নিউইয়র্ক     বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এক সপ্তাহে ৭২ বিক্ষোভকারীকে হত্যা করেছে ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২২ | ০১:৪৬ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২২ | ০১:৪৬ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
এক সপ্তাহে ৭২ বিক্ষোভকারীকে হত্যা করেছে ইরান

মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় ইরানে চলমান বিক্ষোভ-আন্দোলন দমনে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী গত সপ্তাহে কুর্দি-জনবহুল এলাকায় ৫৬ জনসহ কমপক্ষে ৭২ জনকে “হত্যা করেছে” বলে দাবি করেছে ইরানের মানবাধিকার সংস্থাগুলো। বুধবার (২৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, মঙ্গলবার মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই তথ্য জানিয়েছে।

এ বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নীতি পুলিশের হেফাজতে ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনির মৃত্যুতে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, তা এখন জাতীয় আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে “মোল্লাতান্ত্রিক” শাসনের বিরুদ্ধে এটিই সবচেয়ে বড় আন্দোলন।

দেশটির সরকার বিক্ষোভ দমনে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। যা আন্তর্জাতিকভাবে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। ইরান সরকার ইরাকে আশ্রয় নেওয়া নির্বাসিত কুর্দিদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে। সবশেষ মঙ্গলবারও তারা হামলা চালিয়েছে।

নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা “ইরান হিউম্যান রাইটস” (আইএইচআর) জানিয়েছে, ইরানে দেশব্যাপী নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ৪১৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে ৫১ জন শিশু এবং ২১ জন নারী রয়েছেন। গত সপ্তাহে ৭২ জন নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে ৫৬ জন পশ্চিম কুর্দি-জনবসতিপূর্ণ এলাকার।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, ইরানের পরিস্থিতি খুবই “গুরুতর”। বিক্ষোভকারীদের ওপর কর্তৃপক্ষের কঠোর দমনাভিযানের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর ফলে গত দুমাসের বিক্ষোভে ৩০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

জেনেভায় মঙ্গলবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তুর্ক আরও বলেন, “গত সপ্তাহে দুই শিশুর মৃত্যুসহ ইরানের বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর দমনাভিযান দেশটির গুরুতর পরিস্থিতিকে সামনে নিয়ে এসেছে।” মানবাধিকার কার্যালয়ের মুখপাত্র লিজ থ্রসেল বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনী কঠোরভাবে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ দমন করার কারণে বিক্ষোভকারীর মৃত্যু বাড়ছে।

তিনি নিহতের সংখ্যা ৩০০ জনের বেশি বলে উল্লেখ করেন এবং মৃতদেহগুলো আটকে রাখা হচ্ছে- এমন খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা চুপ না থাকলে কিংবা মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে মিথ্যা বিবৃতি না দেওয়া পর্যন্ত মৃতদেহগুলো হস্তান্তর করা হচ্ছে না বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) বলেছে, ইরানের বিক্ষোভে নিহতদের মধ্যে অন্তত ৪০টি শিশু রয়েছে। দেশজুড়ে ৩১ টি প্রদেশের ২৫ টিতেই এমন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ওএইচসিএইচআরের মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স বিশেষত, ইরানের কুর্দি নগরীগুলোর পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত সপ্তাহে সেখানে ৪০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, গত মাসে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, পুলিশসহ ৪৬ জন বিক্ষোভে নিহত হয়েছে। তবে দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা মৃতের সংখ্যা এর চেয়ে বেশি হওয়ার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।

এছাড়া দেশব্যাপী ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত করা হয়েছে। যেটিকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছে “আর্টিকেল ১৯”। সংস্থাটি বলছে, “দেশব্যাপী ইন্টারনেট ব্যাঘাত এবং বন্ধের পাশাপাশি কুর্দিস্তানের বাইরে চরম রাষ্ট্রীয় বর্বরতা অব্যাহত রেখেছে ইরান।”

শেয়ার করুন