নিউইয়র্ক     সোমবার, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রে ‘আইএস সম্রাজ্ঞী’র ২০ বছরের কারাদণ্ড

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২২ | ০৮:৫৫ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২২ | ১০:০৪ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
যুক্তরাষ্ট্রে ‘আইএস সম্রাজ্ঞী’র ২০ বছরের কারাদণ্ড

ওয়াশিংটন ডিসি : সিরিয়ায় জঙ্গি সংগঠন আইএসের একটি নারী দলকে নেতৃত্বদানকারী মার্কিন নারী অ্যালিসন ফ্লুক একরেনকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আদালত। সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এ সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) এ রায় ঘোষণা করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা ফ্লুক একরেনকে ‘আইএসের সম্রাজ্ঞী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাদের অভিযোগ, একরেন নারীদের এমনকি ১০ বছর বয়সী মেয়ে শিশুদের পর্যন্ত অস্ত্র পরিচালনার প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। কীভাবে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহার করতে হয় এবং গ্রেনেড ও আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ করতে হয়, তা শিখিয়েছেন। কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, ৪২ বছর বয়সী এ নারী যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে হামলা চালানোর পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা করেছিলেন।

২০১৪ সালে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল এলাকা দখল করে খেলাফত ঘোষণা করেছিল আইএস। ২০১৭ সালের শেষ পর্যন্ত ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা। জঙ্গি সংগঠনটির হয়ে কাজ করতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন ফ্লুক একরেন। সিরিয়ায় আটক হওয়ার পর এ বছরের জানুয়ারির শেষ দিকে বিচারের মুখোমুখি করতে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনা হয়।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ভার্জিনিয়ার ফেডারেল আদালতে শুনানি চলার সময় অ্যালিসন ফ্লুক একরেনও বক্তব্য দিয়েছেন। বলেছেন, নিজের কর্মকাণ্ডের দায় স্বীকার করছেন তিনি। তবে দীর্ঘ বক্তব্যের বেশির ভাগ সময়জুড়ে নিজের এমন আচরণের পেছনে যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন। অপতৎপরতাকে কম করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন।

সিরিয়ায় কেমন জীবন যাপন করতেন, তা বিচারপতিকে বলতে গিয়ে সন্তানদের একটি ছবি দেখান একরেন। ওই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে পিৎজা খাচ্ছেন। একরেন বিচারপতিকে বলেন, ‘আমরা খুব সাধারণ জীবন যাপন করতাম।’ তবে ফ্লুক একরেনের নিজের সন্তানেরাও আদালতে মায়ের বিরুদ্ধে জবানবন্দি দিয়েছেন। মায়ের দ্বারা শারীরিক ও যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন।

মঙ্গলবার আদালতে একরেনের মেয়ের জবানবন্দি পড়ে শোনানো হয়েছে। মেয়ে বলেছেন, তাঁর মা নিপীড়নের আলামতগুলো লুকিয়ে ফেলার ক্ষেত্রে পটু। একবার মা তাঁর মুখমণ্ডলে উকুননাশক ঢেলে দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেছেন মেয়ে।

তিনি বলেন, এতে তাঁর মুখে ফোসকা পড়ে যাচ্ছিল এবং চোখ জ্বালা করছিল। ফ্লুক একরেন তখন মেয়ের মুখ থেকে রাসায়নিকগুলো ধুয়ে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। তবে মেয়ে আর তা করতে দেননি।

ফ্লুক একরেনের পরিবার যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকার বাসিন্দা। মার্কিন আইন মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশ ছেড়ে সিরিয়ায় চলে যাওয়ার আগে একরেন শিক্ষকতা পেশায় নিযুক্ত ছিলেন। সূত্র : আল জাজিরা

শেয়ার করুন