তোশাখানা মামলায় সাজা স্থগিতের পর এবার নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বেআইনিভাবে আটকে রাখা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এবার ব্রিটিশ আইনজীবী ভাড়া করছেন তিনি।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, ইমরান খান এবার আন্তর্জাতিক আদালতে জিওফ্রি রবার্টসন কেসি নামের এক আইনজীবীকে ভাড়া করছেন। বিখ্যাত এ আইনজীবী সালমান রুশদির মামলা লড়েছিলেন।
পাকিস্তানের সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী ২০২২ সালের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতা হারান। এরপর তার বিরুদ্ধে তোশাখানা মামলা হয়। এ মামলায় তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ রুপি জরিমানা করা হয়। এরপর ৫ আগস্ট থেকে অ্যাটক কারাগারে বন্দি আছেন। যদিও এ মামলায় ইসলামাবাদ হাইকোর্ট তার সাজা স্থগিত করেছে। তবে এ মামলায় সাজা স্থগিত হলেও গোপন নথির অপর এক মামলায় কারাগারে রয়েছেন তিনি। শুক্রবার পিটিআই এক্স বার্তায় (সাবেক টুইটার) জানিয়েছে, এবার ইমরান খানের মামলায় জিওফ্রি রবার্টসন কেসি নামের আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ এক ব্রিটিশ আইনজীবী ভাড়া করা হচ্ছে। বিখ্যাত এ আইনজীবী উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ও সালমান রুশদির মামলা লড়েছিলেন।
রবার্টসনের ভাড়া করার বিষয়টি ডাউটি স্ট্রিট চেম্বারের এক্স পোস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে। এটি যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি ব্যারিস্টার চেম্বার। এ বিষয়ে চেম্বারের এক্স বার্তার এক স্ক্রিনশটও শেয়ার করেছে পিটিআই।
এক্স বার্তায় আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক আদালতে ইমরান খানকে বেআইনিভাবে আটকে রাখা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে প্রতিনিধিত্ব করতে ব্রিটিশ আইনজীবী ভাড়া করা হয়েছে। ব্রিটিশ এ আইনজীবী হলেন মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ জিওফ্রি রবার্টসন কেসি। এর আগে শুক্রবার (২৫ আগস্ট) তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআইপ্রধান ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া বিচারক হুমায়ুন দিলাওয়ারকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ইসলামাবাদ হাইকোর্টে নতুন পদ সৃষ্টি করে ওএসডি হিসেবে তাকে নিয়োগ দেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আমির ফারুক।
তারও আগে গত ৫ আগস্ট তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানকে দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছর কারাদণ্ডের রায় দেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (এডিএসজে) হুমায়ুন দিলাওয়ার। রায় ঘোষণার পরপরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে তাকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করে দেশটির নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)।
পিটিআইপ্রধানের বিরুদ্ধে রায় দেওয়ার পর পর বিচারক হুমায়ুন দিলাওয়ার ও তার পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হয়। এমন পরিস্থিতিতে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তাকে অন্য যে কোনো জায়গায় বদলি করার আবেদন করেন। বিশেষ করে জুডিশিয়াল কমপ্লেক্স জি-১১ ভবনে অবস্থিত বিশেষ আদালত বা ইসলামাবাদ হাইকোর্টে (আইএইচসি) বদলির আবেদন করেন তিনি।