নিউইয়র্ক     শুক্রবার, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢালিউড নবাবের কফিনে শেষ পেরেক : চুক্তিভঙ্গ ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৩ | ০৩:৪২ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৩ | ০৩:৪২ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
ঢালিউড নবাবের কফিনে শেষ পেরেক : চুক্তিভঙ্গ ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ

শাকিব খান

ঢাকাই নবাবকে নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। শেষ ক’বছরে ব্যক্তিগত ইস্যুতে এতোটাই জর্জরিত, তিনি যেন জীবন্ত লাশ হয়ে পড়ে আছেন। অপু-বুবলীর অভিযোগ, পূজা-গুঞ্জন তো রয়েছেই। এর পাশাপাশি বিগত কয়েকটি সিনেমার ব্যর্থতা, একের পর এক নতুন প্রজেক্ট হাতছাড়া; সবমিলিয়ে ক্যারিয়ারের অন্তিম প্রহরেই যেন অবস্থান করছেন শাকিব খান। এবার সেই তার মৃতপ্রায় ক্যারিয়ারের কফিনে যেন শেষ পেরেক মারলেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এক প্রযোজক। যার নাম রহমত উল্ল্যাহ। তিনি বহুল আলোচিত ‘অপারেশন অগ্নিপথ’র অন্যতম প্রযোজক। ছবিটির কিছু অংশের শুটিং হয়ে আর আলোর মুখ দেখেনি। বুধবার (১৫ মার্চ) বিকালে শাকিব খানের বিরুদ্ধে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন প্রযোজক রহমত উল্ল্যাহ। সেখানে তিনি অপেশাদার আচরণ, চুক্তিভঙ্গ ও শ্লীলতাহানির মতো বিস্ফোরক সব অভিযোগ তুলেছেন।

আরো পড়ুন । নতুন এক সাহসী চরিত্রে মিথিলা

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বারা গৃহীত অভিযোগের একটি কপি বাংলা ট্রিবিউনের হাতে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, “২০১৭ সালে পূর্বচুক্তি মোতাবেক অভিনেতা শাকিব খান ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ নামক সিনেমার কাজে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। আমি সেই চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রযোজক। তার মতো একজন বিখ্যাত অভিনেতাকে নিজের চলচ্চিত্রে অভিনয় করাতে পারব জেনে পুলকিত ছিলাম। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেলে ব্যবসাসফল হবে সেই বিশ্বাস ছিল। ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ মুক্তি পেলে সেটি হতো অস্ট্রেলিয়ায় অভিনীত প্রথম বাংলাদেশি চলচ্চিত্র। আমার এবং এটার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের আশা ছিল সিনেমাটির হাত ধরে অস্ট্রেলিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্কে নতুন একটি অধ্যায় রচিত হবে। শাকিব খান একজন বিখ্যাত অভিনেতা। তার অভিনীত চলচ্চিত্রের দর্শক চাহিদা অনেক। তাই আমাদের প্রত্যাশা ছিল তিনি আমাদের সাথে পেশাগত আচরণ করবেন। অথচ, আজ পর্যন্ত এই সিনেমার কাজ তিনি শেষ করেন নাই।

‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবির শুটিং চলাকালীন শাকিব খান দ্বারা যেসব ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন, তার একটি তালিকা উল্লেখ করেছেন এই প্রযোজক। তা হলো-

১. আমাদের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নেয়া সত্ত্বেও কোনও রকমের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই শুটিং বাতিল করে দিতেন।

২. তার খাদ্যাভ্যাসজনিত চাহিদা ছিলো এমন যে, হঠাৎ করে তিনি অদ্ভুত রকমের খাবার খেতে চাইতেন; আর তাতেই পুরো শুটিং ইউনিট নিয়োজিত হতো তার পছন্দের খাবার খুঁজে বের করার জন্যে। এতে করে শুটিংয়ের কাজে যেমন ব্যাঘাত হতো, তেমনি চলচ্চিত্রের নির্মাণ বায় নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বেড়ে গিয়েছিল।

৩. তিনি শুটিং করতে আসতেন নিজের ইচ্ছা মতো সময়ে। অনেক সময় এমন হতো যে অত্যন্ত ব্যয়বহুল সেট বানিয়ে আমরা তার জন্যে অপেক্ষা করতাম। তিনি হয়ত শেষ বেলায় দুই এক ঘণ্টা অভিনয় করার জন্য আসতেন। এভাবে শুটিং না করেও সকলের বেতন দিয়ে আমরা শুধু অপেক্ষা করতাম তিনি আসবেন বলে। এছাড়া আরও দুটি পয়েন্টে শাকিবের বিরুদ্ধে আপত্তিকর কর্মকাণ্ড ও শ্লীলতাহানির মতো বিস্ফোরক অভিযোগ তোলা হয়েছে। যেখানে প্রযোজক তুলে ধরেন হোটেল কক্ষে শাকিব খানের আপত্তিকর জীবনাচরণ এবং শুটিং ইউনিটের সহকর্মীর শ্লীলতাহানির মতো বিব্রতকর ও বিস্ময়কর ঘটনা। যার সূত্র ধরে মামলাও হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায় (মামলা নম্বর: NSW Police reference no: E 62494959)।


লিখিত অভিযোগের কপি

রহমত উল্ল্যাহর দাবি, পরবর্তীতে তিনি শাকিব খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘২০১৮ সালে তিনি (শাকিব খান) আবার অস্ট্রেলিয়ায় আসলে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। সামাজিক চাপে এবং আরও নিগ্রহের ভয়ে নির্যাতিতা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি না হওয়ায় শাকিব সেই যাত্রায় ছাড়া পেয়ে যান।’ এদিকে সমিতিগুলোতে অভিযোগ জমা পড়ার পর থেকে ঢালিউড পাড়ায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে শাকিব খানের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি।


‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার টিজারের দৃশ্যে শাকিব খান

উল্লেখ্য, ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবির পরিচালনা করছিলেন আশিকুর রহমান। এতে শাকিবের নায়িকা হিসেবে যুক্ত হয়েছিলেন সিবা আলী খান। তাদের পক্ষ থেকে অবশ্য কোনও অভিযোগের খবর প্রকাশ্যে আসেনি। এর আগে ২০১৮ সালে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ নিয়ে নির্মাতা আশিকুর রহমান ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঝামেলা দেখা দেয়। ওই সময় শাকিব খানকে নিয়ে ‘সুপারহিরো’ ছবির শুটিং করতে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলেন নির্মাতা। কিন্তু তার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগসহ আইনি নোটিশ পর্যন্ত পাঠিয়েছিলো প্রতিষ্ঠানটি। তাদের অভিযোগ ছিলো, নির্মাতা সময়মতো ছবির কাজ শেষ করছেন না। এছাড়া ছবির টিজার বিক্রির টাকাও আত্মসাৎ করেছেন। অন্যদিকে আশিকুর রহমান পাল্টা অভিযোগের তীর ছোঁড়েন প্রতিষ্ঠানটির দিকে। জানান, সিনেফেক্ট এন্টারটেইনমেন্ট নামের এই প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে ছবিটির সব কিছু তাদেরকে বুঝিয়ে দিয়ে তিনি পরিচালকের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন

এসএ/এমএএস/এমউএ/টিএ/পরিচয়

শেয়ার করুন