ইউরোপের কিছু দেশে এলজিবিটিকিউদের অধিকার আবারও সীমিত করার চেষ্টা হচ্ছে ৷মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুনির্দিষ্টভাবে নেতিবাচক প্রচারণার শিকার হচ্ছেন এই সম্প্রদায়ের মানুষেরা৷ তবে সামগ্রিকভাবে সমাজে তাদের প্রতি বিরূপ মনোভাব কম ৷
গত জুলাইয়ে বার্লিনে প্রাইড মাসের ব়্যালিতে অংশ নেয়ার সময় ডিম হামলার শিকার হয়েছিলেন এক ব্যক্তি৷ কিন্তু সেই হামলাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাননি তিনি ৷ ‘‘এটা এমন বড় কোনো ঘটনা নয়৷ আর পুলিশ এটা নিয়ে তেমন কিছু করতোও না,” ডয়চে ভেলের সাংবাদিককে বলেন তিনি ৷
পরিসংখ্যান বলছে, জার্মানিতে এলজিবিটিকিউদের উপর মৌখিক এবং শারীরিক আক্রমণ বাড়ছে৷ এবং ৯০ শতাংশ ঘটনা রিপোর্ট করা হয় না বলে জানিয়েছে জার্মানির সমকামিদের সংগঠন এলএসভিডি৷ আর এটাই একমাত্র উদ্বেগের বিষয় নয়। ‘‘জনমত জরিপ ক্রমশ খারাপ হচ্ছে,” বলেন এলএসভিডি মুখপাত্র কার্সটিন থস্ট ৷
‘‘ট্রান্সফোবিক বিবৃতি উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে, এবং আমরা লক্ষ্য করেছি যে আমাদের ট্রান্সজেন্ডার সাংসদদের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হচ্ছে,” এক ভিডিও বার্তায় বলেন তিনি ৷
জার্মানিতে অবশ্য এলজিবিটিকিউদের অধিকার এখন বিস্তৃতও হচ্ছে৷ বার্লিন সম্প্রতি একজন মানুষের নিজের লিঙ্গ নির্ধারণের অধিকার সম্প্রসারণ করেছে ফলে কেউ চাইলে দাপ্তরিক নথিপত্রে থাকা নিজের লিঙ্গ পরিচয় সংশোধন করতে পারবেন৷ মূলত ট্রান্সজেন্ডার, নন-বাইনারি এবং ইন্টারসেক্সদেরক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হবে৷ তবে সমকামিদের সংগঠন বলছে গতবছর এই আইন অনুমোদনের পর থেকে ট্রান্সফবিক আক্রমণও বেড়েছে৷ তবে এধরনের হামলা সামগ্রিকভাবে সমাজে তাদের প্রতি মনোভাবের প্রতিফলন নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ৷
ইউরোপের সর্বত্রও পরিস্থিতি একরকম নয়৷ এই মহাদেশে সমকামিদের অধিকার নিয়ে গবেষণা করছেন নীল দত্ত ৷ তার হিসেবে ‘লিঙ্গবিরোধী’ প্রচারণায় অর্থায়ন ২০২১ এবং ২০২২ সালের মধ্যে একবছরে একশো মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে৷ এক দশক আগের হিসেবে এই সংখ্যাটি অনেক বেশি ৷
ইউরোপীয় ডিজিটাল মিডিয়া অবজারভেটরি জানাচ্ছে, অনলাইনে যেসব সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি গুজব এবং ভুল তথ্য ছড়ানো হয় তার মধ্যে এলজিবিটিকিউরা অন্যতম ৷
এলজিবিটিকিউবিরোধীরা নিজের দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে নানারকম নেতিবাচক প্রচারণায় যোগ দিচ্ছেন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা ৷ আর রাশিয়া, হাঙ্গেরি ও পোল্যান্ডের মতো দেশগুলোর নানা রক্ষণশীল নীতি তাতে ইন্ধন যোগাচ্ছে ৷ সূত্র : ডয়েচে ভেলে