নিউইয়র্ক     মঙ্গলবার, ১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ  | ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আসিফ নজরুল

আর নয় ‘অনির্বাচিত’ সরকার

বাংলাদেশ ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১০:৩৯ অপরাহ্ণ | আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৩ | ১১:০২ অপরাহ্ণ

ফলো করুন-
আর নয় ‘অনির্বাচিত’ সরকার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছুদিন আগে বলেছেন, দেশে আর অনির্বাচিত সরকার আসবে না। তাঁর দলের নেতারাও এ ধরনের কথা বলেন মাঝেমধ্যে। তাঁদের কথায় এটি স্পষ্ট যে অনির্বাচিত সরকার বলতে তাঁরা মূলত তত্ত্বাবধায়ক বা নির্দলীয় কোনো সরকারকে বোঝান। বাংলাদেশে এ ধরনের চারটি সরকার গঠিত হয়েছিল ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৭ সালে। এর মধ্যে শেষোক্ত সরকারটি একসময় সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপ নেয়। আওয়ামী লীগ এই প্রতিটি অনির্বাচিত সরকারের সমর্থক ছিল, দলটি ১৯৯৬ সালে সাংবিধানিকভাবে অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্বও দিয়েছিল।

এসব ‘অনির্বাচিত’ সরকারের বাইরে বাংলাদেশে অনেকগুলো ‘নির্বাচিত’ সরকার এসেছে। তবে এসব নির্বাচিত সরকার বা তাদের গঠনকারী সংসদের অনেকেই আসলে নির্বাচিত কি না, এ নিয়ে সমাজে প্রশ্ন রয়েছে। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অরাজনৈতিক অনির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বলা হলেও নির্বাচনী প্রহসনের মাধ্যমে গঠিত সরকারের বৈধতার বিষয়ে সেভাবে বলা হয় না। অথচ সাধারণ জ্ঞানবুদ্ধি অনুসারেই বলা যায়, কোনো নির্বাচনে একটি দলের বেশির ভাগ কারচুপি করে জিতে এলে সেই দলকে প্রকৃত অর্থে নির্বাচিত বলা যায় না। সেই দলের সরকারকেও তাই নির্বাচিত সরকার বলা যায় না। আমাদের রাজনীতিতে এই সরল সত্যকে প্রতিষ্ঠা করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এটি প্রতিষ্ঠা করার জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনের দরকার আর এটি সম্ভব করার জন্য জাতীয় পার্টি বাদে দেশের সব দলের সমঝোতায় স্বল্পকালীন অনির্বাচিত সরকার (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০১১ সালে এই সরকারপদ্ধতি বিলুপ্ত করার আগে এটি অনেকাংশে সেই ধরনের নির্বাচন করতে সক্ষমও হয়েছিল। এর আগে-পরে নির্বাচনের নামে আমাদের দেশে নানা ধরনের কাণ্ড হয়েছে। নির্বাচনে জয়ী ঘোষিত সরকারগুলো আসলে কতটা নির্বাচিত, এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ রয়ে গেছে এখনো।

২.

১৯৮১ সালের মে মাসে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ডের সময় চট্রগ্রামের জেলা প্রশাসক ছিলেন জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরী। তিনি এর আগে বঙ্গবন্ধুর আমলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশেষ সহকারীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ সালে অ্যাসাসিনেশন অব জিয়াউর রহমান অ্যান্ড দ্য আফটারমাথ নামে তাঁর একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয় খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান ইউপিএল থেকে।

