নিউইয়র্ক     সোমবার, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলটিতে ফোন বন্ধে মিলছে সুফল, কমেছে ওয়াশরুমে যাওয়া

পরিচয় ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২২ | ০৩:৫১ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২২ | ০৩:৫১ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলটিতে ফোন বন্ধে মিলছে সুফল, কমেছে ওয়াশরুমে যাওয়া

পিটার বেক বলেন, বাসায় স্মার্টফোনে দীর্ঘ সময় কাটিয়ে আসার পর শিক্ষার্থীরা সামনাসামনি কথা বলাটাই পুরো ভুলে গিয়েছিল। অনেক সময় প্রয়োজনের কথা বলতে গিয়েও জটিলতায় পড়ছিল তারা। করোনা সংকট কাটিয়ে ওঠার পর খুলে দেয়া হলেও আর আগের চেহারায় ফিরছিল না যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলটি। ক্লাসে এসে শিক্ষার্থীদের ছিল না মনোযোগ। সামনাসামনি সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলাতেও আগ্রহ দেখা যাচ্ছিল না।

এই সংকট কাটাতে স্কুলে বন্ধ করে দেয়া হয় মোবাইল ফোনের ব্যবহার। শিক্ষক, শিক্ষার্থী কিংবা কর্মচারী; সবার জন্যই চালু হয় এক নিয়ম। এতেই মিলেছে সুফল। আর ওয়াশরুমে গিয়ে ফোন টিপতে টিপতে অতিরিক্ত সময় ব্যয়ের যে প্রবণতা ছিল সেটাও নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

উত্তর-পশ্চিম ম্যাসাচুসেটসের বাক্সটন স্কুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান পিটার বেকের বরাত দিয়ে এ ঘটনা প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক পোস্ট। পিটার বেক বলেন, বাসায় স্মার্টফোনে দীর্ঘ সময় কাটিয়ে আসার পর শিক্ষার্থীরা সামনাসামনি কথা বলাটাই পুরো ভুলে গিয়েছিল। অনেক সময় প্রয়োজনের কথা বলতে গিয়েও জটিলতায় পড়ছিল তারা।

এমন পরিস্থিতিতে স্কুলে সবার জন্য স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করে কর্তৃপক্ষ। জানানো হয়, ক্যাম্পাসের পুরো ১১৪ একরের মধ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী বা কর্মচারীদের কেউই আইফোন বা অ্যান্ড্রোয়েড ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না।

গত সেপ্টেম্বরে শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার সময় থেকে এই নির্দেশনা কার্যকর হলে এর সুফল মিলতে থাকে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। স্কুলপ্রধান পিটার বলেন, শিক্ষার্থীরা সমৃদ্ধ হচ্ছে। তারা পরিবর্তনের সঙ্গে খুব ভালোভাবে মানিয়ে নিয়েছে। পরিবর্তন দরকার ছিল, তবে এটা সম্ভব হবে ভাবিনি।

তিনি জানান, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে যে ফোন তারা ব্যবহার করছে, এটা ছাড়া তাদের কীভাবে চলবে তা নিয়ে ভয় পেয়ে গিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। নির্দেশনা কার্যকর হওয়ার পর যেসব শিক্ষার্থীর বাড়ি স্কুলের পাশে তাদের বাড়িতে ফোন রেখে আসতে হয়। আর দূরের শিক্ষার্থীদের ফোন জমা রাখতে হয় স্কুলে। সেমিস্টার ফাইনালের আগে পর্যন্ত এমন অবস্থা চলে।

ফোন নিয়ে সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে স্কুলের ওয়েব সাইটে বলা হয়, এখন সাধারণ ফোন ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের। শুধু কথা বলা ও মেসেজ পাঠানো যায় এমন ফোন ব্যবহার করতে পারছে তারা।

ইন্টারনেট ব্রাউজিং করা যায়, ই-মেইলে ঢোকা যায় বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রবেশ করা যায়- এমন ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আগের মতোই কার্যকর রয়েছে। তবে স্কুল শেষে কেউ চাইলে ডেস্কটপে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করতে পারবেন। পিটার বেক বলেন, তারা একাডেমিক কাজে আরও বেশি সময় ব্যয় করছে। শিল্পের মাধ্যমে সৃজনশীলভাবে নিজেদের প্রকাশ করছে। একে অন্যকে জানছে।

একজন শিক্ষক জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ওয়াশরুমে যাওয়ার প্রবণতাও কমেছে। তারা অনেক সময় দরকার না হলেও মেসেজ ও টিকটক চেক করার জন্য বিশ্রামাগার ব্যবহার করত। ওয়াশরুমে গিয়ে বেশি সময় ব্যয় করত এই ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে। এটা কমেছে।

শেয়ার করুন