নিউইয়র্ক     শুক্রবার, ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জিয়াউর রহমানের নামে মামলা সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র : মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশ ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৩ | ০১:১৫ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ১৫ মে ২০২৩ | ০১:১৫ পূর্বাহ্ণ

ফলো করুন-
জিয়াউর রহমানের নামে মামলা সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র : মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে মামলা দায়েরের পেছনে রয়েছে সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী গোষ্ঠীর একজন ক্রীড়নক হিসাবে এ মামলা দিয়েছেন। রোববার গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় মির্জা ফখরুল জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করি, দেশের মানুষ অতীতের মতো সাহসের সঙ্গে এ দুর্যোগ মোকাবিলা করবেন। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় কোনো রকম দলীয়করণ না করে সবার পাশে দাঁড়াতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদাকে হত্যার ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসাবে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নাজমুল হুদার মেয়ে ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ-সদস্য (এমপি) নাহিদ ইজহার খান শেরেবাংলা নগর থানায় বুধবার রাতে মামলা করেছেন। সেই মামলার প্রতিক্রিয়ায় সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিয়েছে বিএনপি। মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭৫ সালে কর্নেল নাজমুল হুদা রংপুর সেনানিবাসে ব্রিগেড কমান্ডার ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সংঘটিত সামরিক অভ্যুত্থানের অন্যতম সহযোগী ছিলেন কর্নেল নাজমুল হুদা। অভ্যুত্থানে সক্রিয় নেতৃত্ব দিতে তিনি ঢাকা আসেন। মূলত খালেদ মোশাররফ ও তার সহযোগীদের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষীর সুযোগে প্রথমত ইতিহাসের নৃশংস জেলহত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘কর্নেল তাহের-ইনুদের (হাসানুল হক ইনু) ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীসহ সশস্ত্র বাহিনীর মাঝে ‘চেইন অব কমান্ড’ প্রতিষ্ঠা করতে নিজের জীবনবাজি রেখে একজন দেশপ্রেমিক সাহসী সৈনিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। লে. কর্নেল (অব.) এমএ হামিদের লেখা ‘তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথা’ গ্রন্থটিতে যার বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়। অথচ ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সকালে শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত দশম ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের কার্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া কর্নেল হুদাকে হত্যার ঘটনায় তার মেয়ে নাহিদ ইজহার খান সেই হত্যার আদেশদাতা হিসাবে জিয়াউর রহমানের নাম উল্লেখ করেছেন।’

তিনি বলেন, নাহিদ ইজহার খান সম্ভবত তার নিজের মায়ের লেখা বইটাও পড়েননি। তার মা নীলুফার হুদা তার গ্রন্থে ‘কর্নেল হুদা ও আমার যুদ্ধ’তে (১৩৪ পাতা) স্পষ্টভাবেই লিখে গেছেন, কর্নেল হুদাকে হত্যার সময় কী পরিস্থিতি ছিল। সেখানে উপস্থিত মানুষের জবানবন্দিই প্রমাণ দেয়, সেদিন জিয়াউর রহমান কর্নেল নওয়াজিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন খালেদ মোশাররফ, কর্নেল হুদা এবং মেজর হায়দারকে রক্ষা করার।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দায়ের করা মামলার বাদী নাহিদ ইজাহার খানের মায়ের লিখিত গ্রন্থের ১৩৪ পাতায় সুস্পষ্টভাবে হত্যাকাণ্ডের পেছনে কর্নেল তাহেরের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে উঠে এসেছে। এতে আরও উঠে এসেছে, কর্নেল তাহেরের নির্দেশে হত্যাকাণ্ডের চার দিন পূর্ব থেকে কর্নেল হুদাসহ অন্যদের ভারতের চর হিসাবে সেনাবাহিনীতে প্রচার করেছিল জাসদ গণবাহিনী। মেজর জেনারেল আমীন আহম্মেদ চৌধুরীও একই কথা লিখেছেন বইটির ভূমিকায়।’

মির্জা ফখরুল বলেন, চলমান ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন থেকে দেশি-বিদেশি গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরাতে এ মামলা দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা ও তার কুশীলবরা নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী সাংসদ কর্নেল হুদার নাহিদ ইজহার খানের মামলা সেই লাগাতার ষড়যন্ত্রের একটি ঘৃণ্য উদাহরণ মাত্র। গণবিচ্ছিন্ন এই দখলদার সরকারের তরফে আগামী দিনে এ ধরনের ষড়যন্ত্র চলমান থাকবে। বিশেষ করে সরকার পতনের সময়কাল যত এগিয়ে আসবে, শহিদ জিয়া, খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমানসহ বিএনপির বিরুদ্ধে এ ধরনের ষড়যন্ত্রের মাত্রা আরও বাড়বে।’সূত্র : যুগান্তর

এসএ/এমএএস/এমইউএ/টিএ/পরিচয়

শেয়ার করুন