জনাব চৌধুরীর বইয়ে আমরা পাই, কীভাবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু পরিবারের পাশবিক হত্যাকাণ্ডের পর জিয়াউর রহমান রাজনীতির খালি মাঠ ব্যবহার করেন, কীভাবে রাজনৈতিক বৈধতা লাভের কৌশল হিসেবে তাঁর আমলে অনুষ্ঠিত হ্যাঁ–না গণভোটের নির্বাচনে তাঁর পক্ষে ৯৫ শতাংশ ভোট প্রদানের অবিশ্বাস্য অঙ্ক তৈরি করা হয়। জিয়া অবশ্য পরে ১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আগের চেয়ে ২০ শতাংশ কম ভোটে অর্থাৎ ৭৫ শতাংশের মতো ভোট পেয়ে বিজয়ী হন, যেটি জনাব চৌধুরীর মতে তাঁর ‘পপুলার সাপোর্ট’-এর কারণে অপ্রত্যাশিত ছিল না। কিন্তু তাঁর আমলের সেই ১৯৭৭ সালের গণভোটের কলঙ্ক কখনো মুছে যায়নি, আজও প্রধানত সেই নির্বাচনের কথা বলেই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা প্রশ্ন তোলেন তাঁর বৈধতা নিয়ে।

নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন অবশ্য তার আগেও উঠেছে বাংলাদেশে। বঙ্গবন্ধুর অতুলনীয় জনপ্রিয়তার সময় ১৯৭৩ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম সংসদ নির্বাচনে অধিকাংশ আসনে তাঁর দলের অবধারিত বিজয়ের সম্ভাবনার মধ্যেও কয়েকটিতে কারচুপি করা হয়। এর কয়েক মাস পরে দেশের দ্বিতীয় পার্লামেন্ট নামে পরিচিত ডাকসু নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠনের পরাজয় এড়ানোর জন্য ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের অভাবিত ঘটনা ঘটে। আবার ১৯৭৫ সালে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচন ছাড়াই সংসদের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়িয়ে নেওয়া হয়।

এরপর জিয়া, এরশাদের মতো সামরিক শাসনামলে তো কারচুপি হয়েছেই, খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার প্রথম দুটো আমলের বিভিন্ন উপনির্বাচনেও কমবেশি কারচুপির ঘটনা ঘটে। শেষ ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে কারচুপি ও জালিয়াতির মাত্রা ছাড়িয়ে যায় আগের সব নির্বাচনকে। এসব ইতিহাস বিবেচনায় নিলে মনে হবে, বাংলাদেশে কখনোই পরিপূর্ণভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। জনপ্রতিনিধিরা আসলেই নির্বাচিত প্রতিনিধি কি না, এই প্রশ্ন সব আমলে কমবেশি ছিল ১৯৭৩ সাল থেকে। কখনো কখনো এটি এতটা ব্যাপক ছিল যে সংসদ নির্বাচনে ‘বিজয়ী’ হয়ে আসা দলটি আসলেই বিজয়ী কি না এবং সে কারণে আসলেই বৈধ কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার কারণ রয়ে গেছে।

৩.

খুব তেতো শোনালেও এটি সত্যি যে পাকিস্তান আমলে বিজাতীয় শাসকদের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোয় এ ধরনের প্রশ্ন কখনো ওঠেনি। ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে ও ১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনে পাকিস্তানি শাসকেরা ধর্ম ও টাকার অপব্যবহার করেছেন নির্বাচনী প্রচারকালে, কিন্তু নির্বাচনের ফলাফলে তাঁরা হস্তক্ষেপ করেননি, করলে নির্বাচনে তাঁদের বিরোধীদের এমন সর্বাত্মক বিজয় সম্ভব হতো না। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল তাঁরা অবশ্য মেনে নেননি, এই ফলাফল তাঁরা গণহত্যার মাধ্যমে বানচাল করার চেষ্টা করেছিলেন বলে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছিলাম। ফলে এটি খুব প্রত্যাশিত ছিল যে স্বাধীন দেশের নিয়ন্ত্রণ নিজেরা পেয়ে আমাদের শাসকেরা অন্তত নির্বাচনের পবিত্রতা রক্ষা করার চেষ্টা করবেন।

