ইউক্রেনীয় সেনা- গেটি ইমেজ/বিবিসি

রাশিয়ার আক্রমণের পর দেড় বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে যুদ্ধ চলছে। দুই পক্ষই মাঝে মাঝে নিজেদের অগ্রগতি দাবি করে। তবে সেসবের সত্যতা ও যুদ্ধক্ষেত্রের বাস্তব চিত্রের খুব বেশি জানা যায় না। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে যে, দক্ষিণ ইউক্রেনে রাশিয়ার শক্ত প্রতিরোধের মুখেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনীর। যুক্তরাষ্ট্র সরকার বলছে, দক্ষিণ ইউক্রেনে রাশিয়ার গড়ে তোলা দুর্ভেদ্য প্রতিরক্ষাব্যূহের বিরুদ্ধে যে অভিযান চালাচ্ছে কিয়েভের বাহিনী- তাতে তারা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে বিবিসি।

হোয়াইট হাউজের নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কারবি বলেন, জাপোরিশার দক্ষিণে গত ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধে এসব অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা সিএনএনকে বলেছেন, কিয়েভের বাহিনী সামনে এগোচ্ছে কিন্তু এর জন্য কঠিন লড়াই করতে হচ্ছে। ইউক্রেনের দক্ষিণে রাশিয়া বহুসংখ্যক সুড়ঙ্গ ও পরিখার এক জাল তৈরি করেছে এবং সংলগ্ন এলাকায় মাইন পেতে সেগুলোকে সুরক্ষিত করেছে। সেখানে কামান বসানো হয়েছে এবং কংক্রিটের ট্যাংক-প্রতিরোধী ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে – যার নাম দেয়া হয়েছে ড্রাগনের দাঁত।

অন্যদিকে রাশিয়া দাবি করছে যে, তারা উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনের কুপিয়ানস্ক শহরের কাছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি মালভূমি দখল করেছে। তবে এসব দাবির কোনটিই নিরপেক্ষ সূত্র থেকে যাচাই করা যায়নি। কারবি বলেন, কিয়েভ স্বীকার করেছে যে দক্ষিণ দিকে তারা যে অভিযান চালাচ্ছে তা তাদের প্রত্যাশার চাইতে ধীরগতিতে এগোচ্ছে। এই অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল ক্রিমিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে থাকা স্থল-করিডোরটিকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা। মার্কিন মুখপাত্র বলেন, রাশিয়ার রক্ষণব্যূহের দ্বিতীয় স্তরটির বিরুদ্ধে ইউক্রেন কিছু সাফল্য পেয়েছে।

এর আগের সপ্তাহে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলেছিল যে, তারা জাপোরিশা অঞ্চলের রবোটাইন গ্রামটি পুনর্দখল করেছে। অন্যদিকে উত্তর-পূর্বে খারকিভের পূর্ব দিকে ইউক্রেন যেসব এলাকা মুক্ত করেছিল – সেগুলো আবার দখল করার জন্য রাশিয়া সেনা সমাবেশ করছে। ইউক্রেনের দক্ষিণে রাশিয়া বহুসংখ্যক সুড়ঙ্গ ও পরিখার এক জাল তৈরি করেছে এবং সংলগ্ন এলাকায় মাইন পেতে সেগুলোকে সুরক্ষিত করেছে। সেখানে কামান বসানো হয়েছে এবং কংক্রিটের ট্যাংক-প্রতিরোধী ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে – যার নাম দেয়া হয়েছে ড্রাগনের দাঁত।

ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা ইউক্রেন তার পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো থেকে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া এবং সেনা ব্যাটালিয়ন গড়ে তোলার পর রুশ বাহিনী বিরুদ্ধে এক পাল্টা অভিযান শুরু করেছিল। কিন্তু এ ক্ষেত্রে অগ্রগতি খুবই ধীর গতিতে হচ্ছে এবং কিয়েভ এখন ন্যাটো দেশগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছে যেন তাদের ট্যাংক, মাইন পরিষ্কারের যন্ত্রপাতি এবং এফ-সিক্সটিনের মত যুদ্ধ বিমান সরবরাহ করা হয়।

ইউক্রেনের এই পাল্টা অভিযানের ধীরগতি নিয়ে যারা সমালোচনা করছেন বৃহস্পতিবার তাদের ব্যাপারে বিরক্তি প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা। স্পেনে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক সভায় তিনি বলেন, ‘আমি এই সমালোচকদের বলবো- মুখ বন্ধ রাখুন এবং ইউক্রেনে এসে নিজেরা এক বর্গ সেন্টিমিটার এলাকা মুক্ত করার চেষ্টা করে দেখুন।’

শুক্রবার রাশিয়ার সেনাবাহিনী ঘোষণা করেছে যে, তারা সারমাট নামে নতুন একটি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাকে কমব্যাট ডিউটিতে রেখেছে অর্থাৎ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত অবস্থায় রেখেছে। দূরপাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রে মাল্টিপল ওয়ারহেড বা একাধিক বিস্ফোরক বোমা সংযুক্ত থাকে। যদিও বিষয়টি স্বাধীন সূত্র থেকে নিশ্চিত করা যায়নি। শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি অনুষ্ঠানে বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ার বিজয় প্রমাণ করে যে এই জাতি অপরাজেয়।

শেয়ার করুন