এমন দৃঢ় প্রত্যয় বারবার উচ্চারিত হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের গণপরিষদ সদস্যদের মুখে। ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণয়নের জন্য অনুষ্ঠিত গণপরিষদ বিতর্ককালে (দেখুন: সংবিধান বিতর্ক ১৯৭২, প্রথমা প্রকাশন) বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা জোরালোভাবে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন। ১৯৭২ সালের সংবিধান মানবাধিকার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ, অসাম্প্রদায়িকতাসহ বিভিন্ন মানবকল্যাণমূলক মতাদর্শে পরিপূর্ণ ছিল। কিন্তু তাজউদ্দীন আহমদ আমাদের তখনই সতর্ক করেছিলেন যে এই সুন্দর সুন্দর শব্দের বিন্যাস বাস্তবায়ন করতে পারবেন কেবল ‘সাচ্চা জনপ্রতিনিধিরা’ এবং এমন প্রতিনিধি নির্বাচিত হতে পারেন ‘কোনোরূপ হস্তক্ষেপ ব্যতিরেকে’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে।

এটি সম্ভব করার জন্য তিনি প্রত্যেক মানুষকে সচেতন করার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে হবে, এ কথাও বলেছিলেন। পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, সামরিক শাসকেরা তো বটেই, রাজনৈতিক দলগুলোও এ দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। বরং দিনে দিনে অবস্থা এখন এমন দাঁড়িয়েছে যে সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে বক্তব্য দিলে মানুষ এখন বিভিন্ন নিপীড়ন, লাঞ্ছনা ও অপবাদের শিকার হচ্ছেন। নির্বাচন মানে হয়ে দাঁড়িয়েছে টাকা আর ক্ষমতার দাপটের বিজয়, ভোটাধিকারের বিজয় নয়।

৪.

এ অবস্থায় আমরা ‘অনির্বাচিত সরকার’ বলতে কী বুঝতে চাইব? আমাদের সংবিধান, বিভিন্ন মানবাধিকার দলিল, জাতিসংঘের বিভিন্ন রেজল্যুশন ও গাইডলাইনে নির্বাচন বলতে সুষ্ঠু নির্বাচন বোঝানো হয়েছে, বৈধ সরকার বলতে জনগণের ইচ্ছায় প্রতিষ্ঠিত সরকারের কথা বলা হয়েছে। আমাদের সংবিধান এবং আইন অনুসারে এই জনগণ হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সমর্থক, বিএনপির সমর্থক এবং এই দুই দলের বাইরের বাকি সবাই। এদের সবার ভোটে যারা জিতবে, দেশ চালানোর বৈধতা তাদেরই আছে, কেবল তারাই নির্বাচিত সরকার।

কোনো দল নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দেশকে পাকিস্তান নাকি ভারতের অঙ্গরাজ্য বানিয়ে ফেলবে বা দেশের কী কী ভয়াবহ সর্বনাশ করবে, এ নিয়ে রাজনীতিকেরা বহু বাস্তব–অবাস্তব কথা বলতে পারেন। কিন্তু এ অজুহাতে কেউ কারও ভোটাধিকার কেড়ে নিতে পারেন না, জনগণকে তাঁদের পছন্দের সরকার বেছে নেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারেন না। করলে সেটিই হবে প্রকৃত অনির্বাচিত সরকার। এ ধরনের অনির্বাচিত সরকার দেশে না আসাই মঙ্গলজনক। আসিফ নজরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক নদী আইনবিশেষজ্ঞ।দৈনিক প্রথম আলোর সৌজন্যে

৩.খুব তেতো শোনালেও এটি সত্যি যে পাকিস্তান আমলে বিজাতীয় শাসকদের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোয় এ ধরনের প্রশ্ন কখনো ওঠেনি। ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে ও ১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনে পাকিস্তানি শাসকেরা ধর্ম ও টাকার অপব্যবহার করেছেন নির্বাচনী প্রচারকালে, কিন্তু নির্বাচনের ফলাফলে তাঁরা হস্তক্ষেপ করেননি, করলে নির্বাচনে তাঁদের বিরোধীদের এমন সর্বাত্মক বিজয় সম্ভব হতো না। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল তাঁরা অবশ্য মেনে নেননি, এই ফলাফল তাঁরা গণহত্যার মাধ্যমে বানচাল করার চেষ্টা করেছিলেন বলে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছিলাম। ফলে এটি খুব প্রত্যাশিত ছিল যে স্বাধীন দেশের নিয়ন্ত্রণ নিজেরা পেয়ে আমাদের শাসকেরা অন্তত নির্বাচনের পবিত্রতা রক্ষা করার চেষ্টা করবেন।

এমন দৃঢ় প্রত্যয় বারবার উচ্চারিত হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের গণপরিষদ সদস্যদের মুখে। ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণয়নের জন্য অনুষ্ঠিত গণপরিষদ বিতর্ককালে (দেখুন: সংবিধান বিতর্ক ১৯৭২, প্রথমা প্রকাশন) বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা জোরালোভাবে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন। ১৯৭২ সালের সংবিধান মানবাধিকার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ, অসাম্প্রদায়িকতাসহ বিভিন্ন মানবকল্যাণমূলক মতাদর্শে পরিপূর্ণ ছিল। কিন্তু তাজউদ্দীন আহমদ আমাদের তখনই সতর্ক করেছিলেন যে এই সুন্দর সুন্দর শব্দের বিন্যাস বাস্তবায়ন করতে পারবেন কেবল ‘সাচ্চা জনপ্রতিনিধিরা’ এবং এমন প্রতিনিধি নির্বাচিত হতে পারেন ‘কোনোরূপ হস্তক্ষেপ ব্যতিরেকে’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে। এটি সম্ভব করার জন্য তিনি প্রত্যেক মানুষকে সচেতন করার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে হবে, এ কথাও বলেছিলেন।

পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, সামরিক শাসকেরা তো বটেই, রাজনৈতিক দলগুলোও এ দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। বরং দিনে দিনে অবস্থা এখন এমন দাঁড়িয়েছে যে সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে বক্তব্য দিলে মানুষ এখন বিভিন্ন নিপীড়ন, লাঞ্ছনা ও অপবাদের শিকার হচ্ছেন। নির্বাচন মানে হয়ে দাঁড়িয়েছে টাকা আর ক্ষমতার দাপটের বিজয়, ভোটাধিকারের বিজয় নয়।

৪.

এ অবস্থায় আমরা ‘অনির্বাচিত সরকার’ বলতে কী বুঝতে চাইব? আমাদের সংবিধান, বিভিন্ন মানবাধিকার দলিল, জাতিসংঘের বিভিন্ন রেজল্যুশন ও গাইডলাইনে নির্বাচন বলতে সুষ্ঠু নির্বাচন বোঝানো হয়েছে, বৈধ সরকার বলতে জনগণের ইচ্ছায় প্রতিষ্ঠিত সরকারের কথা বলা হয়েছে। আমাদের সংবিধান এবং আইন অনুসারে এই জনগণ হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সমর্থক, বিএনপির সমর্থক এবং এই দুই দলের বাইরের বাকি সবাই। এদের সবার ভোটে যারা জিতবে, দেশ চালানোর বৈধতা তাদেরই আছে, কেবল তারাই নির্বাচিত সরকার।

কোনো দল নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দেশকে পাকিস্তান নাকি ভারতের অঙ্গরাজ্য বানিয়ে ফেলবে বা দেশের কী কী ভয়াবহ সর্বনাশ করবে, এ নিয়ে রাজনীতিকেরা বহু বাস্তব–অবাস্তব কথা বলতে পারেন। কিন্তু এ অজুহাতে কেউ কারও ভোটাধিকার কেড়ে নিতে পারেন না, জনগণকে তাঁদের পছন্দের সরকার বেছে নেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারেন না। করলে সেটিই হবে প্রকৃত অনির্বাচিত সরকার। এ ধরনের অনির্বাচিত সরকার দেশে না আসাই মঙ্গলজনক। আসিফ নজরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক নদী আইনবিশেষজ্ঞ

শেয়ার করুন